মঙ্গলবার ● ৩ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঝিনাইদহে স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের সময় মহিউদ্দীন আহম্মেদ আটক
ঝিনাইদহে স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের সময় মহিউদ্দীন আহম্মেদ আটক
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৯ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.২৫মিঃ) ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সাবেক নাজির জাল স্বাক্ষর করে সরকারের বিভিন্ন খাতের ২২ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে ৷ সোমবার দুপুরে মহেশপুর সোনালী ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে ৷
আটক সাবেক নাজিরের নাম মহিউদ্দীন আহম্মেদ ৷ তার বাড়ি কোট চাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামে ৷ এ ঘটনায় মহেশপুর উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ৷
একাধিক দুর্নীতির কারণে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও তিনি অফিসের সব বিলের কাজ করে থাকেন ৷
মহেশপুর সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরে মহিউদ্দীন আহম্মেদ ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকার একটি বিল নিয়ে ব্যাংকে আসেন ৷ বিল ও চেকে এসি ল্যান্ডের স্বাক্ষর না মেলায় তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয় ৷ এসময় সাবেক নাজির মহিউদ্দীন পালানোর চেষ্টা করলে লোকজনের সহায়তার তাকে আটক করা হয় ৷
এছাড়া এসময় তার দেহ তল্লাসি করে আরও ১৫ লাখ টাকার জাল বিল ভাউচারের চেক পাওয়া যায় ৷ বিকালে তাকে মহেশপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয় ৷ ম্যানেজার আরও জানান, মহিউদ্দীনের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কাগজপত্রে এসি ল্যান্ড চৌধুরী রওশন ইসলামের স্বাক্ষর জাল প্রমাণিত হয়েছে ৷ এছাড়া মহেশপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে তিনি জানান ৷ অভিযোগ পাওয়া গেছে মহেশপুর উপজেলা এসি ল্যান্ড ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সহায়তায় দীর্ঘ দিন ধরে মহিউদ্দীন এই জালিয়াতি করে আসছে ৷ অফিস থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়ার পরও তাকে দিয়েই মহেশপুর এসি ল্যান্ড সব কাজ করে থাকেন ৷ সুযোগ বুঝে মহিউদ্দীন প্রতি মাসেই ২/৩ লাখ টাকার ভুয়া বিল ভাউচার তুলে আত্মসাত করে সে ৷
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশাফুর রহমান খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, একাধিকবার দুর্নীতির দায়ে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে নাজির মহিউদ্দীনকে বরখাস্ত করা হয়েছে ৷ এছাড়া তার অপকমের্র কারণে বেশ কয়েকবার তিনি জেল খেটেছেন ৷
বরখাস্ত হওয়ার পরও মহিউদ্দীন সরকারি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে সরকারি টাকা তোলার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন ৷ তিনিও বলেন, মহিউদ্দীনের সঙ্গে একটি শক্তিশালী চক্র জড়িত রয়েছে ৷ তাদেরও চিহ্নত করে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে ৷
মহেশপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সুজিত কুমার জানান, মহিউদ্দীনের কাছে পাওয়া এসি ল্যান্ডসহ কর্মচারীদের বেতন বিলের কাগজগুলোতে আমি স্বাক্ষর করেছি ৷ বাকি বিলের কাগজগুলো আমার অফিসেই আসেনি ৷ তিনি আরও জানান, আমি আগেই মহেশপুর এসি ল্যান্ড স্যারকে সতর্ক করে বলেছি একজন বরখাস্ত কর্মচারী দিয়ে বিলের কাজ করা ঠিক হচ্ছে না ৷ কিন্তু তার কথা এসি ল্যন্ড আমলে নেননি ৷ তবে এলাকাবাসীর ধারণা এ কাজের সঙ্গে এসি ল্যান্ডও জড়িত থাকতে পারে ৷ তা নাহলে এসি ল্যান্ড কেন তাকে দিকে বিলের কাজ করাবে ৷ এসি ল্যান্ড চৌধুরী রওশন ইসলামের সঙ্গে ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি ৷
এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, মহিউদ্দীন এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে ৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷ মহেশপুর সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার আসাদুর রহমান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি ৷