বৃহস্পতিবার ● ৬ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » নির্বাক নরপিশাচ বদরুলের পরিবার ও তার আত্বীয়স্বজনরা
নির্বাক নরপিশাচ বদরুলের পরিবার ও তার আত্বীয়স্বজনরা
সিলেট জেলা প্রতিনিধি ::(২১ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪৯মি.) শাবিপ্রবির ছাত্র বদরুল কর্তৃক সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুঁপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করায় ঘটনায় নির্বাক নরপিশাচ বদরুলের পরিবার ও তার আত্বীয়স্বজনরা। এই (বদরুল) কুলাঙ্গার আমাদের বংশের অভিশাপ, তার মুখ আমরা দেখতাম চাই না। ৫ অক্টোবর বুধবার ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মুনিরজ্ঞাতি গ্রামে নিজ বাড়িতে এ মন্তব্য করেছেন বদরুলের চাচা আব্দুল হাই। প্রসঙ্গত এর আগে বদরুল আলমের শাস্তি চেয়েছেন তারই গর্ভধারিনী মা দিলারা বেগম। দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম মুনিরজ্ঞাতিতে পৃথক আঙ্গিনায় আলাদা বাড়িতে বাস করেন বদরুলের চাচা আব্দুল হাই। তিনি জানান, বদরুল খুব ভালো ছাত্র ছিল দক্ষিণ খুরমা মুনিরজ্ঞাতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বদরুল এসএসসি ও গোবিন্দগঞ্জ কলেজ থেকে এইচ এস সিতে খুব রেজাল্ট করে সে। এরপর ভর্তি হয় শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বাবা সৈয়দুর রহমানের খুব বড় স্বপ্ন ছিল বদরুলকে নিয়ে। ছয়মাস আগে তিনি মারা যান। পিতার মৃত্যুর পর টানা পোড়েনের সংসারের হাল ধরে রেখেছেন দর্জি দোকানী বড়ভাই নুরুল ইসলাম। ছোট দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন কৃষি কাজ করে এবং অন্যজন স্কুলে পড়ে। একমাত্র বোন ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ কলেজে স্নাতকের ক্লাসের ছাত্রী। বদরুল নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাতকের গৌবিন্দগঞ্জ আয়েজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বদরুলের কথা বলতে বলতে চাচা আব্দুল হাইয়ের চোখে পানি চলে এলো। চোখ মুছতে মুছতে তিনি বললেন, ‘‘আগে তো বদরুইল্লা ভালাই চলতো। কিন্তু তার ভিতরে যে কিতা আমরা জানতাম না। আমরা তারে খাছ দিলে পড়াত দিছলাম। সারা পরিবারের আশা-ভরসা আছিল তার উপরে। আর সে আইজ বংশের ইজ্জত মারলো। এই কুলাঙ্গারের মুখ দেখতাম চাই না। হের কথা আমরাকে আর জিগায়েন না।’’
প্রসঙ্গত, মৃত্যুপথযাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের খুরমা গ্রামে। তার বাবা মাসুক মিয়া বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমানে মাসুক মিয়া সৌদি প্রবাসী। মাতা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। তারা বর্তমানে আখালিয়া এলাকাতে বসবাস করছেন। খাদিজার এক ভাই শাহিন আহমদ চীনে ডাক্তারি পড়ালেখা করছেন। তিনি সেখানে রয়েছেন ২০১৩ সাল থেকে। আর বদরুলকে বুধবার দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহপরাণ থানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা আড়াইটার দিকে তাকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পড়িয়ে কঠোর প্রহরায় আনা হয় সিলেট জেলা আদালতে। অতিরিক্ত চীফ ম্যাজিষ্ট্রেট উম্মে সরাবন তাহুরা কাছে বদরুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বুধবার বিকালে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।