মঙ্গলবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » নতুন বাংলাদেশে চাঁদাবাজী ও দুর্নীতি চলবে না, চলতে দেওয়া হবে না : রাঙামাটিতে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ
নতুন বাংলাদেশে চাঁদাবাজী ও দুর্নীতি চলবে না, চলতে দেওয়া হবে না : রাঙামাটিতে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ
স্টাফ রিপোর্টার :: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ রাঙামাটির জনসাধারনের উদ্দেশে বলেছেন, শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রীক বা শহর কেন্দ্রীক উন্নয়নের ধারা রয়েছে সেটার দিক তাকালে এভাবে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রান্তিক পর্যায়ে পৌছাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আপনাদের কাছে শুনেছি পাহাড়ে বর্গাশিক্ষক নামে একটি নাম প্রচলিত রযেছে, আমরা সরকারের কাছে আহবান জানাবো প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে দিয়ে শিক্ষার গুনগতমান বৃদ্ধির জন্য। এখন থেকে রাজধানী ঢাকায় বসে একজন শিক্ষার্থী যে সকল সুযোগ পাবেন এখন থেকে পাহাড়ের প্রত্যান্ত প্রান্তিক পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থী একই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সবাইকে শহরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না তবে শহরকে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। তিনি বলেন, পুরো রাঙামাটিতে একটিও আইসিইউ নাই, এটা খুবই দুঃখজনক, রাঙামাটি থেকে একজন মুমুর্ষ রোগীকে যদি চট্টগ্রামে বা ঢাকায় নিতে হয় এটা সময়ের ব্যাপার এজন্য তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার প্রতি আহবান জানান, শহরে যে ধরনের স্বাস্থ্যসেবা রয়েছে একই ধরনের স্বাস্থ্যসেবা যেন দ্রুত সময়ে পাহাড়ে চালু করা হয়।
দেশের রাষ্ট্রপতি যে চিকিৎসা সেবা রাষ্ট্রীয়ভাবে পায় ঠিক একই ধরনের চিকিৎসা সেবা রাষ্ট্রীয়ভাবে একজন প্রান্তিক জনসাধারন যাতে পায়।
তিনি বলেন, আমাদের বিভাজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত রাষ্ট্র পূর্ণগঠন না হচ্ছে ততদিন ছাত্র-জনতা আমরা ঐকবদ্ধ থাকবো। রাষ্ট্র সংস্কার কাজে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
মঙ্গলবার বিকেলে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় আহতদের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে চেতনা নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো, সেই চেতনা কি বাস্তবায়ন হয়েছিলো ? ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে যে গণঅন্দোলন হয়েছিলো পরবর্তীতে জনগণের আশার প্রতিফলন কি ঘটেছিলো ? ২০২৪ সালে যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থান হয়েছে জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটবে কি-না এ দায়িত্ব আপনার। এ দায়িত্ব পালনে ছাত্র-জনতাকে ভূমিকা রাখতে তিনি আহবান জানান।
বিভিন্নভাবে বিভাজন করে অপরাজনীতি করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। সময় এসেছে বৈষম্য দূর করার। তিনি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিবাজদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এসব নতুন বাংলাদেশে চলবে না, চলতে দেওয়া হবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গে এই সমন্বয়ক বলেন, সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা, সব স্তরে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা এবং স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দেওয়া উচিত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ রাঙামাটির জনসাধারনের উদ্দেশে বলেছেন, ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। আপনারা আপনাদের কাজে ফিরে আসুন। কাজ করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব।
সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালালেও তার প্রেতাত্মারা এখনো বসে নেই। ফ্যাসিবাদের দোসররা যে কোনো সময় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তারা বিভিন্ন রূপে আমাদের মাঝে এসে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করবে। তাদের বিষয়ে বিপ্লবের নায়ক ছাত্র-জনতাকে সজাগ থাকতে হবে।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সাথে হোটেল প্রিন্স এর হোটেল লবিতে অল্প সময়ের জন্য মতবিনিময় করেছেন রাঙামাটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা এবং বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ, রাঙামাটির নেতৃবৃন্দ।