বৃহস্পতিবার ● ২ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরের ফ্রিজারে ৪০টি ব্যাঘ্রশাবক
থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরের ফ্রিজারে ৪০টি ব্যাঘ্রশাবক
অনলাইন ডেস্ক :: ৪০টা ছোট ছোট ব্যাঘ্রশাবক সার দিয়ে শোয়ানো রয়েছে। সবক’টাই মৃত। বাঘের বাচ্চাগুলোকে ঢোকানো ছিল একটি বৌদ্ধ মন্দিরের রন্ধনশালার ফ্রিজারের মধ্যে। দীর্ঘ টানাপড়েনের বিতর্কিত মন্দিরটিতে পুলিশ তল্লাশি চালানোয় সামনে এসেছে এই ভয়ঙ্কর ছবি।
পশ্চিম ব্যাঙ্ককের কাঞ্চনাবুড়ি প্রদেশের বৌদ্ধ মন্দির টাইগার টেম্পল দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কে। শতাধিক বাঘ পোষা রয়েছে ওই মন্দিরে। উপাসনাস্থল হিসেবে যত না বিখ্যাত, তার চেয়েও বেশি করে টাইগার টেম্পলের খ্যাতি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। বহু পর্যটক ওই মন্দিরে গিয়ে বাঘের বাচ্চাকে বোতলে করে দুধ খাওয়ানোর ছবি তোলেন।
কাঞ্চনাবুড়ির টাইগার টেম্পল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বণ্যপ্রাণী পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে বহু বার। বাঘের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে কিছু প্রাচীন চিনা ওষুধ তৈরির সঙ্গেও তাদের যোগ থাকতে পারে বলে শোনা যেত।
তাইল্যান্ডের প্রশাসন ২০০১ সাল থেকেই টাইগার টেম্পলে তল্লাশি চালানোর চেষ্টায় ছিল। পোষা বাঘগুলির সঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষ ঠিক কী আচরণ করে, বন্যপ্রাণীদের নিয়ে কোনও নিষিদ্ধ কার্যকলাপ চলে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যই এই তদন্ত শুরুর কথা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ মন্দিরে ঢুকে তল্লাশি চালানো খুব সহজ কাজ নয় তাইল্যান্ডে। টানাপড়েন কাটিয়ে অবশেষে সোমবার মন্দিরে ঢুকে তল্লাশি চালায় তাইল্যান্ডের পুলিশ। তাতেই মন্দিরের ফ্রিজার থেকে ৪০টি মৃত ব্যাঘ্রশাবকের দেহ মিলেছে। বাঘের ওই বাচ্চাগুলির মৃত্যু কী করে হল, জানা যায়নি এখনও। ৪০টি বাঘের বাচ্চাকে মেরে ফেলা হয়েছিল ওষুধ তৈরির জন্য? নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে ব্যাঘ্রশাবকগুলির মৃত্যুর পিছনে? জল্পনা শুরু হয়েছে এমনই নানান প্রশ্নকে ঘিরে। ব্যাঘ্রশাবকগুলির স্বাভাবিক মৃত্যুও যদি হয়ে থাকে, তা হলে তা গোপন করে দেহগুলি রান্নাঘরের ফ্রিজারে রেখে দেওয়া হয়েছিল কেন? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
টাইগার টেম্পলে ১৩৭টি জীবন্ত বাঘও পেয়েছে কাঞ্চনাবুড়ির প্রশাসন। সেগুলিকে মন্দির থেকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ৫২টি বাঘকে মন্দির থেকে সরানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। এখনও ৮৫টি সরানো বাকি। তাইল্যান্ডের জাতীয় উদ্যান বিভাগের উপ-মহানির্দেশক আদিসর্ন নাচদামরঙ জানিয়েছেন, টাইগার টেম্পল কর্তৃপক্ষ যদি বাঘ রাখতে চায়, তা হলে নিশ্চয়ই কিছু শর্ত মেনে তাদের সেগুলি রাখতে হবে এবং এর জন্য উপযুক্ত মূল্য দিতে হবে। ৪০টি ব্যাঘ্রশাবকের মৃতদেহ মন্দিরের রান্নাঘরের ফ্রিজার থেকে উদ্ধার হওয়ার পর গোটা দেশে হইচই শুরু হয়েছে। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের কেউ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আনন্দ বাজার।