

রবিবার ● ২৩ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » সুদেল ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে হারুন এখন ঘরছাড়া
সুদেল ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে হারুন এখন ঘরছাড়া
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: মাছ ব্যবসার উপার্জিত অর্থে অতি কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে চলছিল কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বারখাদা ত্রিমোহনী এলাকার ইউছুপের ছেলে হারুনের সুখের সংসার। হঠাৎই সুদেল ব্যবসায়ীদের কালো থাবায় নেমে আসে অন্ধকার, তছনছ করে দেয় তার সংসার। বর্তমানে তাদের ভয়ে সংসার ছেড়ে পালিয়ে বেড়াছে এই হারুন। হারুন একজন প্রতিষ্ঠিত মৎস্য ব্যবসায়ী হিসাবে দীর্ঘ ১০/১২ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত থেকে হালাল উপার্জন করে যাচ্ছিল। গত সাত বছর আগে তার কিছু অর্থের প্রয়োজন পড়লে উক্ত এলাকার ৪ জন সুদেল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করে সুদের বিনিময়ে মোট পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহন করেন।
এ বিষয়ে হারুনের কাছে জানতে চাওয়া হলে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি কুষ্টিয়া শহরের ভাগাড় এলাকায় বেশ কয়েকটি পুকুরে মাছের চাষ করে আসছিলাম প্রায় ১০/১২ বছর ধরে। হঠাৎ আমার অর্থের প্রয়োজন পড়ায় ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করে গত ৭ বছর আগে মিরপুর উপজেলার গোবিন্দপুরের ফজলু ডাক্তারের ছেলে মনজুর আলম সুমনের কাছ থেকে শতকারা ১০% সুদে ২ লাখ টাকা, উক্ত এলাকার মমতাজুর রহমানের ছেলে মাছুদের কাছ থেকে ৩ মাস আগে শতকারা ১৫% সুদে ৭০ হাজার টাকা, বারখাদা ত্রিমোহনী এলাকার মনছুরের ছেলে শিপুর কাছ থেকে ৭ বছর আগে শতকারা ১০% সুদে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও উক্ত এলাকার পোল্লাদের কাছ থেকে ৭ বছর আগে শতকারা ১০% সুদে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করি। তার বিনিময়ে এই ৭ বছর ধরে প্রতিমাসে তারা আমার কাছ থেকে প্রতি মাসে সুদের অর্থ বুঝে নিত। গত ৫ই আগষ্টের পর থেকে আমার ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দিলে তারপরও তাদের সুদের টাকা মিটিয়ে দিতে থাকি। গত ২ মাস আগে আমি এই সুদের টাকা না দিতে পারায় আমার ও আমার পরিবারের উপর নেমে আসে কঠিন বর্বরতা। একের পর হুমকি, থানায় অভিযোগ, আমার চেকের উপর বেশী টাকার অংক লিখে ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করে মামলার প্রস্তুতি চালাছে এই চার সুদেল ব্যবসায়ী। এই সুদেল চক্রটি সম্প্রতি একটি পত্রিকায় আমার ছবি দিয়ে ‘পিতা-পুত্রের অভিনব কায়দায় টাকা আত্বসাৎ করার অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইতিমধ্যে তারা আমার বাসায় পুলিশও পাঠিয়েছে।
তবে উক্ত চার সুদেল ব্যবসায়ী সম্পর্কে উক্ত এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই চার জনের একটি সিন্ডিকেট আছে, তারা শুধু হারুনকেই সুদের উপর টাকা দেয় নাই, তারা অত্র এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে সুদের উপর টাকা দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করে আসছে। তাদের ফাঁদে পড়ে হারুনের মত অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। আমরা এই চার সুদেল ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।