মঙ্গলবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » কৃষি » রাউজানে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বাম্পার ফলন
রাউজানে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বাম্পার ফলন
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানে শীতকালীন বাঁধাকপি ও ফুলকপির এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা বলেছেন অল্প খরচে এই ফসলের লাভ বেশি হওয়ায় তারা বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষে ঝুঁকছেন। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে এ উপজেলার কৃষকদের মুখে। খরচের তুলনায় লাভের অংশ দ্বিগুন হওয়ায় দিন দিন এই জনপদে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ। অনুকূল আবহাওয়া সঠিক সময়ে বীজ বপন ও সুষম সার ব্যবহারের ফলে এই দুই জাতের ফলন ভালো হয়েছে। এতে লাভের মুখ দেখছেন এখানকার চাষিরা। জমি থেকে উৎপাদিত বাঁধাকপি-ফুলকপি এখন বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সবজিগুলো স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যাচ্ছে। কৃষকরা বলছেন বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন তারা। কৃষক মো. আবু কদর জানান, আমি এই প্রথম বাঁধাকপির চাষ করছি। প্রায় ২০শতক জায়গায় করা বাঁধাকপি প্রথমে একটু সমস্যা দেখা দিলেও পরে কৃষি অফিসের পরামর্শে কীটনাশক ব্যবহার করার পর ফলন দিন দিন উন্নতি হতে থাকে। আগে এই জমিতে আলুর চাষ করতাম। বীজরোপণ ও সারসহ মাত্র আমার খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত আমি প্রায় ৬ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও ২০-২৫ হাজার টাকার কপি বাজারে বিক্রি করতে পারব। তিনি বলেন এই ফসল ফলনে খরচ কম, লাভ অনেক বেশি। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলরা ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে শীতকালীন সবজি রোপন, পরিচর্যা ও উৎপাদনে ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে প্রতিটি গ্রামে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ হলেও, বেশি চাষ হচ্ছে পৌরসভার কাঁশখালী খালের পাড়, হচ্ছার ঘাট, ডাবুয়া ও গহিরা নোয়াজিশপুর গ্রামে। প্রতিবছর ভালো দামের আশায় কৃষকরা আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেন। তবে শীত মৌসুমে দুইভাবেই চাষ হয়ে থাকে আগাম ও মাঝামাঝি সময়ে। চাষিরা জানান আগাম ফসল উৎপাদনে খরচ বেশি হলেও বাজারে দাম বেশি পাওয়া যায়। কৃষক ইসমাইল জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন শীত মৌসুমে সবজির চাহিদা অনেক বেশি থাকে বাজারে। জমিতে আমার রোপন করা বাঁধাকপি, ফুলকপি ও অন্যান্যা শাক-সবজির ফলন ব্যাপক ভালো হয়েছে। তিনি জানান প্রায় ২ লক্ষ টাকার বেশি বেচাকেনা হবে। উপজেলার কয়েকটি হাট-বাজারে দেখা যায় ২০ টাকা ৩০ টাকা ও ৪০ টাকা পর্যন্ত আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে। আজগর আলী নামে এক কৃষক বলেন, ফুলকপি ও বাঁধাকপি অধিক ফলনের পাশাপাশি বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। কৃষি অফিসের পরামর্শে এই চাষে ঝুঁকেছেন তিনি। তবে তিনি বলেন এবার বাজারে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সনজিব কুমার সুশীল বলেন, ‘বাঁধাকপি ও ফুলকপি একটি উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি। উপজেলার কৃষকেরা আগাম ও শীতকালীন সময়ে দু’ভাগে এই ফসলগুলো চাষ করে থাকেন। এতে কৃষকেরা ভালো লাভবান হয়।’ এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, এ উপজেলায় বাঁধাকপি ও ফুলকপি চাষে চাষিদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এখানে বছরজুড়েই প্রায় সব রকমের সবজির চাষ হয়ে থাকে। জমিতে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে অধিকাংশ সবজি চট্টগ্রাম শহরসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। চলতি মৌসমু রাউজানে ১’শ ১০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি ও ১’শ ২৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ করছে কৃষকরা। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৭’শ ৫০ মেট্রিক টন ফসল।