বৃহস্পতিবার ● ১৯ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » খেলা » ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা : খেলা শুরু সকালে উদ্ধোধন বিকালে
৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা : খেলা শুরু সকালে উদ্ধোধন বিকালে
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: (৫জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.১০মিঃ) আগামী কাল ২০ মে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর ষ্টেডিয়াম, মিরপুর, ঢাকায় ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা- ২০১৬৷
র্দীঘ দিন বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনে বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে উঠতে নিয়ম রক্ষায় আয়োজন করা হচ্ছে ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা- ২০১৬৷
বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন সুত্রে জানা গেছে, এবারের জুডো প্রতিযোগিতায় পুরুষ ও মহিলাসহ ২৫টি জুডো দল অংশ গ্রহন করছে৷
বাংলাদেশে ফেডারেশনের অধিনে যেখানে একযুগ ধরে জুডো’র কোন জুডো খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ,প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও রেফারীদের প্রশিক্ষণ বন্ধ সেখানে জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং ২৫টি জুডো দল অংশ গ্রহন ক্রীড়াপ্রেমিদের ভাবিয়ে তোলা অমুলক নয়৷
বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনে সকল কার্যক্রম ঢাকা ভিত্তিক হওয়াতে এবং ফেডারেশনের গুটিকয়েক অতি ক্ষমতালোভী সংগঠকদের কারণে রাজধানীর বাইরে অনেক আগেই বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে বগুড়া,রাজশাহী,রংপুর,চাঁপাইনবাবগঞ্জ,যশোর,ভোলা,নোয়াখালি,শেরপুর ও রাঙামাটি জেলায় জুডো খেলার প্রশিক্ষণ বা চর্চা বন্ধ হয়ে গেছে৷
এখন কেবল মাত্র বাংলাদেশে জুডো চর্চা বা প্রশিক্ষণ করা হয় এবং জুডো দল রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি),বাংলাদেশ পুলিশ,বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিৰা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) ও বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার৷ ৬টি জুডো দলের পুরুষ ও মহিলা দল মিলে ১২টি দল হওয়ার কথা সেখানে জুডো ফেডারেশনের সুনাম ফিরিয়ে আনার ভাব দেখিয়ে ভুয়া জুডো সংগঠকরা তাদের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পরবর্তীতে কাউন্সিলর পদ ধরে রাখার জন্য নামে বেনামে জোড়াতালি দিয়ে এবারের ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতায় জুডো দলের সংখ্যা দাঁড় করিয়েছে ২৫টি যা অগ্রহন যোগ্য,সরকারী অর্থ ধংশ করা ও দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু নয়৷
এবারের ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা- ২০১৬ শুরু থেকে হ-জ-ব-র-ল অবস্থা, বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে টিম বা দল গুলিকে কোন ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে দল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়নি, জুডো ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়নি রেফারী সেমিনার বা রেফারী রিফ্রেসেস প্রশিক্ষণ, আয়োজন করা হয়নি ফেডারেশন কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন উপ কমিটি গুলির কোন সভা,ব্যবস্থা করা হয়নি রাজধানীর বাইরে থেকে আসা খেলোয়াড়,রেফারী ও সংগঠকদের জন্য খেলা চলাকালিন যাতায়ত ব্যবস্থার,খেলার ভেনু্য হবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর ষ্টেডিয়াম, মিরপুর খেলোয়াড়দের থাকার জন্য হোষ্টেল দেয়া হয়েছে ধানমন্ডি সুলতানা কামাল ক্রীড়া কমপ্লেক্সে খেলা অনুষ্ঠিত হবে ২০ মে শুক্রবার সকাল ৯.০০টায় শুরু আর এ খেলার উদ্ধোধন করবেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিরেন সিকদার খেলা শেষে বিকাল ৪.০০টায় বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়৷
১৯ মে বৃহসপতিবার সকাল ১০.০০ টায় বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের সভাপতি প্রভাবশালী, ক্ষমতাধর ও পদলোভী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এস.কে আবু বাকের ও সাধারন সম্পাদক একেএম সেলিম ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা- ২০১৬ ভেন্যু শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর ষ্টেডিয়াম, মিরপুর ঘুরে গেছেন এর আগে সকালে বিজিবি জুডো টিমের খেলোয়াড়দের দিয়ে জুডো ম্যাট সাজানো হয়৷
উল্লেখ্য,বাংলাদেশে জুডো খেলার প্রধান ও সর্বোচ্চ জুডো কর্মকান্ডে উন্নয়নে কাজ করার একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন৷ কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জুডো খেলার সাথে কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নাই এমন লোকদের দিয়ে বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের সাধারন পরিষদ গঠন করে বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রের ধারা ১.৭, ধারা ৬, ও ধারা ৭ যথাযতভাবে প্রতিপালন না করে অনেকটা নাম সর্বচ্ছ নিয়ম রক্ষার্থে মোঃ আবুল হোসেন হাওলাদার উপ পরিচালক, ঢাকা বিভাগ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও রিটার্নিং অফিসারকে দিয়ে গত ৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির গোপন নির্বাচন করেন৷ এতে সহ সভাপতি পদে ৪ জন সৈয়দা জান্নাত আরা, মোহাম্মদ ইসলাম বেবী, মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন ফকির ও রওশন অখতার ছবি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন ৷ এদের কারোরই জুডো খেলার সাথে সম্পৃক্ততা নাই, জুডো খেলা কি তার কোন অভিজ্ঞতা নাই৷
সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন একেএম সেলিম৷
যুগ্ম সম্পাদক পদে দু’জন সৈয়দ আলী আনোয়ার ও আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহ আলম এডভোকেট বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন৷ যুগ্ম সম্পাদকের মধ্যে ২য় জন জুডো খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে দাবি করলেও আজ পর্যন্ত কোন ধরনের জুডো খেলার সাথে সম্পৃক্ত এমন প্রমাণ দেখাতে পারেন নাই, জানা গেছে তার খুটির জোর বর্তমান সভাপতি এস.কে আবু বাকের৷
কোষাধ্যক্ষ বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হন মোঃ সাবি্বর আহমেদ৷
এছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত ১৪ জন সদস্য হলেন সৈয়দ আলতাফ হোসেন টিপু, মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক, বিজন বড়ুয়া, মোসত্মফা কায়ছার, এস মুস্তাকিম সবুজ, আবু আব্দুল্লাহ আল শফি, মোঃ সালাউদ্দিন ভুঁইয়া, আ ফ ম আশাফুদ্দৌলা, শেখ মঈন উদ্দিন, বিকাশ সাহা, মাহবুবা বেগম, মাসুদ রানা এরশাদ, সৈয়দা মরিয়ম তারেক ও মোঃ সাইফুল ইসলাম কালু৷
১৪ জন সদস্যদের মধ্যে একমাত্র মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক ব্যতিত বাকি ১৩ জনের কারোরই জুডো খেলার সাথে সম্পৃক্ততা নেই৷ তারা কেউ জুডো’র অর্থ কি তাও জানেন না৷
এমনিতেই গত ১০ বছর যাবত জুডো ফেডারেশনে বন্ধ্যাত্ব বিরাজ করছে৷ তার উপরে ২৭ জনের গঠিত জুডো ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে মাত্র ৪ জন প্রাক্তন জুডো খেলোয়াড় রয়েছে৷ বাকি ২৩ জন রাজনৈতিক পরিচয়ে, দুই একজন রয়েছেন বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক৷ এদের মূল উদ্দেশ্য ফেডারেশনের ব্যানারে পদ পদবী দখল করে বিদেশ ভ্রমন করা এবং ফেডারেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাক্তি স্বার্থ উদ্ধার করা ইত্যাদি৷
এধরনের অনিয়ম ও অখেলোয়াড়দের দ্বারা আরো বেশ কয়েকটি ক্রীড়া ফেডারেশন গঠন করে ফেডারেশন গুলি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে প্রাক্তন খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকদের৷ ক্রীড়া সাংবাদিকরা সব জেনেও মুখে কুলুপ দিয়ে আছেন কারণ কেউ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিরাগভাজন হতে চান বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ক্রীড়া সাংবাদিক৷
প্রাক্তন জুডো খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, রেফারী ও জুডো’র ক্রীড়া সংগঠকদের রক্তে - ঘামে গঠিত বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন কিন্তু একটি মহল সুকৌশলে কারসাজি করে রাজনৈতিক দলের নাম ভাংঙ্গিয়ে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে আসতে দেয়নি তার পরও তারা আশায় ছিলেন ৩৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতা- ২০১৬ এর গঠিত বিভিন্ন উপ কমিটিতে তাদের নাম রাখা হবে এবং মূল্যায়ন করা হবে কিন্তু বিধি বাম এবারও বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের প্রাক্তন জুডো খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, রেফারী ও জুডো’র ক্রীড়া সংগঠকদের ডাক পড়েনি৷
বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের বর্তমান কার্যনিবাহী কমিটির এধরনের সিদ্ধান্তের প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাক্তন জুডো খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি’র নেতৃবৃন্দ৷