বৃহস্পতিবার ● ৫ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পক্ষের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, আহত ৫
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পক্ষের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, আহত ৫
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২২ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৫৫ মিঃ) কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমর্থক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেছে উপ-উপাচার্য গ্রুপের কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা৷ এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোর্শেদসহ ৫ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন৷ উভয় গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে৷
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমানের সমর্থক আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বুধবার পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল৷ এই কর্মসূচির প্রাক্কালে এক পক্ষের কর্মকর্তারা অপর পক্ষের কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেন৷
সকাল থেকেই উপ-উপাচার্য পন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজুর গ্রুপের ক্যাডাররা শতাধিক বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ রামদা-অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বরের পাশে অবস্থান নেয়৷ এসময় উপাচার্য সমর্থক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গ্রুপের নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় টেন্টে অবস্থান নেয়৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,
উপ-উপাচার্য পন্থী শিক্ষক কর্মকর্তা, ছাত্রলীগের ক্যাডার ও বহিরাগতদের নিয়ে উপাচার্য পন্থী শিক্ষকদের মানববন্ধনে বাধা দেয়৷ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপাচার্য সমর্থক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের কর্মকর্তা মীর মোর্শেদসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধনে যোগদানের জন্য প্রশাসন ভবন থেকে বের হয়৷ এ সময় আগে থেকেই প্রশাসন ভবনের গেটে অবস্থানরত উপ-উপাচার্য সমর্থক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন খান, উপ-উপাচাযের্র ব্যক্তিগত সহকারী আ. হান্নান, আসাদুজ্জামান মাখন, গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন কর্মকর্তা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়৷
এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহকারী রেজিস্ট্রার মীর মোর্শেদ, এস্টেট শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ও ইবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ, উপাচার্যের পিএস ও ইবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রারের পিএস আনোয়ার হোসেন ও রেজাউল নামে একজন আহত হয়৷ আহতদের মধ্যে মোর্শেদের অবস্থা গুরুতর৷
আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়েছে৷ এ সময় তারা উপাচাযের্র কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়৷ এছাড়াও এস্টেট শাখার কর্মকর্তা হারুনের অফিসেও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে তারা৷ এ নিয়ে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকারের অপসারণের দাবি করে মানববন্ধন করে উপ-উপাচার্য সমর্থকরা৷
পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উপাচার্য সমর্থক শিক্ষক-কর্মকর্তারা৷ বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়৷
এদিকে উপাচার্য গ্রুপের কর্মসূচির প্রতিবাদে একই সময় পাল্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে উপ-উপাচার্য সমর্থক শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের একাংশ৷ তারা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ চেষ্টার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে৷
হামলায় আহত উপাচার্য পক্ষের কর্মকর্তা মীর মোর্শেদ বলেন, মানববন্ধনে অংশ নিতে যাওয়ার সময় তাঁদের ওপর হামলা হয়৷ প্রশাসন ভবন থেকে বের হওয়ার সময় উপ-উপাচার্য পক্ষের কর্মকর্তা উপরেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন ও সহ-উপাচাযের্র ব্যক্তিগত সহকারী মো. হান্নানের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন এই হামলায় অংশ নেন৷
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন বলেন, উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি থাকায় একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে৷
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পন্থী শাপলা ফোরামের সভাপতি ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, ন্যাক্কারজনকভাবে বর্তমান প্রো-ভিসির ইন্ধনে আমাদের কর্মকর্তাদের উপর হামলা করেছে৷ এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি৷ এছাড়া বর্তমান প্রো-ভিসি পদত্যাগ না হওয়া পর্যনত্ম আমরা ক্ষানত্ম হব না৷
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে হামলা চালিয়েছে৷ আমি এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷ একই সঙ্গে হমলায় জড়িতদের শাসত্মি দাবি করছি৷
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, যেহেতু উভয় গ্রুপের মধ্যে একটু মতবিরোধ হয়েছে৷ তাই সবাই যাতে নির্বিঘ্নে মত প্রকাশের স্বাধীনতা পায় সেজন্য প্রক্টরিয়াল বডি ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে৷
ইবি থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন জানান, মানববন্ধন শুরুর পরপরই ব্যক্তিগত আক্রশের জেরে হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন৷ পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে৷