বুধবার ● ৮ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » যানজট আর ভাঙ্গা রাস্তার শহর নবীগঞ্জ
যানজট আর ভাঙ্গা রাস্তার শহর নবীগঞ্জ
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০৭মিঃ) যানজট আর ভাঙ্গা রাস্তার শহরে পরিনত হয়ে গেছে এ গ্রেডের নবীগঞ্জ পৌর শহর৷ নবীগঞ্জ পৌর শহরে প্রতিদিনই যানজটের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী ও অসহায় সাধারন মানুষজন৷ এদিকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না গাড়ীর মালিক-শ্রমিকরা৷ প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পৌর শহরের বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র স্থানে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে সিএনজি অটোরিক্স, টমটম ও মিনি বাসের অবৈধ স্ট্যান্ড৷ দেখে মনেই হয় না নবীগঞ্জ একটি এ গ্রেডের পৌরসভা৷ অথচ সমপ্রতি অনুষ্টিত পৌর নির্বাচনে বর্তমান মেয়র নানা রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে আর উন্নয়নের ফুলঝুড়ি ঢেলে ধোকা দিয়ে ক্ষতায় গিয়ে উন্নয়নের তো কোন নামই নেই বরং সাধারন নাগরিকদের উপর ৮০% পৌরকর আদায়ের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন৷ আর রাস্তায় অবৈধ দোকানপাট আর যানজট তো নবীগঞ্জের নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র৷
এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে মেইন রাস্তার উপর বড় বড় ট্রাক দাড় করিয়ে লোড, আনলোড করা হয় ধান-চালসহ বিভিন্ন পণ্য ৷ রাস্তার উভয় পাশে দাড়িয়ে থাকে সিএনজি৷ এতে প্রতিদিনই লাগছে যানজট, এতেই বাড়ছে ভোগান্তি৷ জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এটি নিরসনের দায়িত্ব কার..? এ সব দেখার কি কেউ নেই..? পৌর কতৃপক্ষ নিরব কেন.? এ সব যেন পৌর কতৃপক্ষের নজড়ে আসছেনা৷ পৌর কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নিরব ভূমিকা নিয়েও সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে৷ গেল পৌর নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত বর্তমান মেয়র যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও বাস্তবায়নের অঙ্গিকার করেছিলেন৷ পৌর সভার গাড়ী নিয়েও তত্কালীন সময়ে আলোচনা ঝড় তোলেন বিএনপির নেতাকর্মীসহ পৌর মেয়র৷ তত্কালীন সময়ে তিনি প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে ওই এসি গাড়ী চড়বেন না৷ এটাকে এ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে নাগরিকদের সেবায় নিয়োজিত রাখবেন৷ কিন্তু নির্বাচনের পরে দায়িত্ব গ্রহন করেই দিব্যি গাড়ী ব্যবহার করছেন৷ এ নিয়েও অনেক রসালো আলোচনা রয়েছে পৌর শহরে৷ এই আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই শহরে তীব্র যানজটে অতিষ্ট শহরবাসী৷ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, চাকুরীজীবি, কর্মজীবি ও পেশাজীবিসহ নাগরিকদের চরম ভোগান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে এই যানজটের কারনে৷ উপজেলা প্রশাসন যানজট নিরসনে উদ্যোগী ভুমিকা নেয়ার জন্য একাধিকবার আইনশৃংখলা মিটিংয়ে পৌরসভাকে তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও পৌর কর্তৃপক্ষেও নীরবতায় হতাশা দেখা দিয়েছে৷ সরকার দলীয় নেতাকর্মীরাও যানজটের কারনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন৷ তাদের দাবী, বিএনপির মেয়র হওয়ার কারনে, সরকারকে নিয়ে সাধারণ মানুষের বিরূপ মনোভাব তৈরী করার হীন উদ্যোশেই মেয়র যানজট নিরসনের কোন উদ্যোগ গ্রহন করছেন না৷
শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, থানার পয়েন্ট, ওসমানী রোড (উত্তরা ব্যংকের সামন), হাসপাতাল সড়কের খালিক মঞ্জিলের সামন, হাসপাতালের গেইটের নিকট, শেরপুর রোডের রাজা কমপ্লেক্স সামন, শেরপুর রোডের বাংলা টাউনস্থ ইসলামী ব্যংকের সামন, রুদ্রগ্রাম রোডের সোনার খনি-ব্রীজ পর্যন্ত, এছাড়াও শহরের নতুন বাজার মোড়, প্রায় সময়ই প্রধান সড়কের উপর দাড়ানো থাকে সাড়ি সাড়ি ছোট বড় গাড়ী ৷ এসময় পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে৷
ওপর দিকে অভিযোগ আছে, শহরে যানজটের কারন হলো এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা নিজের স্বার্থের জন্য মালবাহী ট্রাক-ট্রাক্টর দিনদুপুরে রাস্তার উপর দাড় করিয়ে মালামাল লোড-আনলোড করিয়ে থাকেন৷ এতেও যানজট ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায়৷
এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে শহরের যানজট নিরসনের জন্য একাধিকবার আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু বাসত্মবায়ন হয়নি আজও৷ মাঝে মধ্যে অভিযান হয় কিন্তু অভিযান বন্ধ হলেই যে যার মতো করে রাস্তার উপর গাড়ি দাড় করিয়ে যানজটের সৃষ্টি করে৷ গত সোমবার আইন শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে যানজট নিরসনের জন্য পৌর কতৃপক্ষকে দায়ী করেন৷
পৌর নাগরিকরা জানান, যানজট নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছেন৷ প্রয়োজনীয় কোন ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় পৌরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে৷ নবীগঞ্জ শহরকে যানজটমুক্ত করণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানান পৌরবাসী৷