রবিবার ● ৯ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » চীনে পাচারে সময় ৫ জনকে ঢাকা থেকে উদ্ধার : চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার-২
চীনে পাচারে সময় ৫ জনকে ঢাকা থেকে উদ্ধার : চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার-২
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানে চীনে পাচারে সময় ৫ জনকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
চীনে মানবপাচার চক্রের সদস্য সুমি চাকমা হেলিকে ঢাকার বসুন্ধরা থেকে ও মানবপাচার চক্রের সদস্য জিও সুইওয়ে নামে এক চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ।
রবিবার বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২ জুন পানছড়ি থেকে নিখোঁজ হয় দুই কিশোরী। এ ঘটনায় খাগড়াছড়ির পানছড়ি থানার দুইটি সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে অভিযানে নামে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ। প্রযুক্তির সাহায্যে শনিবার ঢাকার উত্তরা ১২নং সেক্টরের হরিজেন্টাল ভবনের একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। ফ্ল্যাটে পানছড়ি থেকে নিখোঁজ ২ কিশোরীসহ ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার জিও সুইওয়কে (৩৪) খাগড়াছড়ির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে।
এ সময় খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. জসীম উদ্দিন পিপিএমসহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা, সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য কে এই সুমি?
সুমি চাকমা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দিঘীনালার উপজেলার বাবুছড়ার বাবু ছ বাপের মেয়ে। পুলিশ আজ নারী পাচারের অভিযোগে সুমি চাকমা ওরফে বিনি সুমি ধনবিকে গ্রেফতার করেছে,তাকে গ্রেপটারের পর নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসছে।
তথ্যমতে সুমি প্রথমে একজন চাকমা ছেলেকে বিয়ে করেন, বিয়ের পর ওকে ছেড়ে চলে যান,এরপর এক বড়ুয়া ছেলেকে বিয়ে করেন ওকেও ছেড়ে চলে যান,তারপর বিয়ে করেন এক বাঙালী ছেলেকে ওকেও তালাক দেন,সর্বশেষ নারী পাচারকারী দলে যুক্ত হয়ে এক চায়নীজকে বিয়ে করে চীনে চলে যান। চীনে চলে যাওয়ার পর অনেক পাহাড়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে চীনে পাচার করেন।
নারী পাচার ব্যবসায় ভাল লাভজনক হওয়ার কারণে অতিশয় লোভের বশবতী হয়ে তার চায়না স্বামীসহ বাংলাদেশে চলে আসেন এবং উত্তরা অভিজাত এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তিনি রাজকীয় বেশভূষায় চলাফেরা করতে থাকেন যেহেতু তার চায়না স্বামীরও অনেক টাকা পয়সা আছে।
শুরু করেন গোপনে পাহাড়ী নারী পাচারের জঘন্যতম কাজ। তিনি মাইক্রো নিয়ে পাহাড়ে আনাচকানাচে ঘুরে বেড়াতেন,ঘুরে বেড়ানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে কচি কচি অল্পবয়স্ক পাহাড়ী মেয়েদের গাড়ি,বাড়ি, টাকা কড়ি,আইফোনের লোভ দেখিয়ে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে গরীব নিম্নবিত্ত মেয়েদের সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে জড়ো করা।
ঢাকায় নেওয়ার পরে যে মেয়েগুলি তার কথামত চলবে ওদের মার্কেটিং এ নিয়ে যায়, দামী দামী ড্রেস, জুতো,কসমেটিক, মোবাইল কিনে দিয়ে ওদের বশ মানিয়ে নেয়।কিছুদিন মেয়েদের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নিয়মিত রূপচর্চা করায়। যখন অল্পবয়সী মেয়ে গুলি নাদুসনুদুস চেহারা ফুটে উঠে তখন চায়না খর্দ্দেরদের খবর দেওয়া হয়। চায়না খর্দ্দেরদের পছন্দ হলেই মেয়েদের বিক্রির জন্য দফারফা করা হয়। দফারফায় মতেক্য হলেই জালিয়াতি চক্রের মাধ্যমে জাল পাসপোর্ট ভিসা করে দেওয়া হয়। পাসপোর্ট ভিসা রেডী হলেই চায়না খদ্দরের কাছ থেকে মেয়ে পাচার বাবদ ৬ হতে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে বিভিন্ন ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে বিয়ে করিয়ে দেয় এই সুমি চাকমা।
আর যে সকল মেয়েরা তার কথা শুনবে না চায়না বিয়ে করতে কিংবা খারাপ কাজে অসম্মতি জানায় তাদের কাজ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয় সুমি চাকমা, শুরু করেন তাদের উপর অত্যাচার,তালা মেরে রাখা হয় তাদের যাতে কোথাও যেতে না পারে,পরিবারের সাথে সম্পুর্ন যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
শুনা যাচ্ছে সুমি চাকমা এবং সুমির চায়না জামাই নাকি কক্সবাজারে ফ্ল্যাট কিনেছেন, উদ্দেশ্য তিন পার্বত্য জেলা থেকে পাহাড়ী নারী সংগ্রহ করে তাদের ফ্ল্যাটে রেখে বিভিন্ন হোটেল মোটেলে নারী যোগান দেয়া। অপেক্ষায় থাকুন পুলিশ যেহেতু তাকে এবং তার চায়না স্বামীকে গ্রেফতার করেছেন আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসবে।
এ পর্যন্ত যে সমস্ত মেয়ে এই সুমি চাকমা চীনে পাচার করেছেন তাদের মাধ্যমে এবং সে নিজে প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে অল্পবয়সী পাহাড়ী মেয়ে সংগ্রহ করার কাজ চালিয়ে আসছেন। কথায় আছে দশদিন খায় একদিন পড়ে। যারা খারাপ কাজ করে তাদের কাজের ভার যখন বেশী হয়ে যায় একদিন তখন আপনা আপনি তাদের একদিন সেই কুকর্মের ফলটা পরিপক্ক হয় তখন তাদের বারটা বাজতে শুরু করে। আজ ঠিক সেভাবেই বারটা বেজে গেলো এই এই সুমি চাকমার।
সুমি চাকমার নারী পাচারের যে কার্যক্রম তাকে আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের মাফিয়া ডন বললেও ভূল হবে না, তার চেহারা একটু দেখুন পুলিশের নিকট আটক হওয়ার পর পুরো মাফিয়া চক্রের ডন ডন হাব-ভাব।