রবিবার ● ১৪ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কালীগঞ্জে ৩০ পরিবার পানিবন্দী
কালীগঞ্জে ৩০ পরিবার পানিবন্দী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (৩০ শ্রাবণ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৫৬মিঃ) ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া মোবারকগঞ্জ সুগার মিল (মোচিক) সমবায় ফিলিং স্টেশনের সামনে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে দুইটি অটো-রাইচ মিল৷ যেখানে রাখা হয়নি কোন পয়ঃনিস্কাশনের ব্যবস্থা৷ মিলের ছাই এর কারনে পাশবর্তী খালটি ভরে যাওয়ায় সেখানে পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই৷
এতে বেজপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ৩০টি পরিবারসহ দুই টি পুকুর বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে৷ এই মিলের মালিকরা সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে সরকারি জায়গাতেই টাকা ও ক্ষমতার বলে গড়ে তুলেছেন অটো-রাইচ মিলের একাংশ৷ আর তাদের কারনেই জলাবদ্ধতায় পড়েছেন ওই এলাকার ৩০ পরিবার৷
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরিত এক অভিযোগে জানাগেছে, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বেজপাড়া এলাকার ৩০ টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন৷ অটো রাইচ মিলের মালিক নান্টু সাহা ও জহুরুল ইসলাম মিলের পাশের খালটি ছাই দিয়ে ভরে দিয়েছেন৷ খালে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারী বর্ষণে এলাকা টি তলিয়ে যাচ্ছে৷
বর্তমানে সেখানকার ৩০ পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, পাশের দুইটি পুকুরও তলিয়ে গেছে মিল মালিকদের কারনে৷ কয়েক বিঘা জমি পানিতে ডুবে ফসল নষ্ট হচ্ছে৷
ওই গ্রামের বাসিন্দা রুশিয়া, রুপভান, জাহানারা, ফুলমতিসহ একাধিক ব্যক্তি জানান এই অটো মিল দুটি চালু হবার পর থেকে একটু বৃষ্টি হলেই তাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠে যায়৷ তারা হাঁস-মুরগি,গরু-ছাগল রান্না-বান্না সবমিলিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে৷ এদিকে হত দরিদ্র মানুষের মাটির ঘর গুলি ভেঙ্গে যাবার ঝুকি রয়েছে খুব বেশি৷
বাকুলিয়া গ্রামের আলাউদ্দিন জানান, অটোমিল দু’টির কারনে তার প্রায় তিন বিঘা জমির ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ কয়ারগাছি গ্রামের আহম্মদ আলীর দুই বিঘা, বেজপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর তিন বিঘাসহ একাধিক কৃষকের জমির ধান জলাবদ্ধ হয়ে তলিয়ে গেছে৷ একই গ্রামের দিন মুজুর কুতুব উদ্দিন সাংবাদিককে বলেন, তার প্রায় দশ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে৷ দিনমজুর হাফিজুর জানান, তার বাড়িতে পানি জমে থাকায় গত দুইদিন তিনি কাজে যেতে পারেন নি৷
অপরদিকে রেজাইল করিম ও রেজাইল ইসলাম নামের দুই ব্যক্তি বলেন, তারা দুইটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন৷ কিন্তু অটো মিল দুটির কারনে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে পুকুরের মাছে ভেসে গেছে৷ এতে তাদের প্রায় ৮ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে৷ এ ঘটনায় তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকটে এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন৷
উল্লেখ্য, নান্টু সাহা প্রভাব খাটিয়ে মিলের একাংশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার উপর নির্মাণ করেছেন৷
এ ব্যাপারে শেখ জহুরুল এগ্রোফুড অটো রাইচ মিলের মালিক জহুরুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়৷ কিন্তু মোবাইলের রিং বাজলেও তিনি তা রিসিভ করেননি৷ পরে ফোনটি বন্ধ করে দেয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷
পিপা অটো রাইচ মিল-২ এর মালিক নান্টু সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি পানি সরিয়ে দেবার জন্য ১৫ জন লোক নিয়োগ করেছি৷ তারা কাজ করছে৷ লেখালেখির দরকার নেই৷ আমার ঘরে এসে চা খেয়ে যাও৷
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, আমার কাছে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ এসেছে৷ তিনি বিষয় গুলির খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন৷