বৃহস্পতিবার ● ৫ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » রাঙামাটি জেলায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা শুণ্য: ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা
রাঙামাটি জেলায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা শুণ্য: ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (২২ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৫মিঃ) রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা শুণ্যতে চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা৷ তিনি সিএইচটি মিডিয়ার সাথে একান্ত স্বাক্ষাতকারে এ তথ্য জানান৷ তিনি আরো জানান ২০০৯ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যালেরিয়ার উপর ডিপ্লোমা নেওয়ার পর নিজের জন্মভুমি পার্বত্য এলাকায় ফিরে এসে আগেকার সময়ের ভয়াবহ ও মরনব্যাধি ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু করেন৷ এতে কাঙ্খিত সফলতা আসে৷ রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ২০১৩ সালে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা ছিলো মাত্র ২ জন আর ২০১৪-২০১৫ সাল এবং ২০১৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা শুণ্যর কোঠায় চলমান রয়েছে৷ এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেচলাসহ ম্যালেরিয়ার উপর সরকারী নিয়মাবলী যেমন সন্ধ্যাবেলায় বাচ্চাদের বাহিরে বেরোতে না দেওয়া, ঘুমানোর আগে মশারী টানানো, খালি গায়ে না থাকা ইত্যাদি কিছু নিয়ম সতর্কতার সহিত মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি৷ নিয়ম মেনে চললে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা শুণ্যতে ধরে রাখতে পারবো, বলেন সিভিল সার্জন৷ তবে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু সংখ্যা শুণ্যতে চলমান থাকলেও রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় সমগ্র চিকিত্সা সেবার ক্ষেত্রে চিকিত্সক সংকট ও জেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতালটির অবকাঠামো সমস্যায় জর্জরিত৷ তিনি বলেন, যেখানে ১৭৬ জন চিকিত্সক থাকার কথা, রয়েছেন মাত্র ৭৮ জন, আর ৩১ জন কনসালটেন্ট এর বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ১৩ জন৷ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রাঙামাটি সরকারী হাসপাতালটি সরকার ১০০ শয্যায় উন্নীত করার পরও সংকুলান না হওয়ায় মেঝে চিকিত্সা দিতে হয়৷ একটি জেনারেটর রয়েছে তাও হাল আমলের ৷ বিদ্যুত্ না থাকলে জরুরী সেবা দিতে হয় ব্যাক্তিগত জেনারেটর দিয়ে৷ তারপরও আশাবাদী এই চিকিত্সক৷ তিনি বলেন, চিকিত্সা সেবার উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পুরস্কৃত হয়েছেন, বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে, আবার পুরস্কৃত হবে৷ কারণ পৃথিবীর অনেক ক্ষমতাবান দেশ ছাড়িয়ে স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় আর সারাবিশ্বে দই শত’র অধিক দেশের মধ্যে ৮৮তম অবস্থানে বাংলাদেশ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে অত্যান্ত সচেতন৷ রাঙামাটি জেলার প্রান্তিক পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়িয়েছেন, স্বাস্থ্য সেবার কারণে পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশ একটা মডেল হয়ে আছে৷ রাঙামাটি জেলাতে ৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে কাজ করছে বলে জানান তিনি৷
আগামী ১৫ মে মাসে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত হবে প্রান্তিক এলাকা তথা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে স্বাস্থসেবার মান উন্নয়নের উপর আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী দলেও রয়েছেন তেহরান মেডিকেল স্কুলে ডিপ্লোমা নিতে যাওয়া ১৫ টি দেশের ৪৫ জনের মধ্যে প্রথম হওয়া এই চিকিত্সক৷ এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আগ্রহীকরন ও সেবার মান উন্নয়নের উপর রুপরেখা তৈরী হওয়ার কথা জানান৷ প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে এখনো চিকিত্সা সেবা নিতে আগ্রহী নয় বা অপচিকিত্সা ঝাড়ফুঁক বিশ্বাসী, এছাড়া মাতৃমৃত্যু, দুর্যোগপূর্ণ সময়ে ডায়রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে প্রত্যন্ত এলাকার জনগোষ্ঠীর সেবার মান উন্নয়নে এ সম্মেলন, সম্মেলনে রুপরেখা তৈরী হলে সে অনুযায়ী সেবার মান উন্নয়নে কাজ করবো, বলেন পার্বত্য অঞ্চলের অহংকার ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা৷