শনিবার ● ৩০ এপ্রিল ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় লাথি মেরে দাঁত ভেঙ্গে দিল ইভটিজারের বাবায়
ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় লাথি মেরে দাঁত ভেঙ্গে দিল ইভটিজারের বাবায়
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৭ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৩০মিঃ) মেয়েকে ইভটিজিং করার অপরাধে ছেলের বাবা মেয়ের বাবার মুখে লাথি মেরে দাঁত ভেঙ্গে দিলেন ৷ থানায় অভিযোগ দায়ের করে কোন ফল না পেয়ে অপেক্ষা অবশেষে প্রভাবশালীদের চাপের মুখে গ্রাম্য সালিশে মীমাংসার প্রস্তাব, উপায় না পেয়ে মানতে বাধ্য হচ্ছে মেয়ের পরিবার ৷ ঘটনা টি ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ের তালশার গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় ৷ জানা গেছে, তালশার গ্রামের ইউনুচ আলী খোকনের ছেলে আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতিবেশী বিশারতের মেয়েকে উত্তাক্ত করে আসছিল ৷ মেয়ে বার বার তার বাবা মাকে জানানোর পর কোন ফল না পেয়ে অবশেষে গোপনে তার বোনের বাড়িতে পালিয়ে যায়৷ মেয়েকে বাড়ি না পেয়ে গত শনিবার ছেলের চাচা সাবেক ইউ পি সদস্য মোজাম ফোনে বিশারতকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসা করে যে তার নিকট রহিম ও মেয়ের কথা জানতে চাইলে বিশারত সমস্ত কিছু খুলে বলে ৷ বিশারতের মুখে ঘটনা শুনে ছেলের উপস্থিতিতে ছেলের বাবা ইউনুচ আলী খোকন বিশারত কে মারধর শুরু করে এবং এক পর্যায়ে বিশারতের মুখে লাথি মারে ৷ সাথে সাথে তার সামনের ২ দাঁত পড়ে যায় ৷ হইচই চেঁচামেচি শুনে আশে পাশের লোক জন জড়ো হয়ে বিশারত কে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লোক্সে ভর্তি করে ৷ তারপর তার জামাইয়ের সহযোগিতায় কোটচাঁদপুর থানায় একটি প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করে কিন্তু প্রায় ৫/৬ দিন গত হয়ে যাবার পরও থানার পুলিশের নিরাবতার কারনেই তাকে গত বুধবার রাত্রে গ্রামের প্রভারশালীরা ভেকে নিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে সামান্য কিছু টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাড়িয়ে দেয় ৷
এই প্রসঙ্গে মেয়ের সাথে কথা বললে তিনি জানায়, রহিম আমাকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে উত্তাক্ত করে আসছিল ৷ আমি আমার পিতা মাতাকে জানালে তারা ভয়ে রহিমের কিছুই বলতে সাহস পায় নাই ৷ অবশেষে সে আমাকে জোর করে তুলে নেওয়ার হুমকি দিলে আমি ভয়ে তার হাত থেকে বাঁচার জন্য আমার বোনের বাড়িতে পালিয়ে যায় ৷
বিশারত জানায়, মেয়ে আমাদের সমস্ত কিছু জানিয়েছে কিনত্মু আমি ভয়ে ওদের কিছু বলতে সাহস পাই নাই ৷ ঐ দিন আমার মেয়ে পালিয়ে আমার বড় মেয়ের বাড়িতে চলে গেলে পাড়ায় বলাবলি হতে থাকে যে রহিমের সাথে চলে গেছে ৷ তাই আমাকে ডেকে নিয়ে রহিমের বাবা মারধর করে সামনের ২ দাঁত ফেলে দেয় ৷ থানায় যেয়ে একটি সাদা কাগজে লিখিত দিয়াছি ৷ কিন্তু আজও থানা থেকে কেউ আসেনি ৷ এইটাই কেচ কি না সেটা আমি বলতে পারি না ৷
এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে ইউনুস আলী খোকনের বাড়িতে গেলে তার ছেলে রহিম সাংবাদিক এসেছে দেখে দ্রুত পালিয়ে যায় ৷ দেখা হয় খোকনের স্ত্রীর সাথে তিনি জানান, সে বাড়ি নেই ৷ কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় আওয়ামীলীগের ২ জন নেতা এসে বলেন বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মীমাংসা হয়ে গেছে ৷ এই ব্যাপারে আমরা কোন কথা বলতে চাই না ৷ তার মধ্যে একজন নিজেকে কুশনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও অপর জন আতিয়ার নামের একজন ইউপি সদস্য ৷ যতদুর জানা গেছে ইভটিজিংকারী আব্দুর রহিম ঐ গ্রামের খাপাড়া মসজিদের ইমাম বলে যানা গেছে ৷
স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জ এস আই এস এম মিজানুর রহমানের নিকট এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার এখানে কোন অভিযোগ আসে নাই এবং থানা আমাকে কিছুই জানাই নাই ৷ ক্যাম্পে কেউ এসে অভিযোগ করলে আমি তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম ৷