বৃহস্পতিবার ● ৬ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » নবীগঞ্জে চা-শ্রমিক সন্তান হত্যার ১৪ বছর পর ঘাতকের যাবজ্জীবন
নবীগঞ্জে চা-শ্রমিক সন্তান হত্যার ১৪ বছর পর ঘাতকের যাবজ্জীবন
উত্তম তুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার শতক গ্রামে সন্তোষ কর্মকার নামে এক চা শ্রমিক সন্তানকে খুনের ঘটনায় মাসুম আহমেদ কাইসু (৪০) নামে এক ব্যাক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন হবিগঞ্জের আদালত। একই সাথে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। জরিমানার টাকা পাবে সন্তোষের পরিবার। গত ৫ হুন বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ মো. আজিজুল হক এই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণাকালে সে আদালতে উপস্থিত ছিল। অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ আদালতের পেশকার বাবলু আহমেদ জানান, বাহুবল উপজেলার রামপুর চা বাগানের শ্রমিক অনু কর্মকারের ছেলে সন্তোষ কর্মকার নবীগঞ্জ উপজেলার শতক গ্রামের গৌরাপদ গোস্বামীর বাড়ীতে কাজ করত। বিগত ২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে মাসুম আহমেদ কাইসু ছুরিকাঘাত করে সন্তোষকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। পরদিন বাড়ীর মালিক গৌরাপদ গোস্বামী অজ্ঞাত নামা আসামীদের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তকালে মাসুম আহমেদ কাইসুকে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতার করলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে। ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নবীগঞ্জ থানার গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এসআই ইয়াছিনুল হক মাসুম আহমেদ কাইসুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০ জনের মধ্যে ১১ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গতকাল বুধবার বিজ্ঞ আদালত উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি ছালেক উদ্দিন আহমেদ ও সহকারি পিপি এডভোকেট পারভিন আক্তার। আসামিপক্ষে ছিলেন এডভোকেট রহমত আলী। পরে তাকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শ্রমিক সংগঠনের মানববন্ধন
নবীগঞ্জ :: নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইনাতগঞ্জ আঞ্চলিক ইউনিয়নের উদ্যোগে দুই শ্রমিক নেতা জুয়েল খাঁন,আকাশ মিয়া ও নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও নির্বাহী সদস্য আশাহীদ আলী আশার উপর মিথ্যা ও উদ্যোশ্যেমূলক মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে বিশাল মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্টিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত ইনাতগঞ্জ পূর্ব বাজার কলেজ রোডে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে ৪৮ খন্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। অন্যতায় সারা জেলায় বাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করাসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ইনাতগঞ্জ সংগঠনের সভাপতি ফুলজার উদ্দিনের সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক বাবলু মিয়ার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,ইয়াহিয়া খান, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য সাংবাদিক মুজিবুর রহমান, প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত প্রায় ৩ মাস পূর্বে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের আমিনুর রহমান ইনাতগঞ্জ বাজার থেকে একটি লাইটেস রজার্ভ ঢাকা নিয়া যান। পথিমধ্যে আমিনুর লাইটেসের চালক আকাশকে তুচ্চ বিষয় নিয়ে মারপিট করেন। ঘটনার দুইদিন পর ইনাতগঞ্জ বাজারে আমিনুরের লোকজনের সাথে ইনাতগঞ্জ শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সংঘর্ষ হয়। তবে এ ঘটনার সাথে আশাহীদ আলী আশার কোন সম্পৃক্ততা নেই। সে বিষয়টি জানেওনা। আশাহীদ আলী আশার সাথে আমিনুরের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। যার কারনে আশাহীদকে আসামী করা হয়।
পরে বিষয়টি মীমাংসার লক্ষে উভয়ের সম্মতিতে ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শালিস বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি সজিব আলী,তৎকালীন নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম,
নবীগঞ্জ সমিতির সভপতি ইয়াওর মিয়া,ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ,ইনাতগঞ্জ আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল খালিক,সাবেক সভাপতি আজিজুরনরহমান,সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমূখ। এছাড়াও এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ আলোচনার পর বিচারক মন্ডলী উভয়ের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের মীমাংসা করে দেন।
বিষয়টি শেস হওয়ার ৩ মাস পর আমিনুর রহমান পূর্ব বিরোধের কারনে সাংবাদিক আশাহীদ আলী আশাকে প্রধান আসামী করে শ্রমিক নেতা জুয়েল খাঁন ও আকাশকে আসামী করে গত ২৯ মে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি ইনাতগঞ্জ এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।