শনিবার ● ৩০ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » চাকরি না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে সনদ ফেরত দিল প্রতিবন্ধী যুবক
চাকরি না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে সনদ ফেরত দিল প্রতিবন্ধী যুবক
অনলাইন ডেস্ক :: সরকারি একটি চাকরির জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় পরীক্ষায় পাস করেও চূড়ান্ত নিয়োগ না হওয়ায় নিজের সবগুলো মূল সনদপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফিরিয়ে দিতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছেন মাহাফুজার রহমান নামের একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক।
বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রেজাউল আলম সরকারের কাছে মাহাফুজার তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার সব মূল সনদপত্র জমা দেন।
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রেজাউল আলম সরকার বলেন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে মাহাফুজার রহমানের একটি আবেদনপত্রের সঙ্গে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদপত্রগুলো জমা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে রীতিসম্মত না হলেও একান্ত মানবিক কারণে তাঁর আবেদনপত্রের সঙ্গে ওই সনদপত্রগুলো জমা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যা করণীয় তা জেলা প্রশাসক করবেন।
আবেদনপত্রে মাহাফুজার রহমান উল্লেখ করেন, লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিনি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০১২ সালে সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। জেলার পাঁচটি উপজেলায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪৫ জনের মধ্যে মাহাফুজার রহমান একমাত্র শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে মৌখিক পরীক্ষা দেন। এ সময় তাঁর বয়স ছিল ৩৩ বছর। চূড়ান্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কোটা পূরণ করা হলেও প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করা হয়নি। এরপর সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পরও তাঁকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিনি উল্লেখ করেন, ওপরের মামা, খালু বা অর্থ না থাকায় তিনি ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন নাহার লাকী উচ্চশিক্ষিত হয়েও বেকার জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের সংসারে মোতাসসীম ফুয়াদ লামীম নামের এক বছর আট মাসের একটি ছেলে শিশু রয়েছে।
মাহাফুজারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মো. সৈয়দ আলী বলেন, মাহাফুজার জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাঁর ডান হাত ছোট, তা ব্যবহার উপযোগী নয়। তিনি বলেন, ‘ছেলেটি বা তাঁর স্ত্রী একটি চাকরি পেলে আমি মরেও শান্তি পেতাম। কিন্তু কোথাও কোনো আলোর দেখা না পেয়ে সে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার সব মূল সনদপত্র সরকারের কাছে হস্তান্তরের জন্য জেলা প্রশাসককে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
জানা গেছে, মাহাফুজার রহমান ২০০৬ সালে রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাস করেন। সূত্র:অনলাইন নিউজ বিডি