রবিবার ● ৩১ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » হরিণাকুন্ডুতে আবারো দুই মহিলার কঙ্কাল চুরি
হরিণাকুন্ডুতে আবারো দুই মহিলার কঙ্কাল চুরি
ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বলরামপুর গ্রাম থেকে খবর খুড়ে আবারো দুই মহিলার কঙ্কাল চুরি হয়েছে৷ এ নিয়ে ১৯ দিনের ব্যবধানে ৮ ব্যক্তির কঙ্কাল চুরি হলো৷ এতে গ্রামে গ্রামে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে৷ একের পর এক লাশের কঙ্কাল ও হাড়গোড় চুরি হওয়ায় গ্রামে গ্রামে আতংক বিরাজ করছে৷
৩১ জুলাই রবিবার বিকালে সরেজমিন দেখা গেছে বলরামপুর গ্রামের সরোয়ার মন্ডলের স্ত্রী হামিদা খাতুনের কবর খুড়ে হারগোড় দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে৷
হামিদা খাতুন গত ১ মে ক্যন্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন বলে তার স্বামী সরোয়ার মন্ডল জানান৷ এদিকে একই গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী আনেছা খাতুন গত ১৭ রমজানে সাপে কেটে মৃত্যু বরণ করেন৷ তার কবর থেকেও হারগোড় চুরি হয়ে গেছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন৷ এ নিয়ে গোটা গ্রামে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে৷ প্রিয় জনের লাশের কঙ্কাল একের পর এক চুরি হওয়ার কারণে স্বজনদের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে৷
এদিকে গত জুলাই মাসে হরিণাকুন্ডুর গাজিপুর গ্রামের ৬ জনের কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হলেও পুলিশ এখনো এই চক্রকে ধরতে পারেনি৷ দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্য নিয়েও জনমনে নানা শংকা দেখা দিয়েছে৷ হরিণাকুন্ডুর তাহেরহুদা ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে ১৯ দিনের ব্যবধানে ৬ ব্যক্তির কঙ্কাল ও হারগোড় চুরি হয়েছে৷
গ্রামবাসি জানান, ১৩ জুলাই গাজীপুর গ্রামের রমজান আলী ব্যাপারীর কবর খুঁড়ে প্রথম কঙ্কাল চুরি করে দুর্বৃত্তরা৷ এরপর পর্যায়ক্রমে একই গ্রামের নবীন মিয়া, ফজলুর রহমান, মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আলী, বুদো ও নিহাল মন্ডলের স্ত্র্রী রহিমা খাতুনের কবর থেকে চুরি করে নিয়ে যায়৷
স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল জলিল জানান, আগে রাতে চলাচল করতে ভয় পেতাম না, কিন্তুু কঙ্কাল চুরির পর থেকে একা একা সমজিদে আসতের ভয় লাগে৷
কঙ্কাল চুরি হওয়া রমজান আলীর ছেলে হামিদুল ইসলাম হামিদ জানান, তার বাবার কবর থেকে কে বা করা কংকাল চুরি করে নিয়ে যায়৷ এরপর গত ২৬ ও ২৭ জুলাই পর্যায়ক্রমে একই গ্রামের আরো ৫ দিনের কবর খুড়ে হাড়গোড় তুলে নিয়ে যায়৷
নবীন মিয়ার মেয়ে শিলা খাতুন জানান, তার বাবাকে ৬ বছর আগে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখে সন্ত্রাসীরা৷ এক মাস পর পুলিশ গলিত লাশ উদ্ধার করে৷ বাবার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করি৷ তিনি আরো জানান, মাঝে মধ্যে বাবার কবর জিয়ারত করতে সেখানে যেতাম৷ কঙ্কাল চুরি হওয়ার পর আমরা চরম ভাবে ক্ষুদ্ধ ও মর্মাহত৷
একের পর এক কবর থেকে লাশ চুরি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে৷ তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনজুর আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি৷ আমি নিজেও গাজীপুরের কবরাস্থানে গিয়ে ঘটনাটি দেখে এসেছি৷
এ নিয়ে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে৷ হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন জানান, আগের কবরগুলো আমি দেখেছি৷ সেগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে হয়তো স্বজনরা মনে করছে লাশের কঙ্কাল চুরি হয়েছে৷ বিষয়টি সত্য নাও হতে পারে৷ রোববার ভোর রাতে বলরামপুর গ্রামের দুই মহিলার কবর দেখে এসে তিনি জানাতে পারবেন বলে ওসি জানান৷