বৃহস্পতিবার ● ৯ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে সানচাই নদীর সেতু ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
ঝিনাইদহে সানচাই নদীর সেতু ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার টিকারী বাজারের সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে৷ ফলে আশপাশের ৫০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ জরুরি প্রয়োজনে মানুষ বাঁশের সাঁকো তৈরী করে চলাচল করছেন৷
অভিযোগ উঠেছে নির্মাণ কাজে অনিয়ম থাকার কারণে মাত্র ২২ বছরে সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে৷ তবে এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি৷
এলাকাবাসী জানিয়েছে, ২২ বছর আগে নির্মাণ করা সেতুটি হঠাত্ ধ্বসে পড়ায় ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া- টিকারী সড়কে চলাচলকারী কয়েক গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ গত ৬ জুন সোমবার সকালে হঠাত্ করে সেতুটির মাঝের অংশ ধ্বসে পড়ে৷ এ সময় সেতুর উপর থাকা দুইজন পথচারী নিচে পড়ে আহত হন৷ বর্তমানে সেতুর পাশে বাঁশের সাকো তৈরী করে পাঁয়ে হাটা মানুষগুলো নদী পারাপার হচ্ছেন৷ সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে৷
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া-টিকারী সড়কের টিকারী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সানচাই নদী৷ এই নদীর উপর বাজারের কাছেই ১৯৯৪ সালে নির্মিত হয় একটি সেতু৷ স্থানীয় এলজিইডি বিভাগ সেতুটি নির্মাণ করে৷
যে সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে জিতড়, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, ধননঞ্জয়পুর, মুক্তারামপুর, মাড়নিব্দ, নারিকেলবাড়িয়া, টিকারী, দহখোলা, দিঘিরপাড়, লক্ষিপুর, মালঞ্চি, ব্যাংশ, বেরুইলসহ পার্শবর্তী বেশ কিছু গ্রামের মানুষ চলাচল করেন৷ ঝিনাইদহ জেলা শহর হতে নারিকেলবাড়িয়া টিকারী হয়ে মাগুরা শহরে চলে গেছে এই রাস্তাটি৷ যে কারণে ভারি যানবাহনও চলাচল করে এই সেতুর উপর দিয়ে৷ কিন্তু সোমবার হঠাত্ করে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙ্গে পড়েছে৷
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ কামাল জানান, ৭ থেকে ৮ মাস আগে সেতুটির মাঝের অংশ কিছুটা নিচু অনুভব করেন তারা৷ এই অবস্থা দেখে স্থানীয় এলজিইডি অফিসে খবর দেন৷ খবর পেয়ে তারা আসেন এবং একটি সাইনবোর্ড দিয়ে যান ভাড়ি যানবাহন চলাচল না করার জন্য৷ সেইভাবে চলে আসছিল৷ ভাড়ি যানবাহন চলাচল করতো না৷ ভ্যান, নসিমন, করিমন, বাইসাইকেল চলাচল করতো৷ মাঝে মধ্যে দুই একটি গাংরগাড়ি চলাচল করতো৷ এই অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাত্ করে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে নিচে পড়ে যায়৷ এ সময় টিকারী গ্রামের সজিব হোসেন ও দুলাল মিয়া নামের দুই পথচারী সামান্য আহত হন৷ তারা ঘটনার সময় সেতুর উপর দিয়ে পার হচ্ছিলেন৷
মাসুদ কামাল আরো জানান, এই সেতুটি অত্র এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা৷ এখন সেতুটি ধসে পড়ায় মানুষের সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ সাধারণ মানুষ কোনো মালামাল পারাপার করতে পারছেন না৷ নৌকায় করে মালামাল এপার থেকে ওপারে নিতে হচ্ছে৷ আর পথচারীদের পারাপারের জন্য জনৈক সুবোধ কুমার ভাঙ্গা সেতুর পাশে বাঁশ দিয়ে একটি সাকো তৈরী করেছেন৷ পথচারীরা পার হচ্ছেন আর পারের খরচ হিসেবে সুবোধ কুমারের হাতে কিছু তুলে দিচ্ছেন৷
সুবোধ কুমার জানান, ২২ বছর পূর্বে এই ঘাটে নৌকা চালিয়ে মানুষ পার করে তিনি টাকা উপার্জন করতেন৷ সেতু হওয়ায় সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ সেই সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় তিনি আবারো পারের পয়সা পাচ্ছেন৷ তবে এবার নৌকায় নন, বাঁশের সাঁকোয়৷
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র ঝিনাইদহ নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, ইতোমধ্যে তিনি সেতুটি দেখে এসেছেন৷ নকশা হয়ে গেছে৷ আশা করছেন যতদ্রুত সম্ভব ওই স্তানে নতুন সেতু হবে৷
এতো অল্পদিনে পুরানো সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যে ধারণ ক্ষমতা নিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি লোড নিয়ে গাড়ি চলাচল করেছে সেতুর উপর৷ মানুষের চাহিদার প্রয়োজনে এটা হয়েছে৷ আর তাই সেতুটি অল্পদিনে ভেঙ্গে পড়েছে৷