শনিবার ● ১৪ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পার্বত্য অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারে ঘোষণার প্রতিবাদে ২২ মে তিন পার্বত্য জেলায় হরতালের
পার্বত্য অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারে ঘোষণার প্রতিবাদে ২২ মে তিন পার্বত্য জেলায় হরতালের
ঢাকা প্রতিনিধি :: ৪ টি ব্রিগ্রেড ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রতিবাদে আগামী ২২ মে তিন পার্বত্য জেলায় হরতালের ঘোষণা দিয়েছে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ।
সংগঠনের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবী করে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গত ৮ মে রবিবার রাজধানীতে পার্বত্য কমপ্লেক্সের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিন পার্বত্য জেলার ৪টি সেনা ব্রিগ্রেড বাদে বাকী সব সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের ঘোষণার প্রতিবাদে ১৩ মে শুক্রবার সকাল ১১ টায় (ঢাকার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে -পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা -পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সম-অধিকার আন্দোলনের মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আহমেদ রাজু, পার্বত্য বাঙ্গালী গণমঞ্চের চেয়ারম্যান শওকত আকবর, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা শাহজালাল, মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি সাহাদাত হোসেন সাকিব। আরো উপস্থিত ছিলেন-পিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা মো: খলিলুর রহমান, সাদ্দাম হোসেন, ফিরোজ আলম প্রমুখ ।
বক্তারা বলেন, ‘রাজধানীতে পার্বত্যবাসীর অনেক প্রতীক্ষিত কমপ্লেক্সটি নির্মাণের আগেই পরিকল্পিতভাবে উপজাতিকরণ করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব কিশোর বিক্রম ত্রিপুরা ও উপজাতি কর্মকর্তাগণ বৈষম্যমূলক আচরণ ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে! তাই এদের মন্ত্রণালয় থেকে অপসারণ করতে হবে’।
বক্তারা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙ্গালীদের মধ্যেকার সম্প্রীতি রক্ষার জন্য এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীর কোন বিকল্প নেই।সেনাবাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অপহরণ, মুক্তিপণ, গুম, চাদাঁবাজি ,খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি এবং টোকেন বাণিজ্য যতদিন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে বন্ধ হবে না ততদিন সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে পাহাড়ে থাকতে হবে।
বক্তারা বলেন, ‘পাহাড়-সেনাবাহিনীর অনুপস্থিতিতে-পার্বত্য এলাকা বিভিন্ন দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্বর্গ্বরাজ্যে ও নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হবে।অতএব সেনা ক্যাম্প প্রতাহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে’।
বক্তারা আরো বলেন, ‘সেনাক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিসহ উপজাতি সন্ত্রাসীরা ৩টি গ্রুপের পালাক্রমে অসহনীয় চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম ও অস্ত্রের ঝনঝনানিতে-পার্বত্যবাসী অতিষ্ঠ। সেখানে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নিলে পাহাড়ের সকল মানুষ উপজাতি অস্রধারীদের হাতে জিম্মি হয়ে যাবে । পাহাড়ে কোন পর্য়টক যেতে সাহস পাবে না । এতে করে পাহাড়ের উন্নয়ন ব্যহত হবে।এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উক্ত ঘোষণা প্রত্যাহার করার দাবিসহ পার্বত্য এলাকায় প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পূন:স্থাপন এবং পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নব কিশর বিক্রম ত্রিপুরা ও উপজাতি কর্মকর্তাদের মন্ত্রনালয় থেকে অপসারণেরর দাবি জানান’।
মানববন্ধনের সভাপতি আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়া বলেন, “সেনাবাহিনী যেসময় অবৈধ অস্র উদ্ধারে সফলতা শুরু করেছে, যে সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সফলতা পেল, যখন আওয়ামী লীগ নেতা দীপংকর তালুকদার অবৈধ অস্র উদ্ধারের সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছেন, যখন সন্তু বাহিনীকে দমনে সকল জনগন দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ এবং গোটা পার্বত্যবাসী একদাবিতে একাকার, তখনই পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বিস্ময়কর। জাতি জানতে চায়, এটা পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের সাম্প্রদায়িক সচিবের কোন কারসাজী কিনা?
আমরা পরিস্কার জানিয়ে দিতে চাই, দেশের অখন্ডতা রক্ষায়, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্য রক্ষায়, কোন সন্ত্রাসী গ্রুপের দাবির কাছে মাথানত করে পার্বত্য এলাকা থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা যাবে না। অনতিবিলম্বে এ ঘোষণা প্রত্যাহারের এবং ২০০১ সালের ভূমি আইন পুণ:বিবেচনার প্রতিবাদে আগামী ২২ মে ৩ পার্বত্য জেলায় সকাল-সন্ধ্যা স্বতস্ফুর্ত হরতাল পালন করা হবে । যেখানে পিকেটারবিহীন হরতাল হবে। জনগন যদি পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ক্যাম্প প্রতাহার না চায়, তাহলে তারা সর্বাত্মক হরতাল পালন করবে । কাউকে হরতাল পালনে বাধ্য করা হবে না । এ কর্মসূচীর মাধ্যমে জনগন সরকারকে তাদের রায় জানিয়ে দেবে’।
পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনির ২২ মে আহুত হরতালকে তার সংগঠনের তরফ থেকে সমর্থন জানিয়ে এ হরতাল পালনে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।তিনি বলেন, তিন পার্বত্য জেলা থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।