বুধবার ● ২৮ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » জুরাছড়ি থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ মারধরের ঘটনায় নিন্দা
জুরাছড়ি থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ মারধরের ঘটনায় নিন্দা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান,রাঙামাটির জুরাছড়িতে ওসি আবদুল সালামসহ পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা, ব্যাপক মারধর, ভাঙচুর ও থানার সামনে আগুন দেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল)।
আজ ২৮ আগস্ট ২০২৪, বুধবার ইউপিডিএফ-মূল এর রাঙামাটি ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলার মূল হোতা বনযোগী ছড়া জোনের কমান্ডার লে. কর্ণেল জুলকিফলী আরমানসহ জড়িত সেনা সদস্যদের অবিলম্বে সাসপেন্ড ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াসহ অন্যান্য মাধ্যমে জানা যায়, গতকাল ২৭ আগস্ট জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল জুলকিফলী আরমান তার দুই জওয়ানসহ সাদা পোষাকে উপজেলা সদরে সান্ধ্য ভ্রমণে বের হন। এ সময় রাস্তার পাশের একটি দোকানে থাকা তিন পুলিশ সদস্য দয়াল চাকমা, তুহিন চাকমা ও রতন মনি চাকমা তাকে সালাম না দেয়ায় সেনা সদস্যরা তাদেরকে মারধর শুরু করে। এতে পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার চেষ্টা চালালে হামলা হাতাহাতির রূপ নেয়।
‘এরপর জোন কমান্ডার ক্যাম্পে ফিরে যান, তবে কিছুক্ষণ পর তিনি তার দলবল নিয়ে জুরাছড়ি থানায় হাজির হন এবং কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে থানা আক্রমণ করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা উক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে প্রচণ্ড মারধর করেন এবং আটক করে জোনে নিয়ে যান। সেনারা থানায় ব্যাপক ভাঙচুরও চালায়।
‘থানার ওসি ও কতিপয় পুলিশ সদস্য তাদের উচ্চ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জোনে তাদের সহকর্মীদের খবর নিতে গেলে সেনা সদস্যরা তাদেরকে ক্যাম্পের সামনে আটকায় এবং ওসিসহ সবাইকে মারধর করে। সব মিলিয়ে সেনাদের হামলায় ১০—১২ জন পুলিশ আহত হয়। অনেক পুলিশ থানা থেকে পালিয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেয়।
‘এমন জঘন্য হামলার পরও জোন কমান্ডারের আক্রোশ প্রশমিত হয়নি। তিনি এলাকার সাধারণ লোকজনকে পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিল করতে বাধ্য করেন এবং থানার সামনে আগুন লাগিয়ে দেন।’
ইউপিডিএফ নেতা সচল চাকমা জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল জুলকিফলী আরমানসহ হামলায় জড়িত সেনা সদস্যদের তাৎক্ষণিক সাসপেন্ড করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে কাজ করার ন্যূনতম যোগ্যতা তাদের নেই, যার প্রমাণ তারা নিজেরাই উক্ত হামলার মাধ্যমে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘যদি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে শাস্তি দিতে অপারগ হয় তাহলে বুঝতে হবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আপাদমস্তক জুলকিফলী আরমানদের মতো বিকারগ্রস্ত মাত্রাতিরিক্ত সম্মান প্রত্যাশী উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তাদের নিয়েই গঠিত, যাদের কাছে দেশের জনগণ ভালো কিছু আশা করতে পারে না।’
পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, ‘পাহাড়ে কিংবা সমতলে যেখানেই হোক সেনাবাহিনীকে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যারাকের বাইরে নিয়োজিত করা হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রীতিকর ঘটনা অনিবার্যভাবে ঘটে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এবং ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের ওপর সেনা সদস্যদের হামলা ও ২০১০ সালে নারায়ণগঞ্জে সেনা কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে সেনা-জনতা সংঘর্ষ তারই প্রমাণ।’