সোমবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ
মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: সম্পত্তি রক্ষায় ন্যায়বিচার পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের সুদৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন মৃত আমান উদ্দিনের ছেলে মহালছড়ির কাঠ ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন।
সরেজমিনে এলাকায় গেলে জামাল উদ্দিন বলেন, গত ৩ যুগ ধরে আমরা ৩ভাই কবির আহমেদ, হোসেন আহমেদ ও আমি জামাল উদ্দিন খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে বসবাস করে আসছি।
৩ভাই জন্মলগ্ন থেকে ১৯৯১সাল পর্যন্ত যৌথ ফ্যামিলিতে ছিলাম। ১৯৮২ সালে মেজো ভাই হোসেন আহমেদ আমাদের ৩ভাইয়ের নামে মহালছড়ি বাজারের ৩৭নং প্লটটি তার ব্যবসার ১১হাজার টাকা দিয়ে সজল বড়ুয়া থেকে খরিদ করে আমাদেরকে ৩৮হাজার টাকার কথা বলে।
আমরা সরল বিশ্বাসে আমার নামে দেশ বাড়ির ৬গন্ডা জায়গা বিক্রি করে ১০হাজার টাকা ও ৩ভাইয়ের বন্দকী জায়গা হতে ফেরত নেয়া আরও ২৮হাজার টাকা মেজো ভাইকে প্রদান করি।
পরিতাপের বিষয় ৩ভাইয়ের নামে আঞ্চলিক দলিল থাকা সত্ত্বেও আইনগত জটিলতার কারণে পরবর্তীতে ভাগবাটোয়ারার সময় সমানভাবে ভাগ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে সর্বসম্মতিক্রমে এ প্লটটি মেজো ভাইয়ের নামে নামজারী করার সিদ্ধান্ত হয়। যা সামাজিক বিচারের মাধ্যমে প্রমানিত।
১৯৮৯সালে ক্যাফে ইসলামাবাদ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট নামে মহালছড়ি বাজারে হোটেলটি আমি নিজ অর্থায়নে ৬মাস পরিচালনার পর মেজো ভাই দোকানটি নিজে করবে বলে নিয়ে নেয়।
তৎকালীন পিটিশন রাইটার মিন্টু চৌধুরীর ১/১০/২০০৯ সালে লিখিত জবানবন্দিতে জানা যায়, ৩৭নং বাজার প্লটটি মৃত ভূবন মজুমদারের ওয়ারিশানদের নিকট হতে আঞ্চলিক দলিলমূলে সজল বড়ুয়া ক্রয় করে। সজল বড়ুয়া বিদেশ যাওয়ার সময় কবির, হোসেন, জামাল যৌথ পরিবারে থাকাকালীন ক্রয় করে নাম পরিবর্তনের জন্য মিন্টু রাইটারের সাথে ৭হাজার টাকা চুক্তি হয়। ১৯৮৭ সালে আইনগত জটিলতার কারণে ৩জনের নামে নামজারী না হলে সর্বসম্মতিক্রমে হোসেনের নামে নামজারীর জন্য জামাল ও হোসেনের নিকট হতে মামলা খরচের টাকা নেন মিন্টু চৌধুরী।
জামাল বলেন, আমি লেখা পড়া শেষ করে ১৯৮৩/৮৪ সালে মেজো ভাই হোসেনের সাথে যৌথ ব্যবসার সময় মহালছড়ির দিপারু টিলায় ১৯৮৬/৮৭ সালে ২জনের যৌথ নামে আঞ্চলিক দলিলমূলে ১০গন্ডা বসত ভিটা ক্রয় করে যৌথভাবে ২ভাই ঘর তৈরী করে বসবাস করে আসছিলাম।
বড় ভাই মৃত্যুর পর মহালছড়ির দিপারু টীলায় মেজো ভাই আমার ও তার যৌথ নামে বাড়ীর ১০গন্ডা জায়গা বনবীর বড়ূয়ার ভাতিজী কৃষ্ণ বড়ূয়া, হোসেন, তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম, তিন ছেলে শাকিল, সাগর, শাওন ও এক মেয়ে সুমাসহ ষড়যন্ত্র করে ২০হাজার টাকা বনবীর বড়ুয়াকে উৎকোচ দিয়ে যৌথ নামের আঞ্চলিক দলিল গোপন করে। গোপনে ২০০৭সালে মেজো ভাই তার ৩ছেলের নামে ভূয়া আঞ্চলিক দলিল পরিকল্পিতভাবে সৃজন করেছে বলে ১১/১/২০০৯ সালের শালিশী রোয়েদাদে প্রমাণিত। এবিষয়ে বনবীর বড়ুয়ার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো প্রমান মিলবে।
এরপর, ২০১১সালে মেজো ভাই আমাকে জোর পূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বাড়িতে আমার ১টি খাট, ১টি ওয়ারড্রব, ১টি লম্বা টেবিল, ১টি ড্রেসিং টেবিল ও ১টি সেলিং ফ্যান রয়ে গেছে।
শালিশী বৈঠকে বসত ভিটার ১০গন্ডা ২ভাইয়ের নামে ২ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে, তখন থেকে আমার ভাইয়ের ছেলেরা আমাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও শারীরিক লাঞ্চিত করাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকী দিয়ে আসছে। যেন আমি আমাদের যৌথ নামে ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে না যাই। তাদের উদ্দেশ্য হলো আমার সম্পত্তি আত্মসাৎ করা।
বাড়ির ১০গন্ডা যৌথ সম্পদসহ মহালছড়ি বাজারের ২টি প্লট হতে প্রতি বছর ১লাখ ২০হাজার টাকা করে ৩৪বছর যাবত একাই ভোগ করে আসছেন। এ ৩টি জায়গার পরিবর্তে শালিসী বৈঠকে মেজো ভাই দেশ বাড়ির ১কানি জায়গা দেয়ার কথা গ্রাম্য শালিশীতে স্বীকার করাও তার একটি ষড়যন্ত্র। যেহেতু সে শালিসী বৈঠকের বিচারকদেরসহ মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
মেজো ভাই শালিসী বৈঠকে সিদ্ধান্ত (চুক্তিপত্র) অমান্য করে থানায় জিডি করলে তার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে থানা তদন্ত রিপোর্ট দেয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করলে থানার তদন্ত রিপোর্ট মোতাবেক মামলা খারিজ হয়।
জামাল উদ্দিন তার ন্যায্য অধিকার আদায় তথা তার সম্পদের ভাগ বুঝে পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের সুদৃষ্টি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে জামাল উদ্দীনের মেজো ভাই হোসেন আহমেদের ছেলে সাগর বলেন, আমার বাপ-চাচাদের জায়গা জমি নিয়ে জটিলতা নিরসনে দেশ বাড়ি চন্দনাইশে মিমাংসার জন্য বসতে হবে মহালছড়িতে সুরাহা সম্ভব নয়।