রবিবার ● ৩০ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনশেড অবৈধভাবে বিক্রি
সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনশেড অবৈধভাবে বিক্রি
এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় উত্তর সুতালড়ীমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ঘর বেআইনীভাবে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার উত্তর সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে টেন্ডার ছাড়াই পুরাতন ৫ কক্ষ বিশিষ্ট কাঠের স্কুলঘরটি বিক্রি করেছেন বলে জানাগেছে।
এ ছাড়া সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ে ৫টি পদে মোটা অংকের নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে এলাকায় বর্তমানে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিযোগসুত্রে প্রকাশ, উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৯৪ সালে।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১৫ জন, ৭ম শ্রেনীতে ১১ জন, ৮ম শ্রেনীতে ১৭ জন, ৯ম শ্রেনীতে ১৪ জন ও ১০ম শ্রেনীতে ৪ জনসহ মোট ৬১ জন। অভিযোগে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২১ সালে একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়। এ ভবন নির্মাণের পূর্বে টিনশেড কাঠের ৫ কক্ষ বিশিষ্ট স্কুলঘর ছিল। সেই ঘরগুলির মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল হাওলাদারের কাছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকায় একটি কক্ষ বিক্রি করে দেন প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। বাকি কাঠের ঘরটি যে যেভাবে পারছে বিক্রি করে দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা বলেন, প্রধান শিক্ষক, সভাপতি, সহকারী শিক্ষকরা মিলে কাঠের ঘরগুলি বিক্রি করে দিয়েছেন। এমকি নৈশ প্রহরী, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী এ ৫ টি পদে লাখ লাখ টাকা নিয়োগ বানিজ্য করা হয়েছে। সুতালড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাসুম শেখ, দাতা সদস্য এমদাদুল হাওলাদার, আকাশ মিস্ত্রী, সবুজ কুমার হাওলাদার বলেন, উত্তর সুতালড়ী বিদ্যালয়ে একটি কাঠের ঘর ছিলো সে ঘরটি সরকারিভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়নি। টেন্ডার প্রক্রিয়া হলে আমরাও অংশ গ্রহন করে কিনতে পারতাম। যতটুকু জানি প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে রেজাউল ইসলাম হাওলাদারের কাছে শ্রেণীকক্ষের একটি অংশ মাত্র ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। বাকি কাঠের শ্রেণীকক্ষ কিভাবে বিক্রি করেছে আমাদের জানা নেই। তবে, কাঠের ঘরটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হইলে সরকার রাজস্ব পেতো। ঘরটি প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা বিক্রি করা যেতো।
আমাদের দাবি প্রশাসন তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে ক্রেতা রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক ও জাকির হোসেন স্যারের মাধ্যমে স্কুলের শ্রেণীকক্ষের একটি অংশ আমি ক্রয় করছি ৪ হাজার টাকায়। আরও অনেকে কিনছে পুরাতন কাঠ ও টিন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কাঠের ঘরটি নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছিল। ঘরটি বিধস্ত হওয়ার কারনে সরকারের কাছে একটি আবেদন করি এবং একটি ভবন পাই। কাঠের ঘরটি সরিয়ে ফেলি। টেন্ডার দেওয়ার মত সুযোগ ছিলো না। রেজুলেশন করে কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ওই সময় লিখিত আকারে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম তারেক সুলতান বলেন, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাঠের ঘর বা ভবন টেন্ডার ছাড়া বিক্রির কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।