বৃহস্পতিবার ● ২১ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » জেএমবির প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অভিযান: দক্ষিণাঞ্চলের আমিরসহ আটক ৪
জেএমবির প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অভিযান: দক্ষিণাঞ্চলের আমিরসহ আটক ৪
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৬ শ্রাবল ১৪২৩ বাংলা: েবাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪৭মিঃ) গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দক্ষিণাঞ্চলের আমিরসহ চার জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব৷ এসময় অস্ত্র, গুলি, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও বোমা তৈরির সরঞ্চাম উদ্ধার করা হয়েছে৷
২১ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোরে র্যাব-১ এর সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করেন৷
গ্রেফতাররা হলেন- জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলের আমির মাহমুদুল হোসেন তানভির (২৭), আশিকুল আকবর আবেশ (২২), নাজমুল সাকিব (১৯) ও শরিয়ত উল্যাহ শুভ (১৯)৷ মাহমুদুল হোসেন তানভির যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে র্যাব সূত্র জানিয়েছে৷
র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর একটি দল টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার মোক্তারবাড়ি সড়কের প্রবাসী আবু আহমেদের (জেসমিন আক্তারের) বাড়ির ছয়তলা ভবনের ৪র্থ তলায় অভিযান চালায়৷ এসময় সেখান থেকে সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা ও জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলীয় আমির মাহমুদুল হাসানকে আটক করা হয়৷ তিনি সেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন৷ উপপরিদর্শক ইব্রাহিম হত্যা ও হোসেনী দালানে বোমা হামলায় যারা সম্পৃক্ত ছিল এবং যারা ইতোমধ্যে এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তারা সবাই তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে জানা গেছে৷
এ ছাড়া রংপুরের প্রাইম মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র আশিকুল আকবর আবেশকে আটক করা হয়৷ তিনি জেএমবি সদস্যদের প্রাথমিক চিকিত্সা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দিতেন৷ তার পরিকল্পনা ছিল আহতদের চিকিত্সার জন্য মেডিকেল স্টোরের মতো একটি বিভাগ করা৷ যাতে আহতদের চিকিত্সা দেয়া যায়৷ এ ঘটনায় এমএম কলেজের রসায়ন বিভাগের ছাত্র শরীয়ত উল্লাহ শুভ ও মাদরাসা শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিবকে আটক করা হয়েছে৷ শুভ সফটওয়্যারের উপর বিশেষ পারদর্শী৷ তিনি বিভিন্ন অ্যাপ ও সফটওয়্যার ব্যবহার করে যোগাযোগ করতো৷ আটককৃতরা র্যাবের নিখোঁজ তালিকায় রয়েছে কিনা তা যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে এবং তাদের সাথে আর কারা জড়িত তাদের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে৷
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাধারণত ৭ থেকে ৮ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ এতে অস্ত্র চালনা, বোমা তৈরি এবং শারীরিক কসরতের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো৷ রাজধানীতে বাসা ভাড়া নিয়ে নজরদারি এবং কড়াকাড়ি থাকায় তারা রাজধানীর পাশে আস্তানা গড়ে তোলে৷ আটককৃতরা এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলেও জানান তিনি৷
এদিকে র্যাবের অভিযানের খবরে শত শত এলাকাবাসী ভিড় করে প্রবাসী আবু আহমেদের বাড়ির পাশে৷ আটককৃতরা ঈদের কয়েকদিন আগে ওই বাড়ির ৪র্থ তলার ফ্লাটটি ভাড়া নেয়৷
উদ্ধারকৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ, জিহাদি বই, বিস্ফোরক দ্রব্য, বেশ কিছু বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম৷
অভিযানে ওই বাড়ি থেকে আটটি বোমা, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, শতাধিক রাউন্ড গুলি, দুটি কুড়াল, আটটি চাপাতি ও ছুরি, বেশ কিছু উগ্র মতবাদের বই ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে মুফতি মাহমুদ খান জানান৷ গুলশান ও শোলাকিয়ায় সামপ্রতিক জঙ্গি হামলার জন্য পুলিশ জেএমবিকে দায়ী করে আসছে৷ ওই দুই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷