বৃহস্পতিবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » দৌলতপুর সাব-রেজিস্টার অফিসে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ আহত-৮
দৌলতপুর সাব-রেজিস্টার অফিসে চাঁদা তোলা নিয়ে সংঘর্ষ আহত-৮
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে চাঁদা তোলা নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপির’র দুই গ্র“পের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৪ জনকে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতপুর উপজেলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দৌলতপুর সাব- রেজিস্টার অফিস থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হতো। সে সময় এ চাঁদার অর্থ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, অফিসের কর্মকর্তা ও দলিল লেখকরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিতেন। সরকার পতনের পর রেজিস্ট্রি অফিসের দখল নেয় বিএনপিপন্থীরা। তারা প্রথমেই বেছে বেছে আওয়ামীপন্থী দলিল লেখকদের মারপিট করে সেখান তাদের থেকে বের করে দেন। এরপর আগের প্রক্রিয়ায় তারাও দলিল প্রতি চাঁদা উত্তোলন শুরু করেন। দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেলের অভিযোগ, উপজেলা ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কতিপয় নেতা-কর্মী এই চাঁদাবাদির সাথে জড়িত। কর্নেল বলেন, তার বাবা দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আকবর আরীর নাম ভাঙ্গিয়ে এই চাঁদাবাজি করা হচ্ছিল।
এ কারণে কর্নেল ও আকবর আলী এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানান। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পর্যন্ত গড়ায়। কর্নেল জানান, এরপর দলের শীর্ষ নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী বুধবার সকালে দৌলতপুর উপজেলা বাজারে স্থানীয় বিএনপি’র কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন উভয় পক্ষ। পরে কথা কাটিকাটির একপর্যায়ে রেজিস্ট্রি অফিসে চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেলের নেতৃত্বে মিলন, হিমেল সহ ২০-২৫ জন জাফর ইকবাল কর্নেল ও তার সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা লাঠি সোঁটা দিয়ে তাদের বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বয়োবৃদ্ধ নেতা আকবর আলীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় হামলাকারীরা।
এতে দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেল (৩২) ও তার অনুসারী মাসুদ পারভেজ (২৪), কৌশিক (২০) ও রতন (২২) সহ কমপক্ষে ৮জন আহত হন। গুরুতর আহত কর্নেল, মাসুদ পারভেজ, কৌশিক ও রতনকে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেল জানান, বিগত ১৭ বছর তিনি এবং তার বাবা আওয়ামী লীগের হামলা মামলায় নিষ্পেষিত। আওয়ামী লীগের লোকদের ভয়ে উপজেলার কোথাও বিএনপি অফিস চালাতে সক্ষম না হলেও তার বাবা আকবর আলী উপজেলা বাজারের বিএনপির অফিস টিকিয়ে রেখেছিলেন। সেই অফিসেই নিজ দলের লোকদের হামলার শিকার হয়েছেন তারা। তিনি দলীয় হাইকমান্ডের কাছে এর বিচার দাবি করেন।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
চাঁদাবাজি নিয়ে হামলার ঘটনার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, লোক মুখে জানতে পেরেছি যুবদল ও ছাত্রদলের মধ্যে ছোট সংঘর্ষ হয়েছে। তবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।