শনিবার ● ১১ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রধান শিক্ষক রবিউলের স্বীকারোক্তি : অতঃপর মুচলেকা দিয়ে মুক্ত
প্রধান শিক্ষক রবিউলের স্বীকারোক্তি : অতঃপর মুচলেকা দিয়ে মুক্ত
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৪০মিঃ) মাটিরাঙ্গা গোমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (সপ্রাবি) প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল আলমকে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের মালামাল চুরি করে পাচারের সময় জনতা কর্তৃক আটকের বিষয়টি প্রমাণিত সত্য ৷
কেননা ঘটনার দিন বিকালে মাটিরাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ আলী ও সাধারন সম্পাদক কীর্তি ভূষণ ত্রিপুরা-শিক্ষক রবিউল(চোর)এর বিষয়টি হস্তক্ষেপ করলে রবিউল উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে নিজেকে দোষি তথা সরকারী সম্পদ চুরি ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন এবং নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা চান৷ এ সময় রবিউলের সাথে সাথে শিক্ষক প্রতিনিধিরাও তাকে এ বারের মতো ক্ষমা করার অনুরোধ জানান উপস্থিত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে৷
এ বিষয়ে জনতার পক্ষে মো. শাহজাহান মেম্বার জানান,শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ শিক্ষক প্রতিনিধিরা অনুরোধ জানালে রবিউলের চাকরি ও সন্তানাদির ব্যাপারে মানবিক দৃষ্টিকোনে বিবেচনার বিষয়টি উঠে আসে৷ এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ পুনরায় এই ধরণের কাজ না করার শর্তে একটি মুচলেকা বা অঙ্গিকার নামার প্রদানের প্রস্তাব করলে রবিউল (চোর) সম্মত হয়৷ অঙ্গিকার নামা সম্পাদিত হওয়ার মধ্যদিয়ে তাকে আটককৃত অবস্থা থেকে মুক্তি দেয়া হয়৷
এ দিকে বিষয়টি নিয়ে তিক্ততা প্রকাশ করে জনতা অভিযোগ করেন,খাগড়াছড়ি জেলার চলমান শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে ? তারা জানতে চায়, শিক্ষক কোন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হলে তা বিচারের আওতায় আনতে সর্বপ্রথম কাকে জানানো প্রয়োজন ? শিক্ষক সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়না কেন ? তারা আরও বলেন,মাটিরাঙ্গার শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ লাল দেবনাথ কি কি ধরনের দায়িত্ব পালন করতে সামর্থ্য রাখেন ? তিনি কি আদৌ কোন শিক্ষকের অভিযোগ নিয়ে কাজ করার এখতিয়ার রাখেন কিনা ? যদি রাখেন তাহলে এ বিষয়ে তিনি দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন কিনা জানতে চান ? কেন বললেন এই বিষয়ে আমার কিছু করার নাই আপনারা যা খুশি তা করেন ? তাহলে কি আমরা ভাববো রবিউলের হাত শিক্ষা অফিস অথবা অফিসারের চেয়েও লম্বা ৷
অন্যদিকে, মুচলেকা দিয়ে মুক্তির পর খাগড়াছড়ির প্রকাশিত একটি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবাদে রবিউলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেন, গোমতির স্থানীয় জনতা ৷ তিনি চুরির দায়ে জনতার হাতে আটকের বিষয়টি সত্য উল্লেখ করে তারা রবিউলের দেয়া মুচলেকার একটি কপি এই প্রতিনিধিকে সরবরাহ করেন৷ তাছাড়া তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীকে কু-চক্রি মহল আখ্যায়িত করেছেন এবং সত্য ঘটনাকে পরিকল্পিত ঘটনা বলে মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেছেন যা কাম্য নয়৷
এ দিকে মো. তাজুল ইসলাম-ড্যান্টিষ্ট মাটিরাঙ্গা ও (পুরাতন ভবনের মালামাল ক্রয়ের নতুন ক্রেতা ) জানান, তিনি মো. রবিউল আলমের কাছ থেকেই ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মালামালগুলি কেনেছেন ৷ অথচ নিলামের মূল গ্রহিতা ”মেসার্স জাহাঙ্গীর আয়রন মার্ট, চট্টগ্রাম” ৷ মালামালের নতুন ক্রেতা মো. তাজুল ইসলাম বলেন মেসার্স জাহাঙ্গীর আয়রণ মার্ট,চট্টগ্রামকে তিনি চেনেন না৷
স্থানীয়দের দাবী প্রায় ৯ মাস পূর্বে নিলামকৃত মালামাল নিলাম প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে গেছে ৷ এখন রবিউল যা মাটিরাঙ্গা ড্যান্টিষ্ট তাজুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেছেন তা স্কুলের নিজস্ব সম্পত্তি ৷
এ বিষয়ে গোমতি সপ্রাবি পরিচালনা কমিটির সভাপতি এনামুল হক আলীম ও গোমতির ইউপি চেয়ারম্যান ফারম্নক হোসেন লিটন জানান,দোষ স্বীকার ও মুচলেকা প্রদান করায় এবারের মতো ৰমা করা হয়েছে শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় ৷
প্রকাশ থাকে যে, মাটিরাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় গত ৩০/০৮/২০১৫ খ্রি: তারিখের স্মারক নং-উশিঅ/মাটি/খাগড়া/১৫/৪১২ মূলে ১২/০৩/২০১৫খ্রি: তারিখে জেলা নিলাম কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সূত্র: নং- জেপ্রাশি অ/খাগড়া/ ৯০৩/১৬, তারিখ: ০৫/০৮/২০১৫ মূলে প্যাকেজের আওতায় ০৪ (চার) টি বিদ্যালয়ের (বলিচন্দ্র পাড়া সপ্রাবি, হেমেন্দ্র হেডম্যান সপ্রাবি, গোমতি সপ্রাবি ও গড়গড়িয়া সপ্রাবি) মালামাল সমূহ নিজ দায়িত্বে অপসারনের নিমিত্ত ”মেসার্স জাহাঙ্গীর আয়রন মার্ট, চট্টগ্রাম” বরাবর কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছিল৷