রবিবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » ঢাকা » বৈচিত্রের মধ্যে বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রকে তার জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ
বৈচিত্রের মধ্যে বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রকে তার জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদ
আজ সকালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের উদ্যোগে “গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য - বিরোধ সুরাহার পথ ” শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বলেন, জুলাই - আগস্ট ছাত্র শ্রমিক জনতার গণ অভ্যুত্থানের প্রধান বার্তা হচ্ছে বৈচিত্র্যের মধ্যেই আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্মীয় ও জাতিগত এবং পিছিয়ে পড়া সবাইকে নিয়ে এই ঐক্য গড়ে উঠবে। গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ধর্ম, বর্ণ, লিংগ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে নাগরিকদের মধ্যে অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রুপান্তরের জনা রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহেরও গণতান্ত্রিক সংস্কারও সাধন করতে হবে।
আলোচনা সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রুপান্তরের জন্য আদর্শিক ও রাজনৈতিক পার্থক্য স্বত্বেও আমাদেরকে ন্যুনতম ইস্যুতে জাতীয় সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করতে করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থে আমাদের ঐক্যকে চোখের মনির মত রক্ষা করতে হবে।তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে গণঅভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা যাবেনা। বিভাজন ও অনৈক্য দেখা দিলে তাতে কেবল পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিই লাভবান হবে।তিনি বলেন, কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই।জোর করে কোন এজেন্ডা ঢুকাতে গেলে তাতে অন্তর্বর্তী সরকার অপ্রয়োজনীয় বিতর্কের মধ্যে পড়বে। তিনি বলেন , অনেকের মধ্যে পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের ছায়া দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই সরকারের এসিড টেষ্ট হচ্ছে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ২০২৫ এর মধ্য নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ভিত্তি রচনা করা।
ডঃ তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কার ছাড়া গতানুগতিক নির্বাচন বিশেষ কোন কাজে আসবেনা। পরিকল্পিত রাজনৈতিক অর্থনীতি ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া যাবেনা তিনি গণঅভ্যুত্থানের বিজয়কে সংহত করে গণতান্ত্রিক রুপান্তরের বর্তমান সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান আহবান জানান।
সভার সভাপতি শেখ আবদুন নূর বলেন, গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার প্রয়োজন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এই সুযোগ নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আব্দুন নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান ডঃ তোফায়েল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব , বাংলাদেশ প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা - বিএসএস এর প্রধান মাহবুব মোরশেদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আনছার আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদ প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের সদস্য সচিব বাবর চৌধুরী।
এডভোকেট মামুন মাহবুব বলেন, সব যদি আগের মত চলে তাহলে গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সব যায়গায় চিন্তা মননে স্বৈরাচার বাসা বেঁধেছে।সবার মধ্যে কেমন করে যেন এক এক জন ছোট ছোট ফ্যাসিস্ট হাসিনা যায়গা করে নিয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য এই ফ্যাসিবাদী চিন্তা মনোভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
মাহবুব মোরশেদ বলেন, গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে পরিবর্তনের এক অসাধারণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ কোন ভাবের নষ্ট করা যাবেনা। ভিন্নতার মধ্যেই আনাদের বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ তার ১৬ বছরের দুঃশাসনে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি ধ্বংস করে গেছে। ক্ষমতা কে তারা লুটপাটের সুযোগ হিসাবে গ্রহন করেছে।তিনি বলেন,এখন গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে রাষ্ট্র ও সমাজের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে।