বৃহস্পতিবার ● ১৪ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » ঝিনাইদহের বকুল এখন বেকারদের আদর্শ
ঝিনাইদহের বকুল এখন বেকারদের আদর্শ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের মহসিন আলী বকুল একটি আদর্শের নাম৷ কেউই এক লাফ আকাশ ছুতে পারে না৷ তার জন্য প্রয়োজন হয় সততা, পরিশ্রম, ধৈর্য ও একাগ্রতা৷ শুরু সেই ১৯৯২ সালে মাত্র ১০,০০০ টাকা ও অন্যের জমি লিজ নিয়ে৷ আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বকুলের৷
বর্তমানে ১২০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন বকুল মত্স্য খামার৷ তার মত্স্য খামারেই এখন কয়েক’শ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন৷ অন্যদিকে বকুলের এই পরিবর্তনে অনেকেই এখন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন৷
এলাকাবাসী জানান, ঝিনাইদহ শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে কোটচাঁদুপর উপজেলার প্রত্যন্ত অজপাড়া-গাঁ পাঁচলিয়া গ্রামে অনাবাদী জমিতে মাছ চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন মহসিন আলী বকুল৷ আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করে চাকুরীর জন্য ধর্ণা না দিয়ে ১৯৯০ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে মাছ, গরু ও মুরগী পালনের উপর তিনটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন৷
এরপর ১০,০০০ টাকা ও মাত্র ৫ বিঘা লিজের জমি৷ এখন মত্স্য খামারের পাশাপাশি পুকুর পাড়ে ২০১২ সালে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি বকুল ডেইরি ফার্ম৷
তারপর পর্যায় ক্রমে ২০১৪ সালে বকুল অটো রাইচ মিল এবং ২০১৫ সালে বিনোদন কেন্দ্র বকুল সিটি পার্ক গড়ে তোলেন৷ এ সকল প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে এ এলাকার ৪৫০ জন যুবকের৷ এখন রেষ্টহাউজ, ক্যান্টিন, চিড়িয়াখানাসহ সবই আছে এখানে৷
দর্শনার্থীরা জানান, রাস্তার উন্নয়ন এখনই দরকার ৷ তাকে দেখে অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন এখন এই মাছ চাষে৷ এসব বেকার যুবকদের নিজ উদ্যোগের পাশাপশি সরকারও একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে এমনটিই এখন আশা৷
সিটি পার্কের চেয়ারম্যান বকুল ও বকুলের স্ত্রী শামীম আরা হ্যাপী বলেন, বকুল প্রথমে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ শুরু করেন৷ বর্তমানে ১২০ বিঘা জমির উপরে ২০টি পুকুর রয়েছে বকুলের৷
সিটি পাকের্র পরিচালক মহসিন আলী বকুল জানান, তার খামার এলাকায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করলেও খামার পরিচালনা করতে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে৷ রাস্তা মেরামত না করায় এখানকার মাছ বাজারজাত করতে অসুবিধায় পড়তে হয় প্রতিনিয়ত৷ অনেক সময় মাছ পঁচে যায়৷
লেখাপড়া শিখে চাকুরীর দিকে না ঝুঁকে মাছ চাষ করে মহসিন আলী বকুল যা করেছেন তা শুধু ঝিনাইদহে নয় সারা বাংলাদেশের মডেল হয়ে থাকবে৷