শিরোনাম:
●   কুষ্টিয়ায় বাসচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ●   অবিলম্বে মেঘনাকে মুক্তি দিন, ৭৪ এর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করুন ●   মার্কিন মদদেই ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যেতে পারছে ●   আত্রাইয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কাগজের ফুল ●   পাহাড়ে নববর্ষ ও চৈত্রসংক্রান্তির সাতরঙা উৎসব : মো. রেজুয়ান খান ●   বাগেরহাটে লবণাক্ত পতিত জমিতে মাঠজুড়ে সূর্যমূখীর হাঁসি ঝিলিক ●   প্রকাশ্য রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার ●   ফটিকছড়িতে আগুনে পুড়ল বিধবার ঘর ●   ১৩ বছর পর জমি দখলে নেয় ভুক্তভোগী, ভিন্নখাতে নিতে অপ-প্রচার ●   দেহ ব্যবসায়ীদের আস্তানা পুড়িয়ে দিলেন এলাকাবাসী ●   রাঙামাটিতে নারী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন : ঘাতক গ্রেফতার ●   গাজার প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হোন - ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল কর্মসূচি সফল করুন : জুঁই চাকমা ●   বাঙ্গালহালিয়া শিব মন্দিরে ৫ দিনব্যাপী বাসন্তী মায়ের পূজা ●   রাঙামাটি এটিআই শিক্ষার্থীরা ৮ দফা কর্মসূচির ঘোষণা ●   ছেলের দায়ের কোপে আহত মায়ের মৃত্যু ●   সু-প্রদীপ চাকমা রাঙামাটিতে আগমনের প্রতিবাদে কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ ●   রাঙামাটি বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তর পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ●   এতিম শিশুদের সাথে ঈদ-উল-ফিতর এর আনন্দ ভাগ করে নিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ●   রাঙামাটিতে ঈদের উপহার পেলেন সাড়ে তিন’শ ইমাম মুয়াজ্জিন ●   সিয়াম সাধনার পুরস্কার : ঈদুল ফিতরের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য ●   সাইফুল হক দেশবাসীকে ঈদ উল ফিতর এর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ●   সু-প্রদীপ চাকমাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাঞ্চিত ঘোষণার হুশিয়ারী দিয়েছে পিসিসিপি ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের নজিরবিহীন বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে পিসিসিপি ●   জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে মতামত জমা দেয়া হয়েছে ●   রাঙামাটিতে স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশনের ঈদ বস্ত্র বিতরণ ●   রাঙামাটিতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দুই ভারতীয় আটক ●   রাঙামাটিতে রক্তেভেজা গণঅভ্যুত্থান : পাহাড়ের বৈষম্য বইয়ের মোড়ক উম্মোচন ●   রাউজানে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু ●   মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাত এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি ●   কাউখালীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
রাঙামাটি, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বৃহস্পতিবার ● ১০ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কাগজের ফুল
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কাগজের ফুল
বৃহস্পতিবার ● ১০ এপ্রিল ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আত্রাইয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কাগজের ফুল

--- নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: আর মাত্র ক’দিন পরেই আসছে বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। এই বৈশাখ উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে বৈশাখী মেলা। তবে কাগজের বাহারী ফুল ছাড়া যেন পূর্নতা পায় না এসব মেলায়। কারন প্রিয়জনকে উপহার কিংবা ছোট্ট সোনামুনিদের খেলনা; কাগজের ফুলের কোন তুলনা হয় না। আর তাই কাগজের ফুলের যোগান দিতে দিন-রাত নানান রঙের বাহারি কাগজ, কাপড় ও শোলা দিয়ে ফুল তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আত্রাইয়ের জামগ্রামের ফুল কারিগররা। এই বৈশাখকে সামনে রেখে জামগ্রামের ফুলের কারিগররা স্টার, চর্কি, মানিক চাঁদ, গোলাপ, সূর্যমুখী, কিরণমালা, জবা, বিস্কুট, গাঁদাসহ বিভিন্ন নামের বাহারী নাম আর ডিজাইনে ফুল তৈরি করছেন। যেন দেখে মনে হবে এক একটা জীবন্ত ফুল।

আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে ওই গ্রামের ২-৩টি হিন্দু পরিবার এই ফুল তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন তাদের হাত ধরে পুরো গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস এই ফুল তৈরি। বর্তমানে ওই গ্রামের প্রায় ৪শ পরিবার এই বাহারি ফুল তৈরির কাজে নিয়োজিত। সংসার দেখভাল করার পাশাপাশি গ্রামের নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ছোট-বড় সবাই এই ফুল তৈরি করার কাজ করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে বৈশাখী মেলা আর এই মেলাগুলোকে আরো বর্ণিল সাজে সাজাতে তাদের এই প্রাণান্তর চেষ্টা। পাশাপাশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন ফুল কারিগররা। আর তাই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত অবধি কাজ করে যাচ্ছেন ফুল তৈরির কারিগররা। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে বিভিন্ন স্থানে জটলা বেঁধে কয়েকজন মিলে তৈরি করছে এই ফুলগুলো। ফুল তৈরির পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা। তবে পহেলা বৈশাখে এই ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে দুই ঈদে, বিভিন্ন পূজা ও মেলায়ও এই ফুল বিক্রি করা হয়। কেউবা কাপড়, কাগজ আর বাঁশসহ নানা উপকরন দিয়ে সকাল থেকে রাত অবধি ফুল তৈরির কাজ করে চলেছেন। পরিবারের একজন নয়, ফুল তৈরির এ কাজ করছেন পরিবারের সকলেই। বিশেষ করে বাড়ির নারীরা সংসারের কাজ-কর্ম সেরে তৈরি করছেন এসব বাহারী ফুল। খুব বেশি পরিশ্রম না হলেও ধৈর্য সহকারে করতে হয় এই কাজগুলো। বাড়ির সকলে মিলে ফুল তৈরির পর পুরুষরা বিক্রির উদ্দেশ্যে চলে যায় জেলা ও জেলার বাহিরে। অর্থাৎ দেশের ৬৪ জেলাতে। সেখানে গিয়ে তারা ১৫-২০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করে ফুলগুলো বিক্রি শেষ করে পুনরায় বাড়ি ফিরেন। এতে করে বাৎসরিক একটি বড় অংকের আয়ও করে থাকেন ফুলের কারিগররা।

জামগ্রামের ফুল কারিগর সুরুজ ইসলাম দুলু বলেন, প্রথমে আমার দাদা, এরপর আমার বাবা। তারা গত হওয়ার পর আমিও দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই ফুল ব্যবসা করে আসছেন। এসব ফুল তৈরির উপকরন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমদানি করা হয়। তারপর সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে ফুলে রূপান্তরিত করা হয়। এই ফুল তৈরির কাজে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান সহযোগিতা করে থাকেন। পহেলা বৈশাখ আসার এক মাস আগে থেকে শুরু হয় এসব ফুল তৈরির কাজ।

ওই গ্রামের ফুলের কারিগর মনিরুল ইসলাম কানন বলেন, তার বাবা এই ফুল তৈরি ও তৈরিকৃত ফুল বিভিন্ন জেলায় পাইকারী বিক্রির কাজ করতেন। সেই সুবাদে তিনিও এ কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি, তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও বাবা-মা যৌথভাবে সংসার করছেন। তবে এই ফুল তৈরি থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে অনেক স্বচ্ছলভাবেই দিন কেটে যায় তাদের। তারা সারা বছর এ কাজ করে থাকেন।

৫৫ বছর বয়সি আমিনুল ইসলাম বুলু নামে এক ফুল ব্যবসায়ী জানান, জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই তিনি এই ফুল বিক্রির সাথে জড়িত। ফুলগুলো পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসা বৈশাখী মেলাগুলোতে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। যে এলাকায় যাওয়া হয় সেখানে তাবু খাটিয়ে নিজেরাই রান্না-বান্না করে খেতে হয়। এরপর সব ফুল বিক্রি হয়ে গেলে আবার ফিরে আসা হয়। এতে করে পহেলা বৈশাখ, দূর্গাপূজাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মৌসুমভেদে লাভ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ফুলের কারিগর আফরোজা বানু বলেন, ফুল তৈরিতে পরিবারের গৃহিনীদের অবদান সবচেয়ে বেশি। সংসারের সব কাজ সম্পন্ন করে পরিবারের পুরুষদের এই ফুল তৈরিতে সাহায্য করি। তিনি আরো বলেন, সরকার থেকে বিনা অথবা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে আমাদের এ শিল্পটি আরো এগিয়ে যাবে। আত্রাই মোল্লা আজাদ সরকারী কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী পুজা বলেন, বাবা এই ফুলের ব্যবসা করে আমাদের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছেন। আমিও পড়ালেখার পাশাপাশি ফুলের কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করে থাকি। এতে করে আমার হাত খরচ চলে যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামাল হোসেন বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যপূর্ণ শিল্প। যার কদর দেশজুড়ে। সৌখিন মানুষ ও শিশুদের কাছে এই বাহারি কৃত্রিম ফুলগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। এই ফুল কারিগররা শুধু তাদের উপার্যনই নয়; বাংলার সকল সাংস্কৃতিক উৎসবকে বর্ণিল করতেও বিশেষভাবে ভূমিকা রাখছেন। এটা একটি ক্ষুদ্র কুটির শিল্প। আর এই শিল্পের তৈরি ফুলগুলি দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিক্রি হচ্ছে। শুধু পহেলা বৈশাখ নয়, বিভিন্ন গ্রামীন মেলার সোন্দর্যবর্ধনে ব্যপক ভূমিকা রাখে এই জামগ্রামের ফুল। এর সাথে জড়িত কারিগরদের জন্য উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)