বুধবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব
প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ে ২০০০ সালে মফস্বলের মানুষের মাঝে শিক্ষার দ্যুতি ছড়াতে প্রতিষ্ঠা হয় প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ৷ নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে উত্তর চট্টগ্রামের সেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সফলতার সাথে ২৫ টি বছর পার করেছে৷ বুধবার ২৫ ডিসেম্বর ২৫ বছর পূর্তি তথা রজতজয়ন্তী উপলক্ষে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুর্নমিলনী উৎসব সম্পন্ন হয়েছে৷ দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজনে সকাল সকাল কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ প্রাঙ্গণ৷ পুরো কলেজ ক্যাম্পাস সেজেছে রঙ্গিন আলপনায় আর রঙবেরঙ আলোকসজ্জায়। পুনর্মিলনী উৎসবে কলেজের প্রায় ৪ হাজার বন্ধুরা মেতে উঠেছিলেন আনন্দে, যেন খুঁজে পেয়েছিলো নিজেদের কৈশোর।
পায়রা উড়ানোর মধ্যে দিয়ে পুর্নমিলনী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ক্লিফটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী৷ বর্ণাঢ্য র্যালী শেষ করে কলেজ প্রাঙ্গণে কুরআন তিলওয়াত, গিতা ও ত্রিপিটক পাঠ এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় পূর্নাঙ্গ আনুষ্ঠানিকতা৷ শুরুতে ছিল কিছু ব্যতিক্রমী আয়োজন৷ ক্লাস শুরুর ঘন্টা বাজিয়ে মঞ্চে কলেজের প্রাক্তন ৪ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতীকী ক্লাস নেন৷ ক্লাস শেষে আগত অতিথিদের ফুলের শুভেচ্ছা জানানো শেষে শুরু হয় আলোচনা সভা৷ রজতজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবচার উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ক্লিফটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. তসলিম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভোটিক্স এন্ড মেক্যাট্রোনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক সিফাতী আরমান, নিখাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া প্রমুখ৷
আলোচনা সভা শেষে দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করা হয়৷ প্রোগ্রাম সময় সংরক্ষণে যা প্যাকেজিং করে সবাইকে সরবরাহ করা হয়৷
দেখা গেছে, পুরনো বন্ধুদের আবার একসঙ্গে পেয়ে যেন সব ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের৷ পুরোনো সতীর্থদের নিয়ে নতুন করে স্মৃতি জমাতে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে ছিল অনেক কসরত। মধুর মিলনে সতীর্থরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলির মাধ্যমে বন্ধুত্বের নতুন বন্ধন তৈরি করেন। বিকাল পর্যন্ত চলে ব্যাচভিত্তিক আড্ডা, স্মৃতিচারণ এবং প্রাক্তনদের স্টেজ পারফরম্যান্স৷ সন্ধ্যায় আতশবাজির বর্ণিল আলোকছটার কার্যক্রম শেষে প্রদর্শিত হয় কলেজের ইতিহাস ও বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র৷ ঢাকার জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘সিলসিলা’ কর্তৃক পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর কাওয়ালি সন্ধ্যা৷ র্যাফেল ড্র ও পুরষ্কার বিতরণের মধ্যে দিয়ে শেষ রজতজয়ন্তী উপলক্ষে পুর্নমিলনী উৎসব৷
প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক সাহেদ আহসান বলেন,’রজতজয়ন্তী উপলক্ষে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুর্নমিলনী উৎসবে কলেজ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য,অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক,বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধুর স্মৃতিচারণায় ব্যতিক্রমধর্মী মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে৷ বিশেষ করে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। একে অপরকে পেয়ে সেলফি তোলা, গল্প, আড্ডা, স্কুল জীবনের স্মৃতি আওড়ানো, বর্তমান ব্যস্ততা সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। রেখে যাওয়া পুরনো শিক্ষাগুরুদের পুরোনো ক্যাম্পাসে ফের দেখা হওয়া৷ সবার গায়ে ছিল একই রঙের টি- শার্ট। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হারিয়ে যাওয়া বন্ধু,শিক্ষকদের মধ্যে নতুন করে মেলবন্ধন রচিত হয়। সুখ-দুঃখের রোমন্থন করার সুযোগ ঘটে। এর মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়’।
রজতজয়ন্তী উপলক্ষে পুর্নমিলনী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবসার উদ্দিন জানান, হাটি হাটি পা পা করে প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজ ২৫ বছররে পদার্পণ করেছে৷ আর এই রজতজয়ন্তী উপলক্ষে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুর্নমিলনীর আয়োজন করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা,শিক্ষক, বর্তমান শিক্ষার্থী এবনভ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এক নতুন মেলবন্ধন রচিত হয়েছে৷ মফস্বলের এই অঞ্চলে একটি প্রতিষ্ঠান টিকে থেকে যে সফলতার সাক্ষর রেখেছে তা এই পুর্নমিলনী উৎসবই প্রমাণ৷ এই অনুষ্ঠান সফল করার পেছনে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম তাদের সবার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ৷