মঙ্গলবার ● ১৬ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » আলীকদমে পোনা ক্রয়ে ভুয়া কোটেশন : বরাদ্দের টাকা মত্স্য কর্মকর্তার পকেটে
আলীকদমে পোনা ক্রয়ে ভুয়া কোটেশন : বরাদ্দের টাকা মত্স্য কর্মকর্তার পকেটে
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১ ভাদ্র ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০৪মিঃ) বান্দরবানের আলীকদমে ভুয়া কোটেশনে মাছের পোনা ক্রয় দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ৷ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে উপজেলা মত্স্য অফিসে মাছের পোনা ক্রয়খাতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পোনা ক্রয়ে বরাদ্দ দেয়৷ পোনা ক্রয়ের ক্ষেত্রে মানা হয়নি সরকারি নির্দেশনা৷ জাতভিত্তিক পোনা ক্রয় না করে নিম্নমান ও কমমূল্যের পোনা ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে৷
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘কোটেশন মতে আমরা কার্যাদেশ দিয়েছি৷ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান চাহিদামত পোনা সরবরাহ করেনি৷ অবশিষ্ট পোনা পরে বিতরণ করা হবে৷
১৬ আগষ্ট মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় মত্স্য চাষি মো. আলমগীর ও চকরিয়ার হ্যাচারী মালিক মো. ইছাহাক অভিযোগ করেন মত্স্য কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা নিম্নমানের পোনা সরবরাহকারী ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ২৫০ টাকা হরে মোট ১৪০ কেজি পোনা সংগ্রহ করে৷ যার মূল্য ৩৫ হাজার টাকা৷ এ সকল অভিযোগ খোদ আলিকদম উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা মত্স্য কর্মকর্তা (ডিএফও)’র উপস্থিতিতেই করা হয়৷ এ সময় মত্স্য পোনা বিতরণস্থলে মত্স্য চাষি, হ্যাচারী মালিক ও মত্স্য কর্মকর্তার মধ্যে তর্কবিতর্কও হয়৷
পরে অভিযোগকারীদের চ্যালেঞ্জের মুখে ইউএনও এবং ডিএফও’র নির্দেশে বিতরণের জন্য প্রস্তুত রাখা পোনার পেকেটগুলি থেকে চারটি পেকেট মাপা হয়৷ সে সময় দেখা যায় প্রতি পেকেটের ওজন দেড় কেজির স্থলে সোয়া এক কেজি পোনা পাওয়া যায়৷ সর্বসাকুল্যে ৯০ পেকেটের মধ্যে আনুমানিক ১৪২ কেজি পোন পাওয়া যায়৷ বিতরণ স্থলেই ১৭০ কেজি পোনা কম পাওয়া যায়৷
মঙ্গলবার মাছের পোনা বিতরণকালে সরেজমিনে দেখা যায় অতি নিম্নমানে ১৪২ কেজি পোনা ক্রয় করে বিতরণ করা হয়েছে৷ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যে প্রতিষ্ঠানের নামে কোটেশন দেখানো হয়েছে তার নাম “বাকলিয়া ফিসারীজ কমপ্লেক্স”৷ বাকলিয়া ফিসারীজ কমপ্লেক্স এর নামে ভুয়া প্যাডে তৈরি করে কোটেশন দেখালেও প্যাড থেকে সংগৃহিত ফোন নম্বর (০১৬৮৯৩২৪৯৯১) এ যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে নম্বরটি অব্যবহৃত নম্বর বলে মোবাইল কোম্পানী থেকে বার্তা পাওয়া যায়৷ বাকলিয়া ফিসারীজ কমপ্লেক্সের নামে তৈরি করা ভুয়া কার্যাদেশের বরাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রুই ৩০% (৯৩ কেজি), কাতলা ৩০% (৯৩ কেজি), মৃগেল ২০% (৬২ কেজি), কালিবাউস ১০% (৩৩ কেজি) ও ঘনিয়া ১০% (৩১.৪২ কেজি), সর্বমোট ৩১২.৪২ কেজি পোনা ক্রয় ও বিতরণ করার কথা৷ কিন্তু বিতরণ স্থল ইউএনও বাংলোর পুকুরে দেখা যায়, কাতলা শতকরা ১-২ শতাংশ এবং রুই শতকরা ৪-৫ শতাংশ হারে ক্রয় করা হয়৷
এবিষয়ে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল-আমিন বলেন, এধরণের কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই এবং সম্পুর্ণ পোনা একই দিনে বিতরণ করার কথা৷ কিন্তু মত্স্য কর্মকর্তা কেন এমন করল তা আমি তদন্ত করে দেখব ৷