রবিবার ● ২২ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » ৬টি স্কুলের ২৫০০ শিক্ষার্থীকে এক বছর ডিম খাওয়াবে প্যারাগন
৬টি স্কুলের ২৫০০ শিক্ষার্থীকে এক বছর ডিম খাওয়াবে প্যারাগন
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: গাজীপুরের ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আড়াই হাজার শিশু শিক্ষার্থীকে এক বছর ডিম খাওয়াবে প্যারাগন গ্রুপ৷ একই সাথে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিত্সা সুবিধা দেওয়া হবে৷
শিশুদের পুষ্টি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এ কর্মসুচীর নাম দেওয়া হয়েছে “স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম”৷
২১ মে শনিবার দুপুরে গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্যারাগন দাতব্য সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন৷
শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিফিন বিতরণ করে কর্মসুচীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত সোফি ওবরট ৷
অনুষ্ঠানের ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দারুণ অগ্রগতি করেছে৷ এখানে এসে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি৷ আমি আশা করি প্রাথমিক শিক্ষায় আরও অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হবে৷ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি, থাকব৷
প্যারাগন দাতব্য সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত সোফি ওবরট বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, এসিআই লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ডঃ ফাঃ হঃ আনসারী, এসিআই লিমিটেডের কমিউনিকেশন ও মার্কেটিং ম্যানেজার পিয়ার সিমনেট, শ্রীপুর থানা শিক্ষা অফিসার মোঃ কামরুল হাসান, শিরিরচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা বেগম, বানিয়ারচালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ ফিরোজ মিয়া, বানিয়ারচালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ৷
অনুষ্ঠানে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে বাংলার ঐতিহ্য নকশি কাঁথা উপহার দেয়া হয়৷ এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে পুষ্টিকর খাবার তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিরা৷ সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নাচ গান পরিবেশন করে৷
অনুষ্ঠানে প্যারগন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মসিউর রহমান বলেন, অপুষ্টির কারণে অনেক শিশুর স্বাস্থ্য ও মেধার বিকাশ ঠিকমত হচ্ছে না৷ প্রতিটি মানুষের যেখানে বছরে অন্ততঃ ১০৪টি ডিম খাওয়া দরকার সেখানে আমাদের দেশের মানুষ খাচ্ছে গড়ে মাত্র ৪৫-৫০টি ডিম৷ দরিদ্র পরিবারগুলোর অবস্থা আরও খারাপ৷ বাংলাদেশে এখন অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আছেন, বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানীজ আছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমও আছে৷ কিন্তু এই মুহুর্তে সমাজের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে ভবিষ্যত প্রজন্মের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিত্সা ও নিরাপদ জীবনের জন্য কাজ করা৷
মসিউর বলেন, ৫ হাজার ব্যবসায়ী যদি প্রত্যেকে ৩টি করে স্কুলের দায়িত্ব নেন তবে দেশের প্রায় অর্ধেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব৷ আর সরকার যদি বাকি অর্ধেক স্কুলের টিফিনে সপ্তাহে ২টি করে ডিম খাওয়ানোর প্রতিশ্রম্নতি দেন তবে আগামী ১০ বছরে দেশ থেকে অপুষ্টি অনেকাংশে নির্মূল করা সম্ভব৷
তিনি বলেন, প্যারাগন গ্রম্নপ গত বছর সিলেটের মৌলভীবাজারের ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু করেছিল আজ শুরু করল গাজীপুরে৷ আমাদের ইচ্ছা ক্রমান্বয়ে আরও বিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা৷ বানিয়ারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট মেটাতে শীঘ্রই ২জন শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দেন তিনি৷
মসিউর জানান, জাপানের একটি দাতব্য সংস্থা প্যারাগনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আগামী মাসের ৮ তারিখ থেকে নির্বাচিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের ডেন্টাল কেয়ার ট্রিটমেন্ট প্রদান শুরু করবে৷
প্যারাগনের স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামের অন্তর্ভূক্ত বানিয়ারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিরিরচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরগারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরগারচালা আদর্শ বিদ্যাপীঠ, আবাবিল একাডেমী এবং শিশুকানন বিদ্যা নিকেতন এর শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ফ্রান্স-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টিজের প্রতিনিধিবৃন্দ, পোল্ট্রি শিল্প উদ্যোক্তা, এনিমেল হেলথ কোম্পানীর প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন৷
প্যারাগন “স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম” এর অন্তর্ভূক্ত বিদ্যালয়গুলো হল গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা, শিরিরচালা, দরগারচালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরগারচালা আদর্শ বিদ্যাপীঠ, আবাবিল একাডেমী এবং শিশু কানন বিদ্যা নিকেতন৷
বানিয়ারচালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নূরুল ইসলাম অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন৷