সোমবার ● ১৬ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » শিশু স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা : গ্রেফতার ৫
শিশু স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা : গ্রেফতার ৫
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০০মিঃ) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দাখিনখান পূর্বপাড়া এলাকায় এক শিশু স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ এ ঘটনায় ধর্ষকের মা ও বোনকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ৷ অপরদিকে কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু৷ এ ঘটনায় ৪ধর্ষকের ৩জনকে রাতেই গ্রেফতার করেছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ৷
১৫ মে রবিবার মধ্যরাতে পুলিশ নিহত স্কুলছাত্রীটির লাশ একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করেছে৷ এ ঘটনায় ধর্ষকের মা ও বোনকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ৷ একই রাতে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা থেকে ধর্ষিতা প্রতিবন্ধী কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়৷
নিহত স্কুলছাত্রীর নাম সাদিয়া আফরিন ওরফে মায়া (৮)৷ সে দাখিনখান পূর্বপাড়া এলাকার রাজমিস্ত্রি কামাল হোসেনের মেয়ে এবং হায়দরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত৷
শিশুটির বাবা কামাল হোসেন আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিককে জানান, তার সঙ্গে তার বড় ভাই সৌদিপ্রবাসী আবুল কালাম মিয়ার জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে৷ এ নিয়ে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ছিল৷ রবিবার দুপুরে তিনি কাজ থেকে বাড়িতে এসে খাবার খেয়ে ফের কাজে চলে যান৷ তখন ছোট মেয়ে ‘মায়া’ একাই বাড়িতে ছিল৷ সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফিরে শোনেন মায়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷
পরে তিনি ও পরিবারের লোকজন মিলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও মাইকিং করেন৷ একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে তার ভাই আবুল কালামের বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকে মায়ার লাশ পাওয়া যায়৷ এ সময় মায়ার হাত বাঁধা ও গলায় রশি দিয়ে প্যাঁচানো এবং পরনে কাপড় ছিল না৷ পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়৷
জয়দেবপুর থানার পূবাইল পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মোবারক হোসেন আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান, পাশের বাড়ির মতিউর রহমান শিশুটির পরিবারকে জানায়, বিকেলে তিনি মনা মিয়াকে তাদের বাড়ি থেকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছেন৷ কি হয়েছে জানতে চাইলে এরিয়ে যান ধর্ষক মনা মিয়া৷
এসব ঘটনা নিহতের পরিবারের লোকজনকে জানালে তাদের সন্দেহ হয়৷ পরে তারা মনাদের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতরে শিশুটির লাশ দেখতে পান৷
পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশকে খবর দিলে রাত সোয়া ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়৷
এসআই মোবারক হোসেন আরো জানান, নিহতের গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছিল৷ ধারণা করা হচ্ছে হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ তার গালে ও শরীরে কামড়ের মতো চিহ্ন রয়েছে৷
এসআই জানান, এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেছেন৷ মামলায় তার ভাতিজা ধর্ষক রহমত উল্লা ওরফে মনা (১৮) ও তার মা-বোনকে আসামি করা হয়েছে৷ অভিযান চালিয়ে মনার মা ফজিলত বেগম ওরফে ফাতেমা (৪০) ও তার বোন নাসিমা আক্তারকে (২২) গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ধর্ষক রহমত উল্লা মনা পলাতক রয়েছে৷
নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন৷
অপরদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু (১২) ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷
১৬ মে সোমবার ভোরে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷
এ ঘটনায় চার ধর্ষকের তিনজনকে রাতেই গ্রেফতার করেছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ৷গ্রেফতারকৃতরা হলেন মোশারফ, রনি ও মান্নান৷ অপর আসামি মিজান পলাতক রয়েছেন৷ তারা উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের পূর্ব চন্দ্রা এলাকার ভাড়াটিয়া৷
নির্যাতিতার বড় বোন আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান, ১৫ মে রবিবার সন্ধ্যায় ঝড়ের আগে ওই চারজন শিশুটিকে ডেকে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন৷
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিখেল অফিসার ডাঃ মোঃ আবদুস সালাম সরকার আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে৷