শুক্রবার ● ২ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কাউখালীতে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা
কাউখালীতে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা
কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: পারিবারিক কলহের জের ধরে মধ্য রাতে ডিভোর্সি স্ত্রী ও শাশুড়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী মো. বিল্লাল। শুক্রবার ২ আগষ্ট রাত ১২ টার পর কাউখালী উপজেলার কাশখালীর লেইঙ্গাছড়ি এলাকায় এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইনবাগান এলাকা থেকে ঘাতক বিল্লালকে আটক করে পুলিশে সপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র কর। এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। নিহতরা হলেন, উপজেলার ৩ নং ঘাগড়া ইউনিয়নের কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৬৮) ও মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৭)।
কাউখালী থানার ওসি জানান, হত্যাকন্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ রাতে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর ময়না তদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, নিহতদের পুরো শরীর সাবাল দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে অত্যান্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
কাশখালী সমাজের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান কালু জানান, চার বছর পূর্বে কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বাইরা গ্রামের মৃত আনজু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩৫) এর সাথে কাউখালীর কাশখালী এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সাথে বিয়ে হয়। তিন বছরের সংসারে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের দু’বছর পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মাঝে বনিবনা হচ্ছিলো না। ফলে গত ২৯ জুলাই দু’পক্ষ সামাজিক বৈঠকের পর স্ত্রী ফাতেমা স্বামী বিল্লালকে কাউখালী উপজেলা সদরস্থ ইসলামী রীতি অনুযায়ী কাজি অফিসে স্বামীকে তালাক দেন।
স্থানীয়রা জানান, স্ত্রীর কাছ থেকে তালাক প্রাপ্ত হয়ে বিল্লাল কুমিল্লা চলে যায়। ১৯ মাস বয়সের বায়তুল্লাহকে নিয়ে ফাতেমা মায়ের সাথে কাউখালীতে অবস্থান করে। ২ আগষ্ট রাতে বিল্লাল পুনরায় কাউখালী আসে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে মধ্য শুক্রবার রাতে সিঁধেল কেটে ঘরে প্রবেশ করে হাতে থাকা সাবল দিয়ে স্ত্রী ও শাশুড়ীকে উপর্যপূরী আঘাত করে হত্যা করেন। এসময় ১৯ মাস বয়সী ছোট্ট বায়াতুল্লাহ কোন রকম হামাগুড়ি দিয়ে পাশের বাড়ীতে গিয়ে কান্না করতে থাকলে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। ততক্ষণে ঘাতক বিল্লাল পালিয়ে যায়।
রাত তিনটায় রক্তাক্ত কাপড় চোপড় নিয়ে ঘাতক বিল্লাল উপজেলা সদর হয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বেতছড়ি পাইন বাগান এলাকায় স্থানীয়রা ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে কাউখালী থানার ওসি রাজিব চন্দ্র করের নেতৃত্বে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম (পিপিএম)।
এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘাতক বিল্লালকে রাঙামাটি কোর্টে প্রেরণ করা হয়।