বুধবার ● ২৫ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » কাউখালীতে আদিবাসী সমাজে প্রথাগত বিবাহ পদ্ধতি অক্ষুন্ন রেখে বিবাহ নিবন্ধন বিষয়ক কর্মশালা
কাউখালীতে আদিবাসী সমাজে প্রথাগত বিবাহ পদ্ধতি অক্ষুন্ন রেখে বিবাহ নিবন্ধন বিষয়ক কর্মশালা
কাউখালী প্রতিনিধি :: (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪০মিঃ) “আদিবাসী সমাজে প্রথাগত বিবাহ পদ্ধতি অক্ষুন্ন রেখে বিবাহ নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে”এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ এর আর্থিক সহযোগীতায় বুধবার ২৫মে রাঙামাটি কাউখালীর ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা প্রোগ্রেসিভ এর উদ্দ্যেগে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়৷
প্রোগ্রেসিভ সংস্থার নিবার্হী পরিচালক সুচরিতা চাকমার সভাপতিতে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঘাগড়া ইউনিয়নের চৌধুরীছড়ার কার্বারী বিমল কান্তি চাকমা৷ এ সময় কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হেডম্যান, কার্বারী ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷
কর্মশালার শুরুতেই সঞ্চালক প্রোগ্রেসিভ সংস্থার প্রকল্প কর্মকর্তা প্রয়াস চাকমা কর্মশালার উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে আদিবাসী সমাজে জাতিভেদে বিভিন্ন প্রথায় বিবাহ সম্পন্ন করা হয়৷ তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আদিবাসী সমাজের বিবাহ প্রথারও পরিবর্তন লৰ্য করা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে আদিবাসী সমাজে কিয়ং ম্যারিজ৷ তিনি বলেন, আদিবাসীদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রথাগত বিবাহ পদ্ধতিতে কোন লিখিত দলিল না থাকার কারণে পারিবারিক বিরোধ দিন দিন বেড়েই চলেছে৷ এমনকি তা আদালত পর্যন্ত গড়াচ্ছে, যার কারণে বিবাহের মত একটি সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দলিলবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বিমল কান্তি চাকমা বলেন- পার্বত্য চট্রগ্রামে বিবাহের ক্ষেত্রে আদিবাসী সমাজে নারী-পুরুষের ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা বর্তমানে সময়ের দাবি৷ আর বিবাহের ক্ষেত্রে আদিবাসী প্রথার যুগোপযোগীকরণ হতে পারে নিবন্ধন সনদ প্রদানের মাধ্যমে৷ যেহেতু পাবর্ত্য চট্রগ্রামে আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনে আদিবাসীদের প্রচলিত প্রথা ও রীতিনীতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ তাই সমাজের প্রথা পদ্ধতিগুলো অক্ষুন্ন রেখেই আমাদের এগিয়ে আসতে হবে৷ এক্ষেত্রে সার্কেল চীফ প্রধানরাও দিক নির্দেশনা দিতে পারেন, পাশাপাশি এনজিওদের ভূমিকাও থাকতে পারে৷
সভাপতির বক্তব্যে সুচরিতা চাকমা বলেন, সমাজে পরিবার গঠনের প্রক্রিয়া বা প্রথা বিভিন্ন দেশে বা অঞ্চলে জাতিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে৷ আবার কোথাও কোথাও ধর্মীয় বিধিবিধানের মাধ্যমে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে থাকে৷ বিশেষ করে হিন্দু ও মুসলিম সমাজে বিবাহ অনুষ্ঠান ধর্মীয় নিয়মে অনুষ্ঠিত হয়৷ এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, সমাজের কোন কিছু সহজে ঝেড়ে ফেলা যায়না আবার সহজে প্রচলন করাও যায়না৷ তাই সতর্কভাবে এগিয়ে যেতে হবে৷ এক্ষেত্রে শিক্ষিত যুব সমাজকে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে, যাতে সামাজিকভাবে সম্পাদিত বিবাহের ক্ষেত্রে তারা এগিয়ে আসতে পারে৷ যৌতুক, বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ রোধ করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই সচেতনভাবে এগিয়ে আসতে হবে৷ তা নাহলে আমাদের সমাজে অপসংস্কৃতি প্রবেশ করে কলুষিত করবে এবং আমাদের জীবন, সমাজ ও সংস্কৃতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিবে৷
কর্মশালায় উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামতগুলো তুলে ধরেন৷