সোমবার ● ১৮ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে সারাক্ষন কাঁদছেন মা বিলকিস
মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে সারাক্ষন কাঁদছেন মা বিলকিস
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: নিজ মেয়ের ছবি বুকে জড়িয়ে সারাক্ষন কেদে কেদে বেড়াচ্ছেন মা বিলকিস খাতুন৷ এতোদিন হয়ে গেল মেয়ের খুনিদের ধরতে পারলো না পুলিশ৷ এই দুঃখের কথা আর কার কাছে বলবো৷ কে আমার মেয়ের হত্যার বিচার করবে ? এই বলে সারাক্ষন চোখের পানিতে বুক ভাসায় বিলকিস৷
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ওয়াড়িয়া গ্রামের স্কুলছাত্রী মিম খাতুন হত্যাকান্ডের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ৷ এমনকি হত্যার মোটিভ ও ক্ল রয়ে গেছে অজানা৷ তদনত্মকারী কর্মকর্তারও এ বিষয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে৷
এদিকে দীর্ঘ সময়ে এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় হতাশ হচ্ছেন নিহতের পরিবার৷ হত্যাকারীদের শাসত্মি ও মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত নিহতের পরিবার৷
জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের ওয়াড়িয়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের মেয়ে মিম খাতুন ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর নিহত হন৷ তাকে অপহরনের পর পাশবিক নির্যাতন করে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে৷ আগের দিন সন্ধায় মিম প্রতিবেশী হুজুর আলীর বাড়িতে মিলাদ শুনতে বাড়ি থেকে বের হয়৷ মিলাদ শেষে বাড়িতে ফিরে না আসলে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মিমের বাবা মা৷
পরদিন ৩১ অক্টোবর দুপুরে গ্রামের চিত্রা নদীর পাড়ে একটি মেহগনি বাগানে মীমের মরদেহ খুঁজে পায় তার স্বজনরা৷ মিম কোটচাঁদপুরের ধোপাবিলা হাই স্কুলের ৭ম শ্রেনীতে পড়তো৷
নিহতের বাবা ইকবাল হোসেন জানান, মিম হত্যাকান্ডের বিষয়ে গত ১৩ই ডিসেম্বর ঝিনাইদহ বিজ্ঞ আমলি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন৷ মামলা নং ৭২৭/১৫৷ এর আগে আদালতে করা মামলার আসামীরা আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে রাজু নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধির নামে থানায় মামলা সাজায়৷ পরে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমার মেয়েকে গ্রামের কিছু সন্ত্রাসীরাই হত্যা করেছে৷ এ জন্য আমি আবার আদালতে মামলা করি৷
তিনি অভিযোগ করেন, ওয়াড়িয়া গ্রামের খেদেরের ছেলে ইজাজুল, খায়রুলের ছেলে বিল্লাল হোসেন, আতিয়ারের ছেলে নাগর ও আব্দুল কাদেরের ছেলে ইমান আলীসহ আরো অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে৷
এ সব আসামীর নামে আদালতে মামলা করার পর থেকেই তারা পলাতক রয়েছে৷ ইকবাল হোসেন বলেন, তারা জড়িত না হলে গ্রাম ছাড়লো কেন ?
তিনি বলেন, এতো বড় সত্য ঘটনার পরও আমি গরীব বলে দীর্ঘ সময়েও পুলিশ এই হত্যাকান্ডের কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি৷ হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত আসামিদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে না৷ মিমের পরিবার অভিযাগ করেন, মোটা অংকের টাকা লেদদেন হওয়ায় পুলিশ আসামীদের বাড়িতে যাচ্ছে না৷
মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে আসামীদের সখ্যতা থাকায় মিম হত্যা ধামাচাপা পড়ে আছে৷ মামলার নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন জানান, মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে৷ আমার হাতে মামলাটি আসার পর হত্যার প্রকৃত ঘটনা উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি৷