

সোমবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » লামায় অপহৃত জিম্মিদশা থেকে পালিয়ে এসেছে একজন
লামায় অপহৃত জিম্মিদশা থেকে পালিয়ে এসেছে একজন
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মুরুং ঝিরি এলাকার ৬টি রাবার বাগান হতে পাহাড়ি সন্ত্রাসী কর্তৃক অস্ত্রের মুখে জিম্মি ২৬ জন শ্রমিক থেকে মো. জিয়াউর রহমান (৪৫) নামে একজন পালিয়ে এসেছে।
সোমবার ১৭ ফেব্রুয়ারী সকালে শ্রমিক মো. জিয়াউর রহমান পালিয়ে এসে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন।
সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মো. জিয়াউর রহমান পালিয়ে আসার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বার বার অবস্থান পরিবর্তন করছিল সন্ত্রাসীরা। কোন এক ফাঁকে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মো. জিয়া পালিয়ে যায়। মো. জিয়াউর রহমানের দেয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে ওসি বলেন, সন্ত্রাসীরা সংখ্যায় ১২ থেকে ১৪ জন। তাদের সকলের হাতে অস্ত্র রয়েছে এবং গায়ে পাতা রংয়ের সেনাবাহিনীর মত পোশাক আছে। সন্ত্রাসীরা অনেকে মুখোশ পড়া। উপজাতি এই সন্ত্রাসীরা কোন সংগঠনের সদস্য তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এলাকাটি লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী। এ ঘটনার পর সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে।
আরাফাত রাবার প্লান্টেশন এর মালিক মো. ফোরকান ও শাহাজাহান মেম্বার বলেন, অপহৃত শ্রমিকদের মুক্তিপন নিয়ে দফারফা চলছে। সন্ত্রাসীরা একেকবার একেক নাম্বার থেকে কল দিচ্ছে। চাঁদার দাবিতে রাবার শ্রমিকদের অপহরণ করা হয়েছে বলে রাবার মালিকরা জানিয়েছেন।
এদিকে ভোর থেকে অপহৃত রাবার শ্রমিকদের উদ্ধারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সহ যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যহত রয়েছে। সন্ত্রাসীদের জিম্মায় থাকা অপহৃত আরো ২৫ রাবার শ্রমিকরা হলো নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ক্যংগার বিল এলাকার অধিবাসী মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. ছিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আবদুল মাজেদ (১৭)। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আলিখ্যং এলাকার অধিবাসী মনিরুল ইসলাম (৩০), মোবারক (২৫), মো. হারুন (৩০), রমিজ উদ্দিন (৩০), ছৈয়দ নুর (২৮), মো. কায়সার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭)। কক্সবাজার জেলার ইদগড় ইউনিয়নের মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), খায়রুল আমিন (৩০), আবু বক্কর (২৯), মো. আবদুর রাজ্জাক (৩৩) ও মুবিন (২৫)। অপহৃত আরও ৬ জন শ্রমিকের নাম পাওয়া যায় নি। এরা সকলে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মুরুং ঝিরি এলাকায় অবস্থিত রাবার বাগান মালিক মো. ফোরকান আহমেদ (৪৮), নুর মোহাম্মদ (৩২), আহসান উল্লাহ (৩৫), মো. হুমায়ুন (৪৫), আজিজুল হক (৩৮) ও আবুল কালাম (২৮) এর রাবার বাগানে রাবার শ্রমিক হিসাবে কর্মরত ছিল।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি গভীর রাতে দুর্গম বমুখাল এলাকায় সশস্ত্র পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা ৩টি খামার বাড়ি থেকে ৭ জন তামাক শ্রমিক ও ২ ফেব্রুয়ারী গজালিয়া ইউনিয়নের কমলা বাগান এলাকা থেকে ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এছাড়া গত ২৭ জানুয়ারি উপজেলার সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানোর সময় স্থানীয়রা অস্ত্রসহ মংএনু মারমা (৩৪) নামের এক পাহাড়ী সন্ত্রাসীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।