বৃহস্পতিবার ● ২০ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » বাঘাইছড়ি ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে পানছড়িতে বিক্ষোভ
বাঘাইছড়ি ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে পানছড়িতে বিক্ষোভ
পানছড়ি গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাটে মো. নাঈম হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেফতার-শাস্তি, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়া ও বাঘাইহাট জোন কমান্ডার ও বাঘাইছড়ি ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিতে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পানছড়ি গণঅধিকার রক্ষা কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার ২০ জুন ২০২৪ সকাল সাড়ে ১০টায় পানছড়ির লোগাং আমতলী থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি লোগাং ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত জনতা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার রক্ষা কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অনীল চন্দ্র চাকমা।
গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য মানিকপুদি চাকমার সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক বকুল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা, পিসিপির পানছড়ি উপজেলা সভাপতি সুনীল ময় চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক পরিণীতা চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি সভাপতি রিপন ত্রিপুরা।
সমাবেশে সঞ্চয় চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্নভাবে নাটক সাজিয়ে সাধারণ জুম্মদের ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন দল গঠন করে দিয়ে পাহাড়ে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আমাদের এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ইউপিডিএফ সংগঠক বকুল চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জুম্মদের ধ্বংস করে দেয়ার জন্য শাসকগোষ্ঠি বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। পাহাড়ে নিয়োজিত সামরিক প্রশাসন রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করছে। আজ আমাদের জুম্মদের পিঠ দেয়ালে থেকে গেছে, পেছনে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। যে কোন বিনিময়ে আমাদের এই পাহাড়ে থাকতে হবে। যে কোন বিনিময়ে আমাদের ভুমিকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে মো. নাঈম হত্যাকারীদের মদদ ও আশ্রয়দাতা বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লে. কর্নেল খায়রুল আমিন ও বাঘাইছড়ি ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবিসহ ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবি জানান।
যুব নেতা বরুন চাকমা তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর ন্যায় বর্তমান বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠি জুম্ম রাজাকার মুখোশ-সংস্কার সৃষ্টি করে জুম্ম জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্যাম্পে জুম্ম রাজাকার সংস্কার-মুখোশদের আশ্রয় দিয়ে খুন, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
পিসিপি নেতা সুনীলময় চাকমা বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী জাত বিরোধী সংস্কার-মুখোশদের বাঘাইহাট জোনে আশ্রয় দিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভিন্নভাবে হয়রানি-নিপীড়ন করে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় গত ১৮ জুন তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে। এতে শান্তি পরিবহন বাস চালকের সহকারী মো. নাঈম হত্যার শিকার হয়েছেন। তিনি সবাইকে জুম্ম ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
নারী নেত্রী পরিণীতা চাকমা বলেন, আজ আমরা জুম্মরা বিভিন্নভাবে পেছনে পড়ে রয়েছি। পাহাড়ে এখন অনেক সমস্যা। পাহাড় এখন বিভিন্ন সংঘাতে জর্জরিত। কারো মায়ের বুক খালি হোক আমরা চাই না। পাহাড়ে যেন আর অন্যায় হত্যাকাণ্ড না ঘটে সেজন্য আজকের এই সমাবেশ। এভাবে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধে হয়ে সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশের সভাপতি অনীল চন্দ্র চকমা বলেন, যে কোন অন্যায়-অবিচার হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হয়। তাই আজ পাহাড়ে যে অন্যায় হচ্ছে তার প্রতিবাদ করতে আপনারা এখানে এসেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আগামীতে যে কোন গণআন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে সাজেকের বাঘাইহাটে মো. নাঈম-এর হত্যাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সেনাসৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী বাহিনী ভেঙে দেয়া এবং সন্ত্রাসী আশ্রয়দাতা বাঘাইহাট জোন কমাণ্ডার লে. কর্নেল খায়রুল আমিন ও বাঘাইছড়ির ইউএনও শিরীন আক্তারকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।