শনিবার ● ২৫ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » খাদ্যে বিষ প্রয়োগ অপরাধ চলছেই
খাদ্যে বিষ প্রয়োগ অপরাধ চলছেই
পলাশ বড়ুয়া :: (১১ আষাঢ় ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.০৬মিঃ) স্বাস্থ্য শুধু অধিকার নয়। এটি মানুষের একটি মৌলিক অধিকারও। এই খাতটিকে তাচ্ছিল্যের অর্থই হলো জাতির সর্বনাশ ডেকে আনা। আজকে বিষাক্ত আম খেয়ে যে শিশুটি রুগ্ন হয়ে পড়ছে, সে জাতির জন্য বোঝা বৈ আর কিছুই নয়। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এটা বড়ই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।
খাদ্যে বিষ মেশানোর মাধ্যমে সেখানে দেখানো হয়েছে আমাদের নৈতিক অধঃপতন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। হীনব্যক্তিস্বার্থে কীভাবে জাতীয় দায়বদ্ধতা শিকেয় উঠেছে। কীভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশে ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারসহ নানা মরণব্যাধির জন্য দায়ী এসব ফল।
কেবল আমেই নয়, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, মাল্টা, আঙুর, আপেল, লিচুসহ প্রায় সব ফলেই নানা ধরনের বিষ যেমন—ফরমালিন, কার্বাইড, মিথেন প্রয়োগ করে বাজারে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এর ফলে ভোক্তাসাধারণ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন নিজেদের জীবনের বিনিময়ে। আদতে আমাদের সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় বিষ প্রয়োগের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো তার বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এদিকে চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ সময় আবার বেগুনি ও পেঁয়াজুতে কৃত্রিম রং, মুড়িতে ইউরিয়া সার মিশিয়ে রোজাদারদের সঙ্গে তামাশা করা হবে সন্দেহ নেই।
বাজারে যেভাবে বিষাক্ত ফল ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে তাতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে সরকারের উদাসীনতা ফুটে ওঠে। তা না হলে প্রায় সময় গণমাধ্যমে বারংবার প্রতিবেদন হলেও বিষমুক্ত ফলের নিশ্চয়তা মিলছে না কেন ?
এ ধরনের সংবাদ গণমাধ্যমে আসার পর দু’একদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের তোড়জোড় বেড়ে যায়। এরপর যেই লাউ সেই কদু। এর মধ্য দিয়ে আইনের চোরাগলি বেয়ে বেরিয়ে যায় সংশ্লিষ্ট অপরাধীরা। আবার শুরু হয় এদের অপতৎরপতা। বস্তুত এই প্রক্রিয়া চলে বছরজুড়েই। রহস্যজনক কারণে প্রশাসনিক নির্লিপ্ততা ছাড়া এটি সম্ভব নয়। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, এই বিষবৃক্ষের শিকড় উপড়ে ফেলার বিকল্প নেই। শুধু আর্থিক জরিমানা আদায় করে এটা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। অতি মুনাফালোভী ফল ব্যবসায়ীদের মৃত্যুদন্ড দানের জন্য সচেতন মহলের দাবির সঙ্গে আমরাও একাত্মতা প্রকাশ করছি। মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে খাদ্য কেনার জন্য, বিষ কেনার জন্য নয়। অথচ সরকারের উদাসিন্য এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের ঘুষ-দুর্নীতির কারণে সে বিষই খেতে হচ্ছে জনগণকে। এ অবস্থা অবশ্যই চলতে দেয়া যায় না।
লেখক : সম্পাদক, সিএসবি২৪ ডটকম, [email protected]