শনিবার ● ৪ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » খেজুর গাছের দায়িত্ব নিলো মানুষ যে সেচ্ছাসেবী নামের সংগঠন
খেজুর গাছের দায়িত্ব নিলো মানুষ যে সেচ্ছাসেবী নামের সংগঠন
আমির হামজা, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: চট্টগ্রাম-রাঙামাটি চারলেন মহাসড়কে রাউজান অংশের সড়ক-বিভাজকে রোপন করা বিদেশী জাতের খেজুর গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন ‘মানুষ যে’ নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৪০ জন সদস্য পানির সংকটে মৃত্যুর ঝঁকিতে থাকা প্রায় ছয়শত বেশি খেজুর গাছের পরিচর্যার কাজ শুরু করেন জলিল নগর বাস ষ্টেশান এলাকা থেকে।
জানা য়ায়, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি চারলেন সড়কের রাউজান অংশের সড়ক-বিভাজকে রোপন করা হয় বিদেশী জাতের খেজুর গাছ গুলো। রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এর নিজস্ব অর্থায়নে গাছ গুলো রোপন করেন।
রোপন করা গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় রাউজান পৌরসভার সাবেক মেয়র। পৌরসভার অর্থায়নে গত দুই বছর পরিচর্যা, পানি ও সার দেওয়ার মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধন করে তোলেন পৌর কর্তৃপক্ষ।
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাউজান পৌরসভার মেয়র আত্বগোপনে চলে যায়। অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এ পরিস্থিতিতে ছয় শতাধিক খেজুর গাছ পানি সংকটে গাছগুলো মৃত্যুর পথে ছিল। গাছের ডালপালা শুকিয়ে গেছে। গোড়ালির মাটি ফাটল ধরেছে। এ সংকটময় মুহুর্তে খেজুর গাছ গুলোর জীবন বাঁচাতে দায়িত্ব নিতে চানা পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা কৃষি বিভাগ।
গত ২৮ নভেম্ব ‘পানির অভাবে মরছে সড়কের খেজুর গাছ’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকা-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পৌরসভার পক্ষ থেকে এক সাপ্তাহ খানিক পানি দিয়েছিল খেজুর গাছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে গাছে পানি দেওয়া বন্ধ করে দেয় তাঁরা। এ অবস্থায় আবারো গাছগুলো মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এছাড়াও গাছ গুলো পরিচর্যা পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন এক মানসিক পাগলী। এবার গাছ গুলো বাঁচাতে দায়িত্ব নিতে চেয়ে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত আবেদন করেন ‘মানুষ যে’ নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত ১ জানুয়ারী করা আবেদন গ্রহণ করে সংগঠনটিকে পরিচর্যা ও রক্ষাবেক্ষনের অনুমতি প্রদান করেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। অনুমতি পেয়ে সংগঠনটির ৪০জন সদস্য ২ জানুয়ারী পুরোদমে কাজ শুরু করেন। প্রথম দাপে খেজুর গাছগুলো ডালপালা কাটা, আগাছা পরিস্কার ও গাছের গোড়ালীতে মাটি কোপিয়ে সার প্রদানের উপযোগি করতে দেখা যায়। এরপর নিয়মিত পানি সরবরাহ সেবা প্রদান করবে বলে জানান ‘মানুষ যে’ নামের সংগঠনটির সদস্যরা।
‘মানুষ যে’ নামের সংগঠনটির শীর্ষ কর্মকর্তা মানবিক সংগঠক নাহিদ ইসলাম বলেন, হালদা ব্রিজ হতে রাবার বাগান পযর্ন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়কের মাঝখান জুড়ে প্রায় ছয় শতাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। সামান্য কিছু গাছ পানি ও পরিচর্যার অভাবে মৃত্যু হয়েছে। কেউ আন্তরিক ভাবে গাছগুলো বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসছে না। আমাদের সেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে বিনা পারিশ্রমিকে ৪০জন যুবক এ গাছগুলো বাঁচাতে এগিয়ে এসেছি। আমরা সারা বছর এ গাছগুলোর পরিচর্যা ও রক্ষাণাবেক্ষণ করব। তিনি পৌর কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সার প্রয়োগে সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে রাউজান পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিদুয়ানুল ইসলাম বলেন, সড়কে রোপন করা বিদেশী জাতের খেজুর গাছ বাঁচিয়ে রাখা দরকার। বর্তমানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পানি ও অন্যান্য পরিচর্যার অভাবে গাছগুলো মৃত্যু হওয়ার পথে। একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন গাছ গুলোর দায়িত্ব নিতে আমাকে একটি লিখিত আবেদন করছে। আমি আনন্দের সাথে আবেদনটি গ্রহণ করে রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছি।