মঙ্গলবার ● ১৬ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » গ্রামবাংলার অপরুপ শোভার অধিকারী কাশফুল এখন বিলুপ্তির পথে
গ্রামবাংলার অপরুপ শোভার অধিকারী কাশফুল এখন বিলুপ্তির পথে
আল আমিন মন্ডল,বগুড়া প্রতিনিধি :: গ্রামবাংলার প্রকৃতির অপরুপ শোভা ও সৌন্দর্য্যের অধিকারী কাশবন এখন আর চোখে পড়ে না ৷ কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে কাশফুল ৷ যুগযুগ পেড়িয়ে গেলেও গ্রামবাংলার নদ-নদীর ধার, ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, পুকুর, খাল-বিল, ঈদগাঁহ মাঠ ও ফাঁকা জায়গায় পথচারীদের দৃষ্টি কাটতে কাশফুলের হালকা বাতাস জেন দোলা দেয় সবার হ্নদয়কে৷ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে মানুষের হ্নদয় ছুয়ে যেত কাশফুলের সৌন্দর্য্যে৷ মনটা বেশ খুশিতে থাকত৷ খোলা আকাশে উড়ে যেত নানা প্রজাতির পাখি৷ বহুযুগ থেকে বগুড়ার গাবতলী’সহ বিভিন্ন এলাকায় রহরহ কাশফুল ফুটলেও এখন আর চোখে পড়ে না চিরচেনা কাশফুলের এমন দৃশ্যে৷ ফলে অনেকে কাশফুলকে ভুলতে বসেছে৷ তবে উপজেলার রামেশ্বরপুর, কাগইল, সোনারায়, নেপালতলী, নাড়ুয়ামালা এলাকায় কাশফুল ফুটলেও গতবছরে নেপালতলী ও সোনারায় এলাকায় কাশফুলের দৃশ্যে চোখে পড়েছে৷ সেসময়ে একটি ঈদগাঁও মাঠে কাশফুল ফুটতে দেখে সাংবাদিক আল আমিন মন্ডলের মনটা নাড়া দেয়৷ সে তত্ক্ষনিক ক্যামরাবন্দী করেন কাশফুলের এমন দৃশ্যে’কে৷ অন্যদিকে এবছরে বিভিন্ন এলাকায় কাশফুল ফুটেছে৷ তবে আইন-শৃংঙ্খলা উন্নয়নে রাস্তায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই রোধে রাস্তার দু’পাশ্বে কাশফুল কেটে পরিষ্কার করা রয়েছে এমনটায় জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল৷ তারা আরো জানান, কাশফুলসহ রাস্তার দু’পাশ্বে জঙ্গল ও আগাছা পরিষ্কার থাকলে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও সড়ক দূর্ঘটনা কমে যাবে৷ এছাড়াও গ্রামবাংলার কাশফুল গাছ শুকিয়ে ঘরের বেড়া ও ছাউনি হিসাবে ব্যবহার করা হয়৷ অল্প সংখ্যক কাশফুল চোখে পড়লেও চাহিদা রয়েছে কয়েকগুন৷ এ গাছটির এতগুন থাকার পরেও গাছ বা বাগান করাসহ সংরক্ষণ ও রক্ষার কোন উদ্যোগ নেই৷ কাগইল এলাকার কাশফুল বাগান মালিক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, আমি কাশফুল থেকে যে পরিমান গাছ পাই সে গাছ পরিবারের কাজে ব্যবহারের পরেও বাঁকী কাশফুলের গাছ শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করে প্রতিবছর বেশ লাভবান হতে পেরেছি৷ প্রতিদিন কাশফুল বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যেত৷ পাখি ও ফুল দেখে মনটা ভাল থাকে৷ তবে এবছরে জায়গা না থাকায় কাশফুলের বাগান নেই৷ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি, নদ-নদী ভরাট, পতিত স্থান ও উচু জমি হ্রাস পাওয়ায় কাশফুল কমে যাচ্ছে৷ ফলে প্রকৃতির অপরুপ শোভা দানকারী ও সৌন্দর্য্যের প্রতীক কাশবন (ফুল) এখন বিলুপ্তির পথে৷ গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ আহসান হাবিব জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে রক্ষায় কাশফুলের অবদান রয়েছে৷ কাশফুল সৌন্দর্য্যে বৃদ্ধি করে ফলে সবার মন খুশি থাকে৷ এমনকি কাশফুল একটি গুরুত্বপূর্ন গাছ বা বাগান৷ এবিষয়ে গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, কাশফুল গ্রামবাংলার শোভা দানকারী প্রিয় ফুল৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দাবিদার কাশফুল৷ উপজেলা কৃষি সমপ্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সোহরাব হোসেন জানান, কাশফুল ফাঁকা স্থানে জন্ম নেয়৷ কাশফুলের গাছগুলো মানুষের জন্য খুব উপকারী৷ গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরৰণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, ব্যক্তি পর্যায়ে কাশবন বা কাশফুলের গাছ সংরক্ষণে কৃষকদের মাঝে গনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে৷ এমনকি কাশফুল বা বাগান ব্যক্তি, সংগঠন, সরকারী দপ্তরের বনবিভাগ ও বেসরকারী পর্যায়ে সংরক্ষণ করতে জোরদার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল৷