সোমবার ● ১ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের ঘোষণা দিলেন চুয়েট ভিসি
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের ঘোষণা দিলেন চুয়েট ভিসি
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েটে)র হাজারো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে চুয়েট অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন ভিসি।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর আয়োজনে কয়েক
হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহনে সন্ত্রাস ও
জঙ্গিবাদ বিরোধী র্যালি, মানববন্ধন ও সমাবেশ ১ আগস্ট সোমবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চুয়েট ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। চুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এসব কর্মসূচি ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান ঘটনার ১ মাস পূর্তিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনার আলোকে পালিত হয়।
‘দেশকে ভালোবাসুন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করুন’ স্লোগানে র্যালির মাধ্যমে
কর্মসূচি শুরু হয়। র্যালিটি চুয়েট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ
করে। এরপর চুয়েটের প্রধান গেইট থেকে গোলচত্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় বিশাল
মানববন্ধন ও সমাবেশ। মানববন্ধনে ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রুখে দাঁড়াও
বাংলাদেশ’, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলায়,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ঠাঁই নাই’,
‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ঠিকানা চুয়েটে হবে না’, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ
দেশ, জাতি, ধর্ম ও মানবতার শত্রু’, ‘শান্তির ধর্ম ইসলামের
অপব্যবহারকারীদের রুখে দাঁড়াও’, ‘মানবতা ও স্বদেশ ভাবনায় সন্ত্রাস ও
জঙ্গিবাদ রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ প্রভৃতি বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত
ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে চুয়েট পরিবারের বিপুল সদস্য কর্মসূচিতে অংশ
নেয়।
সমাবেশে চুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, আমাদের হাজার
বছরের ঐতিহ্য অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। স্বাধীনভাবে মানুষ ধর্ম-কর্ম পালন
করে আসছেন। এমন সুন্দর পরিবেশকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চলছে। তারাবি নামাজ
না পড়ে, ঈদের নামাজ বাদ দিয়ে তথাকথিত ইসলাম কায়েমের নামে সন্ত্রাস ও
জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে। আল্লাহু আকবর বলে নিরীহ মানুষ খুন করছে। তাদের
উদ্দেশ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা রুখে দেয়া। সাম্প্রতিককালে
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াচ্ছে। এটা
কুচক্রীদের সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু আমরা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেব
না, রুখে দাড়াঁবোই। দেশের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ
নেতৃত্বে সারাদেশ এখন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে মুখর। চুয়েটেও আমরা
জঙ্গিবাদ রুখে দিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ বহাল রাখতে সার্বক্ষণিকভাবে
কাজ করে যাচ্ছি। গতকাল আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করেছি, তিনিও
চুয়েটের সুনাম বহাল রাখতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সরকারের
বিভিন্ন উদ্যোগ ও নির্দেশনা অনুসরণে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে
ঐক্যবদ্ধ থাকতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
চুয়েটের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন,
বাংলাদেশের মানুষ জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। চুয়েট পরিবারও এ ব্যাপারে
ঐক্যবদ্ধ। আমাদেরকে যার যার অবস্থান থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে
কাজ করে যেতে হবে। এখানে সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজমান। এটিকে ধরে
রেখে চুয়েটকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একটি মডেল হিসেবে আমরা তুলে
ধরব।
চুয়েটের জঙ্গিবাদ বিরোধী মনিটরিং সেলের সভাপতি ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন
ডীনগণের পক্ষে পুরকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো: হযরত আলী, রেজিষ্টার
(অতি:দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধানের পক্ষে
যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, প্রভোস্টগণের
পক্ষে শহীদ তারেক হুদা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রশীদ, শিক্ষক
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রহমান ভূইয়া, কর্মকর্তা সমিতির
সভাপতি ডা: মীর মুরতজা রেজা খান, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো: জামাল
উদ্দীন, ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে সৈয়দ ইমাম বাকের ও মুনতাসির
সারোয়ার প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন উপ-ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. জি. এম.
সাদিকুল ইসলাম। এতে ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ প্রসারের বিষয়ে
বক্তব্য প্রদান করেন চুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম ক্বারী
মাওলানা মো: নুরুল্লাহ।