বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » বাংলাদেশে নতুন ২১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণির সন্ধান
বাংলাদেশে নতুন ২১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণির সন্ধান
সিএইচটি মিডিয়া ডেস্ক :: ১৫ বছরে বাংলাদেশে ২১ প্রজাতির নতুন স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণির সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন এক জরিপে এই তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)-এর উদ্যোগে গত বছর ‘আপডেটিং স্পেসিস রেড লিস্ট অব বাংলাদেশ’ শিরোনামে পরিচালিত এক জরিপে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মোস্তফা ফিরোজ এই জরিপ কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০ জুন বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশে দেখতে পাওয়া এই প্রাণিগুলো হলো: সাধারণ পিপিস্ট্রেল বাদুড়, ভারতীয় বৃত্তাকার পাতা বাদুড়, কোঁচকানো ঠোট যুক্ত লেজ ছাড়া বাদুড়, লিস্ট লিফ-নাকের বাদুড়, ভোরের বাদুড়, লেজার ফলস ভ্যামপায়ার বাদুড়, কুকস ইঁদুর, অ্যাডওয়ার্ড ইঁদুর, হিমালয়ের ইঁদুর, সাদা দাঁতের ইঁদুর, লালা গেছো ইঁদুর, লালা গলার মর্টেন, বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, হিমালয়ান ডোরাকাটা কাঠ বিড়ালি, ইন্দো-প্রশান্তীয় কুঁজো ডলফিন, ইন্দো-প্রশান্তীয় বোতল নাকের ডলফিন, প্যান-ট্রপিক্যাল ছোপযুক্ত ডলফিন, রুক্ষ দাঁতওয়ালা ডলফিন, ফলস-কিলার তিমি, স্পার্ম তিমি ও ব্রাইডস তিমি। এছাড়া, এই জরিপে তিনটি স্তন্যপায়ী প্রাণির নাম ওঠে এসেছে।
যেসব প্রাণি এখন আর বাংলাদেশে দেখা যায় না। এগুলো হলো: ধূসর নেকড়ে, ডোরাকাটা হায়না ও স্লোথ ভাল্লুক বা অলস ভাল্লুক। এর মধ্যে অলস ভাল্লুক দেখা যায় না ৭০ এর দশক থেকেই। ধূসর নেকড়ে ও ডোরাকাটা হায়না বিলুপ্ত প্রায় ১০০ বছর ধরে।
মোস্তফা ফিরোজ জানান, ধূসর নেকড়ে ও ডোরাকাটা হায়না আমাদের ‘লাল তালিাকায়’ ছিল না। ২০০০ সালে যেখানে বিলুপ্ত প্রাণিগুলোর নামে উল্লেখ করা হয়। তবে এখন সেই তালিকা আপডেট করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুয়ায়ী, বাংলাদেশে ১৩৮ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণি রয়েছে। এর মধ্যে ১১ প্রজাতি বর্তমানে বিলুপ্ত।
বিদ্যমান স্তন্যপায়ীদের মধ্যে ১৭ প্রজাতি হুমকির গুরুতর মুখে আছে, ১২ প্রজাতি হুমকির মুখে এবং ৯ প্রজাতি অসুরক্ষিত পর্যায় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘লাল তালিকা’র মাধ্যমে বোঝানো হয়, প্রাণিগুলোর বিলুপ্তির আশঙ্কা। ওইসব প্রাজাতিগুলোর দরকার সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকার।
প্রাকৃতিকভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন, বনের বাস্তুসংস্থান প্রক্রিয়া বিনষ্ট এবং বনে মানুষের অনুপ্রবেশকেই প্রাথমিকভাবে প্রাণি বিলুপ্তির সাধারণত কারণ হিসেবে ধরা হয়।
আইইউসিএন ২০০০ সালে রেড লিস্ট অব ফাউনা স্পেসিস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক প্রতিবেদনে পাঁচটি বিভাগে ৮৯৫টি বন্য প্রজাতির নাম প্রকাশ করে। পাঁচটি বিভাগ হলো: স্তন্যপায়ী, পাখি, উভচর, মাছ ও সরিসৃপ।
ওই তালিকায় বলা হয় গাঙ্গেয় ঘড়িয়াল, নোনা পানির কুমির, হুলোক গিবন বানর, ফেয়ার্স পাতা বানর, রিঠা মাছ, পাঙ্গাস মাছ ও বাঘা আইড় মাছ মারাত্মক সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। নতুন ‘লালা তালিকায়’ আরও দুটি জাতের প্রাণি প্রজাপতি ও কবচা (শামুক, কাঁকড়া ও চিংড়ি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মহা বিপন্ন প্রজাতি
রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতা, মেঘলা চিতা, এশীয় হাতি, হুলোক গিবন বানর, লম্বা লেজের ম্যাকাউ বানর, ফেয়ার্স পাতা বানর, মালয়ান সূর্য ভাল্লুক, ভারতীয় প্যানগোলিন, চীনা প্যানগোলিন, ইউরেশীয় ভোদড়, মসৃণ ভোদড়, গৌড়, সাম্বা হরিণ, বরা হরিণ ও হিমালয়াল ডোরাকাটা কাঠবিড়ালি।
এর মধ্যে ২৮ প্রজাতি মাংসাসী প্রাণি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এছাড়া ৭টি প্রজাতি রয়েছে মারাত্মক বিপন্নের তালিকায়।
বিপন্ন প্রজাতি
বনগরু, শুকুর লেজি বানর, সাধারণ লেঙ্গুর, আসামি ম্যাকাও বানর, ক্যাপেড লাঙ্গুর, আওয়াজ করা হরিণ, এশিয়াটিক বণ্য কুকুর, মাছ ধরা বিড়াল, ভারতীয় খরগোশ, বেঙ্গল স্লো লরিস, ছোট নখেড় ভোদড় ও রঙিন উড়ন্ত কাঠবিড়ালী।
অসুরক্ষিত প্রজাতি
নদীর শূশুক, ছোট লেঝের মেকাও বানর, দেশি শিয়াল, এশিয়ান সোনালী বিড়াল, হলুদ ঠোটের নকুল, মুখোশওয়ালা গন্ধগোকুল, মালয়ান বড় কাঠবিড়ালি।