রবিবার ● ৭ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » ঝিনাইদহের সোনিয়া রিও অলিম্পিকে
ঝিনাইদহের সোনিয়া রিও অলিম্পিকে
ক্রীড়া প্রতিবেদক :: (২৩ শ্রাবণ ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.২৪মিঃ) ৬ আগষ্ট শনিবার জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে আধুনিক অলিম্পিকের ৩১তম আসরের৷ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে ১৭দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এই ক্রীড়াযজ্ঞে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ দলও৷ গলফ, সাঁতার, শ্যুটিং, অ্যাথলেটিকস ও আর্চারি এই পাঁচটি ইভেন্টে বাংলাদেশের হয়ে সাতজন ক্রীড়াাবিদ নিজেদের সেরাটা দেওয়ার লড়াইয়ে নামবেন৷ এর মধ্যে রয়েছেন ঝিনাইদহের মেয়ে সাঁতারু সোনিয়া আক্তার৷
ঝিনাইদহ শহরের হাটখোলা বাজারে পান বিক্রি করতেন আনিসুর রহমান৷ পানের ডালা সাজিয়ে বসে থাকতেন, মাথার ওপর দিয়ে বয়ে যেত রোদ-বৃষ্টি৷ ছেলেমেয়েদের মুখে খাবার জোগাতে কী যে কষ্ট করেছেন একসময় ! এখন দিন বদলেছে৷ সেই হাটখোলা বাজারেই এখন বড়সড় মুদি দোকান দিয়েছেন আনিসুর রহমান৷ বাড়িতে উঠেছে পাকা ঘর৷ দুঃখ ঘুচেছে৷ সবই সম্ভব হয়েছে মেয়ে সাঁতারু সোনিয়া আক্তারের সুবাদে৷
প্রতিবেশীরা সোনিয়ার বাবাকে ডেকে বলত, ‘মেয়ে মানুষ সাঁতার শিখে কী হবে?’ কিন্তুু বাবা কখনোই মেয়েকে বাধা দেননি৷ ফলে কাল পরিক্রমায় সোনিয়া ঝিনাইদহের নবগঙ্গা থেকে শুরু করে মাতিয়েছেন মিরপুরের জাতীয় সাঁতারপুল৷
বড় ভাই সাঁতার শিখতেন ‘জাহিদ স্যারের’ কাছে৷ ছোট বোন সোনিয়াও বায়না ধরেন সাঁতার শেখার৷ বায়না মেটাতে ভাই বোনকে নিয়ে যান কোচের কাছে৷
২০০৩ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ডেও হয়ে বয়সভিত্তিক সাঁতার দিয়ে শুরু সোনিয়ার৷ জুনিয়রে অংশ নিয়ে ২০০৬ সালে জেতেন ১১টি সোনা, ২টি ব্রোঞ্জ৷ আর ২০১০ সালে ১১টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে ১০টিতেই জেতেন সোনা৷ এর মধ্যে ৯টিতে ছিল জাতীয় রেকর্ড৷ ঘরোয়া টুর্নামেন্টে এমন সাফল্যই তাঁকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে৷
সোনিয়া আক্তার এবার অলিম্পিকে সাঁতারের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে অংশ নেবেন৷ ঝিনাইদহের এই বিখ্যাত সাঁতারু এবারই প্রথম অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন৷
সোনিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক মিটে অংশ নেন সিঙ্গাপুরে ২০১০ যুব অলিম্পিক গেমসে, ২০১১-তে যুক্তরাজ্যের আইল অব ম্যানে অংশ নেন কমনওয়েলথ যুব গেমসে৷ এরপর সাঁতরেছেন ২০১৪ কাতার বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপ ও ২০১৫ কাজান বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে৷
সোনিয়ার বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের পাশে ভুটিয়ারগাতি গ্রামে৷ সোনিয়া ওই গ্রামেরই মাদ্রাসায় আলিম পড়ছেন৷
দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আনসারের হয়ে প্রতিদ্বনি্দ্বতা করার পরে এ বছর সোনিয়া স্থায়ী চাকরি পেয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে৷