রবিবার ● ৩ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » সীমান্ত আটকে দেয়ার হুমকি ভারতের
সীমান্ত আটকে দেয়ার হুমকি ভারতের
অনলাইন ডেস্ক :: বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হলে প্রয়োজনে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত আটকে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিল ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।
গতকাল ১ জুলাই শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত এক প্রতিবাদ মিছিলে ওই হুঁশিয়ারি দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না হলে মৈত্রী এক্সপ্রেসও বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও রক্তের বিনিময়ে আমরা আপনাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই না। প্রতিদিন বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ জিনিষ চলতে পারে না। সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন বন্ধ না হলে মৈত্রী বন্ধ করে দেয়ার জন্য যা করতে হয় তা করব। সীমান্ত অবরুদ্ধ করে দেব।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ততদিন ভাল থাকবে যতদিন হিন্দুরা ওখানে ভালো থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি আজ নয়, এক দেড় বছর আগে যেদিন থেকে জামাতের আন্দোলন শুরু হয়েছে, সংখ্যালঘুদের টার্গেট করা হচ্ছে সেদিন থেকে বহু লোক সেখান থেকে চলে এসেছেন, বাকিরা চলে আসার কথা ভাবছেন। সেখানে ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আজ রাস্তায় নেমে এটা বোঝাতে চাইছি বাংলাদেশে অত্যাচারিত হিন্দুদের সঙ্গে আমরা আছি। তারা যেন সাহস রাখেন। বাংলাদেশ সরকারও যেন এ বিষয়ে সচেতন হয়।’তিনি আরো বলেন, ‘এখন ভারতে যে সরকার রয়েছে, তারা হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা শুধু বাংলাদেশ কেন, বিশ্বের কোথাও হিন্দুদের উপর অত্যাচার হলে তা মুখ বুজে সহ্য করবে না।’
দিলীপ ঘোষ এদিন বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বলবেন বলেও জানান। তিনি এদিন কমিউনিস্ট এবং এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, কিউবা বা লেবাননে কিছু হলে এখানকার কমিউনিস্ট আর বুদ্ধিজীবীরা কাঁদতে বসেন। যদিও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অকথ্য অত্যাচারের পর সবাই মুখে কুলুপ এঁটে আছেন। তৃণমূলও সেই পথেই হাঁটছে।’
বিজেপি’র সাবেক রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, ‘একসময় আমরাও তাড়া খেয়ে এ রাজ্যে এসেছিলাম। তাই আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত সবার আগে। নইলে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও তাড়া খেতে হবে।’
তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন বন্ধ করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার জন্য উদ্যোগী হওয়ার দাবি জানান।
বিজেপি এরইমধ্যে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এ নিয়ে একনাগাড়ে আন্দোলন কর্মসূচি তৈরি করেছে।
এদিকে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হত্যাজনিত ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে শুক্রবার অসমের বরাক উপত্যাকার মুসলিমদের গর্জে ওঠার ডাক দিয়েছেন অসমের গভর্নর পদ্মনাভ বালাকৃষ্ণ আচার্য। তিনি তাৎপর্যপূর্ণভাবে দাবি করে বলেন, বাংলাদেশে একনাগাড়ে হিন্দুদের হত্যা এবং হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বরাক উপত্যাকার মুসলিমরা জোরালো আওয়াজ তুলুন। তাহলেই দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো মজবুত হবে। ‘কোরআন শরীফ কোনোদিনই কাউকে হত্যার কথা বলে না। ইসলাম শান্তির কথা বলে’ উল্লেখ করে গভর্নর আচার্যের দাবি, ‘বাংলাদেশের উগ্রবাদী মুসলিমদের এটা বুঝিয়ে দিতে এখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমরা প্রতিবাদে গর্জে না উঠলে সম্প্রীতির কোনো প্রভাব পড়বে না। সূত্র :রেতে।