শনিবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনে নয় পাপিয়া মারা গেছে ক্যান্সারে
অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনে নয় পাপিয়া মারা গেছে ক্যান্সারে
উবায়দুল্লাহ রুমি, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের নান্দাইলে আলোচিত অপহরণ ধর্ষণ ও নির্যাতনে মাদ্রাসা ছাত্রী পাপিয়া (১৫) মৃত্যু ক্যান্সারে হয়েছে বলে দাবি করেছে হত্যা মামলার আসামীর পরিবার ও স্বজনেরা। তাদের দাবি প্রেমের সম্পর্কে দুজন অ্যাফিডেভিট ও কাবিননামা করে বিয়ে করে। বিয়ের পরেও পাপিয়ার পরিবার ৪ মাস পরে আদালতে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ দেন। পাপিয়া তার বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তারপরেও তার বাবা হোসাইনের পরিবার সহ আত্নীয় স্বজনকে আসামী করে হয়রানি করছে বলে দাবি জানিয়েছে স্বজনেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পাপিয়া ও হোসাইনের মধ্যে স্কুলে পড়াশোনা থাকাকালীন সময়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। হোসাইন সিংরইল ইউনিয়নের কচুরী গ্রামের হানিফ মিয়ার পুত্র। পাপিয়া একই ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে আবুল কালামের মেয়ে। বিষয়টি দুই পরিবারের মধ্যে জানা জানি হলেও দুজন কে আলাদা করতে পারেনি। এর মধ্যে এ বছরের ৩০ মে পাপিয়া ও হোসাইন কিশোরগঞ্জ নোটারি পাবলিকে আড়াই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ্ করে। এর পরের দিন ১ জুন বাড়ি থেকে দুজন পালিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জে। সেখানে রংঙের কারখানায় দুজন মিলে চাকরি নেন। এক পর্যায়ে পাপিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৬ সেপ্টেম্বর হোসাইন পাপিয়াকে তার বাবার কাছে রেখে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয় গত ২১ অক্টোবর বাদি হয়ে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হোসাইনের নামে একটি অপহরণ মামলা করেন। কোর্ট পিবিআইকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলে।
এদিকে অসুস্থ পাপিয়াকে ময়মনসিংহ ও ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা করান। চোখের ক্ষত বেশি কথা হওয়ায় চোখের কর্নিয়া অপারেশনের মাধ্যমে তুলে ফেলা হয়। সর্বশেষে ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত ডেল্টা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসেন পরে ১৬ ডিসেম্বর পাপিয়া মারা যায়। নির্যাতনে মেয়ের মৃত্যর এঘটনায় পাপিয়ার বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর নান্দাইল মডেল থানায় হোসাইনের পরিবার ও স্বজন সহ ৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে।
হোসাইনের চাচাতো ভাই সুজন মিয়া জানান- দুজনেই একই স্কুলে পড়াশোনা করতো। প্রেম করে বিয়ে করেছে। পাপিয়ার গলায় ও নাকের উপরে টিউমার ছিল। চিকিৎসাও চলছিল হঠাৎ টিউমার বড় হয়ে চোঁখে আক্রান্ত করে। একটি চিকিৎসার কাগজপত্র এনেও দেখান নারায়ণগঞ্জে তার চিকিৎসা হয়েছে। তারপরেও তার (পাপিয়ার) বাবা এহন অন্যদের জড়িয়ে হয়রানি করছে।
মোহাম্মদ হোসাইনের নানী রোকিয়া বেগমের দাবি পাপিয়া ও হোসাইন দুজন কোর্টে বিয়ে করেছে। তারা বৈধ স্বামী- স্ত্রী। তার পরেও কেন ধর্ষণের অভিযোগ করেছে? তারা দুজন নারায়নগঞ্জে গিয়ে রঙের কারখানায় কাজ করেছে। ৪ মাস পর তার পাপিয়ার বাবা মিথ্যা অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ করছে। পাপিয়া ক্যান্সারে মারা গেছে নির্যাতন নয়।
জানতে চাইলে পাপিয়ার বাবা আবুল কালাম বলেন- আমার মেয়ে পূর্বে কোন রোগ ছিল না। আর বিয়ে হয়েছে এমন কাগজপত্র তারা দেখাতে পারবে না। ক্যান্সার হয়ছে তাদের অত্যাচারে কারণে। এহন কাগজপত্রে যদি তারা প্রমাণিত হয় তাদের বিচার হবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের সাবেক উপাধক্ষ্য, জেলা বিএমএ’র সাবেক সভাপতি ডাঃ মতিউর রহমান ভূঁইয়া জানান, পাপিয়ার মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান ও বায়োপসি পরীক্ষার দুটি রিপোর্ট দেখে তার (পাপিয়ার) শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছিল বলে জানান। কিন্তু মৃত্যুর আসল কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না দেখে বলা যাবেনা।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ আহমেদ বলেন- এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোট হাতে না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না ক্যান্সার সেটি বলা যাচ্ছেনা। রিপোর্ট হাতে আসলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঈশ্বরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার-১
ঈশ্বরগঞ্জ :: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর একটি টিমসহ যৌথ অভিযানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও চুরিসহ একাধিক মামলার আসামি আলমগীর মিয়া(৩৮) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে তাকে আটক করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পরে শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস।
আটককৃত আলমগীর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের তেলুয়ারি গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে আলমগীর নামে একজনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আলমগীরের নামে থানায় চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও জনস্বার্থে এধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।