বৃহস্পতিবার ● ২২ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার আমাদের সকলের
মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার আমাদের সকলের
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: আমি একজন অতি সাধারন মানুষ, আমার নিজের সম্পর্কে ধারনাও তাই ৷
আমি জীবনের প্রথমে কর্মজীবন শুরু করি ভুমি জরিপ ও রেকর্ড বিভাগে কাউখালি(খাসখালি মৌজায়) ও লামা(চাম্বী মৌজায়) সময়কাল হচ্ছে ১৯৮১ - ১৯৮৩ সালে৷ তিন জেলার সার্কেল অফিস ছিল বর্তমান রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কার্যালয়ের ভবনটি ৷ (সেনা শাসক এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়) ভুমি জরিপের চাকুরটিা মৌসুমী হওয়াতে অনেকটা কৌশলে ভুমি জরিপের চাকুরী থেকে বের হয়ে আসি ৷ আবার তত্কালীন বিডিআর জিডি বিভাগে ১৯৮৪ সালে সরকারী চাকুরীতে যোগদান করি ৷ সে সময় পাহাড়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে পাহাড়িদের সংগঠন শান্তি বাহিনীর মধ্যে প্রতি দিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছিল ৷
রাইফেলস ট্রেনিং স্কুল বাইতুলইজ্জত থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রথম কর্মস্থল সিলেট পুর্বের বিডিআর বর্তমান বিজিবি’র ৭ ম ব্যাটালিয়নে ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বর মাসে যোগদান করি ৷
চাকুরী জীবনের শুরুতে নিজের অজান্তেই আমি জাপানি মার্শাল আর্ট খেলা জুডো খেলায় প্রশিক্ষণ নিতে থাকি ৷ ছোট বেলা থেকে মার্শল আর্ট বা আত্মরক্ষামুলক খেলার প্রতি আমার ভীষণ জোক ছিল একবার তো বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে আমার বাল্য বন্ধু কাজল বড়ুয়া (বর্তমান আমার প্রাণ প্রিয় সে বন্ধুটি আর নেই অকালে মৃত্যু বরণ করে সে) আর আমি টেকনাফ দিয়ে বার্মা (বর্তমান মায়নমার) গিয়ে ড্রাগন কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহন করি ৷
আমার ব্যাটালিয়ন সিলেট আখালিয়া থেকে বদলী হয়ে রাঙামাটি’র গুলশাখালি চলে আসলে আমাকে ও আমার বন্ধু খলা চন্দ্র ত্রিপুরাকে সেখানে সেসময় নবগঠিত ৩৩ ব্যাটালিয়নে সংযুক্ত রেখে আমাদের ব্যাটালিয়ন চলে আসে রাঙামাটিতে ৷
সিলেট থেকে আমাদের বদলী করা হয় কুড়িগ্রাম ৬ ব্যাটালিয়নে ৷ বদলী কাগজ পত্র বা ছাড় পত্র নিতে আমাদের দু’জনকে আসতে হয় চট্টগ্রামের হালিশহরে, চট্টগ্রাম থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আমরা দু’জন ট্রেনে করে চলে যাই বাহাদুরাবাদ ঘাট - ফুলছড়ি ঘাট হয়ে রংপুর, সেখান থেকে কুড়িগ্রাম পৌঁছি ৷
কুড়িগ্রাম ৬ ব্যাটালিয়নে যোগদান করার পর আমাদের দু’জনকে থাকতে দেয়া হয় ব্যারাকের বাইরে বারান্দায়, তাও আবার শৌচাঘরে যাওয়ার রাস্তায় ৷ আমাদের দেখা হতো অন্য চোখে এর মূল কারণ আমরা দু’জনই না কি পাহাড়ি৷ এজন্য আমাদের থাকার জায়গা ব্যারাকের ভিতরে নয় তাও আবার বর্থরুমে বা শৌচাঘরের কাছে ৷ জানি না বর্তমান বিজিবি’তে এধরনের বৈষম্যের অবসান হয়েছে কি না ৷ সেবার আমরা দু’জনই অসুস্থ হয়ে পড়ি ৷ মাস খানিক ব্যাটালিয়ন সদরে থাকার পর আমাদেরকে সীমান্ত এলাকায় নিজ নিজ কোম্পানীতে বদলী করা হয় ৷ আমাকে পাঠানো হয় সি কোম্পানীতে আর আমার চাকুরীতে সিনিয়র বন্ধু খলা চন্দ্র ত্রিপুরাকে এ কোম্পনীতে ৷ আমরা অবশ্য দু’জনই এক সাথে একই কোম্পানীতে বদলী চেয়ে ছিলাম কিন্তু কর্তপক্ষ আমাদের দু’জনকে একই কোম্পানীতে বদলী দেয় নাই ৷
আমরা দু’জন যার যার কোম্পানী সদরে গিয়ে যোগদান করি ৷ আমার সি কোম্পানী ছিল তখন ভুরম্নঙ্গামারীর বাগবান্ডার বিওপি’তে ৷
সীমান্ত এলাকায় আমার জীবনে একমাসের বেশী চাকুরী করার সুযোগ হয়নি ৷ এক মাসের ভিতর আমাকে ওয়্যারলেস বার্তা পাঠিয়ে ডাকা হল ব্যাটালিয়ন সদরে ৷ কুড়িগ্রামে এসে দেখি আমার বন্ধু খলা চন্দ্র ত্রিপুরা (যার গ্রামের বাড়ি রামগড় সেগুন বাগান এলাকায়)ও এসেছেন ৷
শুরম্ন হয় আনত্মঃ ব্যাটালিয়ন জুডো খেলার প্রশিক্ষণ সে বার আমরা দু’জনই স্বর্ণ পদক লাভ করি ৷ তার পর আমাদের শুরু হয় আন্তঃ সেক্টর জুডো খেলার প্রশিক্ষণ ৷ সেবার আন্তঃ সেক্টর খেলা ছিল কুমিল্লা সেক্টরের অধীনে ৷ আমি - ৬০ কেজি ও খলা চন্দ্র ত্রিপুরা - ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্বর্ণ পদক লাভ করি ৷
জুডো খেলায় ভাল ফলাফল করাতে (আমি ও খলা চন্দ্র ত্রিপুরা) আমাদের ডাক পড়ে ঢাকা বিজিবি (বিডিআর) সদর দপ্তরে৷এর ভিতর আমাকে ও খলা চন্দ্র ত্রিপুরাকে আবার বদলী করা হয় একই স্থানে (কুড়িগ্রাম) ৩০ রাইফেলস বাটালিয়নে ৷ ১৯৮৮ সালে সে সময় দেশ ব্যাপী বন্যা সে বন্যার ভিতর কিছু অংশ বাসে,কিছু অংশ রিক্সায় করে, কিছু অংশ নৌকায় আবার কিছু অংশ পায়ে হেটে শেষ পর্যন্ত মানিকগঞ্জ থেকে ইঞ্জিন বোড এ করে ঢাকা গাবতলীতে পৌঁছি ৷ আমাদের সাথে আরো অন্য টিমের খেলোয়াড় ছিল তাদের ভিতর বক্সিং এর নোমান ভাই ও হ্যান্ড বল খেলোয়াড় শিবু দার কথা মনে পড়ে ৷
ঢাকা জুডো টিমে এসে পেলাম তত্কালীন হাবিলদার গত কয়েক মাস হয় দিনাজপুর বিজিবি সেক্টর থেকে ডিএডি পদে থাকা অবস্থায় চাকুরী থেকে অবসরে এসেছেন মাহাবুব উর রহমান এর সাথে (যার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়)৷ তিনি প্রথম থেকে আমাকে যেমন শাসন করতেন তেমনি আদর করে সব ভাল মন্দ বুঝাতেন, তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের সেরা জুডো খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষক ৷
আজ পর্যন্ত কেউ পারেনি তার স্থান দখল করতে ৷ মাহাবুব স্যার ও এখন আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশনের এশিয়া অঞ্চলের টেকনিক্যাল ডাইরেক্টর ৷ তত্কালীন আইয়জা মাড়িখাওয়া স্যারের অধীনে নিয়মিত জুডো খেলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৮৯ সালে ১৩ তম জাতীয় জুডো প্রতিযোগতিায় অংশ নিয়ে - ৬০ কেজি ওজন শ্রেণীতে ৩য় স্থান অধিকার করি ৷
তার পর থেকে কেবল মাত্র ব্যাটালিয়ন ও সেক্টর টিম খেলার আগে নিজ ব্যাটালিয়নে যাওয়া ছাড়া সারা বছর ঢাকায় জুডো খেলা নিয়ে ব্যস্থ থাকাটাই ছিল আমার চাকুরীর অংশ৷ আমার কখনো জানার সুযোগ হয়নি একজন বিডিআর সদস্যর আসলে কি কি দায়িত্ব পালন করতে হয় ৷
আমি ১৯৯০ সালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট বড়গলিতে বিয়ে করি ৷
১৯৯১ সালে ডিসেম্বর মাসে ৩১ দিন ১৮ ঘন্টা ছুটি বহির্ভুত অনুপস্থিত থাকার কারণে কুড়িগ্রাম ৩০ ব্যাটালিয়ন থেকে আমাকে চাকুরীচ্যুত করা হয় ৷ (এটা ছিল আমার বিডিআর থেকে একেবারে চলে আসার কৌশল আমি এখনো আদালতের আশ্রয় নিলে আইনি লড়াইয়ে সরকার আমার চাকুরী ফেরত দিবেন)৷
এধরনের ছুটি বহির্ভুত অনুপস্থিত থাকার কারণে অনেকেই চাকুরীচ্যুত হয়েছেন আদালতের আশ্রয় নিয়ে আইনি লড়াইয়ে মাধ্যেমে আবার তারা চাকুরী ফেরত পেয়েছেন ৷
সরকারী চাকুরী থেকে চলে আসার পর আমার নিজ এলাকা ভেদ ভেদীতে মেটার্নেটি কাম ঔষদের ফার্মেসীর ব্যবসা শুরু করি ৷
স্থানীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে আমাকে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলার সাথে জড়িত করা হয় ৷ আমি অনেকটা নিরুপায় হয়ে নিজের জেলা রাঙামাটি থেকে শশুর বাড়ির এলাকায় বগুড়াতে গিয়ে সেওজগাড়ী এলাকায় বসবাস শুরু করি ৷ আমার একটা অভ্যাস ছিল সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়ার ৷
তখন উত্তরবঙ্গে দৈনিক করতোয়া ছিল পাঠকদের কাছে জনকন্ঠের চাইতে জনপ্রিয় পত্রিকা, তারিখটা ঠিক এখন আমার মনে নেই, দৈনিক করতোয়া পত্রিকা অফিসের একজন রেডিও মনিটরিং এর জন্য লোক নিয়োগ করা হবে দেখে আমি সেখানে আবেদন করি এবং আমার আগ্রহ দেখে করতোয়া পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোজাম্মোল হক লালু ভাই আমাকে শ্যামলদার সহযোগি হিসাবে নিয়োগ দেন ৷ কিছু দিন আমি পত্রিকা অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম ৷ তিন মাস পর আমি ষ্টাফ রিপোর্টার হিসাবে কাজ করার আগ্রহ দেখালে লালু ভাই আমাকে রানা ভাইয়ে সাথে কাজ করার সুযোগ দেন ৷ সে সময় খুকু - মনির সংবাদ তুঙ্গে ছিল এর ভিতর আবাস সংবাদ সংস্থায় কাজ করার সুযোগ করে দেয় এডভোকেট মৃনালদা ও মিকু ভাই ৷
১৯৯৬ সালে আমার স্ত্রীর ১৮টি জেলা হাসপাতাল উন্নয়ন প্রকল্পে চাকুরী হওয়াতে আমি বগুড়া থেকে স্বপরিবারে চলে যাই বাংলাদেশের দ্বীপ জেলা ভোলায় ৷
ভোলায় গিয়ে প্রতিষ্ঠিত করি ভোলা মার্শাল আর্ট সেন্টার, যার সভাপতি করা হয় দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শাওকত হোসেনকে ৷
সে সুবাধে আমি কাজ করার সুযোগ পাই দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকাতে ৷ প্রথমে সার্কুলেশ্যন ম্যানাজার,তার পর প্রেস ম্যানেজার, তার পর বার্তা বিভাগে এবং শেষ পর্যনত্ম দৈনিক আজকের ভোলা পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলির সদস্য ছিলাম ৷
আমি ভোলায় থাকাকালীন সময়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নিবার্হী কমিটির সদস্য ও মার্শাল আর্ট উপকমিটির সদস্য সচিব, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য, মুসলিম ইনষ্টিটিউটের সদস্য,জেলা চেম্বার অব কমার্স এর সদস্য, জেলা প্রেস ক্লাব এর সদস্য, জেলা ত্রাণ বিতরন কমিটির সদস্য (যার প্রধান ছিলেন তত্কালিন ভোলা সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বর্তমান বরগুনা জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম) ও ভোলা ক্লাবের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ৷ এছাড়া জেলার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল ৷
১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর ১৯৯৮ সালে আমি আমার স্ত্রীকে ভোলা থেকে বদলী করে নিজ জন্মস্থান রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় নিয়ে আসি, অবশ্য একাজে আমাকে সহযোগিতা করেন আমার এক বড় ভাই যিনি এখন রাজনীতি করেন সে কারণে তার নামটা আমার কাছে স্বরণ থাকার পরও লিখতে পারলাম না ৷
ভোলা থেকে নিজের জেলা রাঙামাটি আসার পর ইচ্ছে ছিল সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে নিয়োজিত রাখার, কিন্তু তত্কালীন রাঙামাটি জেলার সাংবাদিক বন্ধুদের দন্যদশা দেখার পর প্রয়াত শৈলেনদার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম আমি এ পেশায় না আসাই শ্রেয় ৷
১৯৯৮ সালের শেষের দিকে আমি রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় প্রতিষ্ঠা করি রাঙামাটি জুডো ও কারাতে এসোসিয়েশন৷ সে সময় যারা আমাকে অনেক বেশী সাহস - সহযোগিতা দিয়ে ছিলেন তারা হচ্ছেন সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, কামাল উদ্দিন, প্রয়াত নূর ঈমান, ব্যবসায়ী কাজী জামাল উদ্দীন আরো অনেকেই ৷
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ঘুনে ধরা যুব সমাজকে জাগ্রত করতে এবং নেশাগ্রস্থদের আড্ডা খানা রাঙামাটি জিমন্যাশিয়ামকে মানুষের যাতায়াতের ও খেলাধুলার উপযোগি করে তুলতে যিনি আমাকে অনেক বেশী সহযোগিতা করেছেন তিনি হচ্ছেন তত্কালীন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক আবু হায়দার সরদার (যার সত্তার কারণে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের কর্মচারীরা কোন ধরনের বিদায় অনুষ্ঠান ছাড়া রাতের আধারে রাঙামাটি ত্যাগ করতে হয়েছিল)৷ পরবর্তির্তে তিনি ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয় থেকে সচিব পদে চাকুরী থেকে অবসরে বর্তমান রাজধানীতে ধানমন্ডি এলাকায় আছেন ৷
রাঙামাটি জেলায় আমি জুডো ও কারাতে খেলাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসি ৷ আমার মেধা ও যোগ্যতার কারণে পার্বত্য চুক্তির ধারা - ১১ গ অনুযায়ী আমিসহ সাবেক গেরিলা নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা),সুজিত দেওয়ান (জাপান), মাষ্টার মৃদুল দে, তত্কালীন খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক,রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক ও বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক আরো স্থানীয় কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠকরা গঠন করি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থা ৷
প্রায় ১৪ বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার পর বুঝতে পারলাম আমি একজন বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর সদস্য৷ পার্বত্য অঞ্চলে দিন রাত পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ও নিজের মাথা ফাটিয়ে হাত ভেঙ্গে যা করছিলাম তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ৷ সন্তু বাবুদের কাছে আমার মুল্যায়ন একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে নয় কেবল মাত্র আমি তাদের কাছে একজন বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর কামলা (দিন মজুর)৷
আমার প্রবল ইচ্ছে ছিল পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি বাঙ্গালী নির্বিশেষে ক্রীড়া ৰেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে অংশ গ্রহন নিশ্চিত করা এবং আমার নিজের ক্রীড়া ক্ষেত্রে অর্জিত অভিজ্ঞতা গুলি আমার এলাকার আগামী প্রজন্মের যুব সমাজের কাছে দিয়ে যাওয়া ৷
যেখানে প্রতি মুহুর্তে রাজনৈতিক পরিচয় আর পাহাড়ি - বাঙ্গালী দেখে সব কাজের মুল্যায়ন হয় সেখানে আমি কেবল মাত্র ষড়যন্ত্রের শিকার ৷ আমি নিজে এ পর্যনত্ম ১০টির অধিক দেশে ক্রীড়া কর্মকান্ডের জন্য ভ্রমন করেছি,মার্শাল আর্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের টিমের নেতৃত্ব দিয়েছি, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসাসিয়েশনের মাধ্যমে অনেক বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করেছি, জাপান কোদোকান জুডো ইনষ্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন জুডো ডিগ্রি ও জুডো ইউনিয়ন অব এশিয়ার রেফারী লাইসেন্স অর্জন করেছি ৷ যা আমি আমার জীবদ্দশায় পার্বত্য এলাকায় দিয়ে যেতে পারলাম না ৷ আমি মারা গেলে আমার কষ্টে অর্জিত সকল ভাল আর মন্দ অভিজ্ঞতা গুলি আমার সাথে চলে যাবে ৷
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে সড়ে আসার পর বিদেশের কায়দায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ব্যবসা করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ব্যবসা ক্ষেত্রে আমি বেমানান, এখানে ব্যবসা করতে অস্বচ্ছতার আশ্রয় নিতে হয় ৷
প্রায় চার লক্ষ টাকা ব্যাংক লোন মাথায় নিয়ে বিক্রয় করে দিই আমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ৷
তার পর ভেবেছিলাম দেশের মায়া ছেড়ে একেবারে বিদেশে বন্ধুদের কাছে চলে যাব আর কখনো কোন দিন জীবিত অবস্থায় দেশের মাটিতে পা রাখবনা ৷
আমি আমার মা - বাবা দু’জনকেই হারিয়েছি ৷ স্ত্রী - পূত্র এরা নিজেরা নিজেদের মত প্রতিষ্টিত ৷ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর থেকে ক্রীড়া সংগঠক বা বন্ধুরা তেমন আগের মত আমার খোজ খবর রাখেন না ৷
সবাই ভাবেন আমার সাথে যোগাযোগ রেখে বা ফোন করে কোন লাভ হবে না তাই হয়তো নিজের আত্মীয় - স্বজনরাও মনে রাখেনি ৷
আজ আমার পছন্দের ব্যাক্তি( —-)একটি উক্তি বেশী করে মনে পড়ে ” ক্ষমতা বলে কোন জিনিস নাই, সব হচ্ছে দায়িত্ব পালন করা”৷
আমার প্রতিনিয়ত অনলাইনের ভিজিট বা অভিজ্ঞতা দেখে এক সময়ের আমার খুব প্রিয় ছাত্রী জুই চাকমা আমাকে প্রায় এক বছর আগে বলে বসে আপনার তো সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতা আছে , আপনি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল চালু করে পার্বত্য অঞ্চলের অসহায় মানুষে কথা গুলি লিখতে পারেন ৷
অনেক দেরীতে হলেও আমাদের পার্বত্য অঞ্চল মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে, ওয়ান ইলেভেন এর সেনা সমর্থিত সরকার পাহাড়ের মানুষের প্রাণের দাবি পূরণ করে গেছেন যদিও, তাদের অন্য সব কাজ গুলি আমাদের দেশের সাধারন মানুষ সমর্থন করেন না ৷
আমি আমার ভোলার ছাত্র খলিল উদ্দীন ফরিদকে দিয়ে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল করার উদ্যোগ হাতে নিই ৷ ফরিদ ঢাকায় থাকে সে সুবাধে তাকে এই দায়িত্ব দিই ৷
এক মাসের ভিতর সে আমাকে অনলাইন নিউজ পোর্টালটি করে দেয় ৷ আমি রাঙামাটি জেলার সকল সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে নিয়ে আমাদের এলাকার জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা সাংসদ ফিরোজ বেগম চিনু আপা, রাঙামাটি জেলার প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক গিরিদর্পন পত্রিকার সম্পাদক একেএম মকছুদ আহমদ, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি সুশীল প্রসাদ চাকমা ও জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে আমার নিউজ পোর্টালের উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করি ৷
যারা সেদিন আমার অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের কাছে আমি ও আমার নিউজ পোর্টালের প্যানেল সদস্যরা চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি ৷
তার পর ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর যখন বুঝতে পারলাম যে, প্রথমটি ছিল অতি সাধারন নিউজ পোর্টাল, তাই আগের প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে নতুন ভাবে আমি আমাদের নিউজ পোর্টালকে সাজালাম, এবার যুক্ত করা হয়েছে প্রতিটি সংবাদের সাথে ভিডিও ক্লিপ, অনলাইন রেডিও এবং সরাসরি টিভি ৷
আমাদের দেশের সুযোগ্য প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হিসাবে অনলাইন ভিত্তিক সাংবাদিকদের কল্যাণমুলক কাজ ও অনলাইনের মাধ্যমে প্রতিটি সংবাদ বিনামুল্যে দ্রুত জনসাধারনের কাছে পৌঁছে দেয়ার আন্দোলন যখন শুরু করেছি, রাঙামাটি শহরে আমার খুব পরিচিত জনদের ভিতর গুটিকয়েক সাংবাদিক বন্ধুরা আমার নামে ও আমার কষ্টে গড়া সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকমের বিরুদ্ধে কৌশলে অপপ্রচার শুরু করছেন একটি সিন্ডিকেট ৷
আমি খুব সহজ - সরল মানুষ তাই সহজ ভাষায় আমার বন্ধুদের বলছি, আপনাদের কোন ক্ষতি করলে সরাসরি আমার দোষের কথা আমাকে বলুন ৷ অযথা ষড়যন্ত্র করবেন না ৷ যদি আমার সাংবাদিকতার লিখনিতে অভিজ্ঞতা বা দৰতার ঘাটটি থাকলে যোগ্যতা বা দক্ষতা দিয়ে স্বনামে লিখার মাধ্যমে সমালোচনা করবেন ৷
এদেশে একজন নাগরিক হিসাবে আমি আমার পছন্দ মত পেশায় কাজ করার অধিকার দেশের সংবিধান আমাকে দিয়েছে ৷
মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব কিন্তু আমার আপনার আমাদের সকলের ৷
আপলোড : ২২ অক্টোবর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : ভোর ৫.২২ মিঃ