শনিবার ● ১৫ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » ঈশ্বরদীর রবিউল সফল সোনালী মুরগী খামারি হলেন যে ভাবে
ঈশ্বরদীর রবিউল সফল সোনালী মুরগী খামারি হলেন যে ভাবে
তৌহিদ আক্তার পান্না,ঈশ্বরদী প্রতিনিধি :: (৩০ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.১২মি.) ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী সরদার পাড়া গ্রামের হাজ্বী নকিম উদ্দিন পোল্ট্রি খামারের স্বত্তাধিকারী এস এম রবিউল ইসলাম সোনালী মুরগী পালন করে আজ একজন সফল খামারী৷ তার খামারের সোনালী মুরগীর ডিম খাওয়ার ডিম ৮ টাকা এবং বাচ্চা তোলার ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা পিচ দরে বিক্রি করছেন৷ রবিউল নিজে সোনালী মুরগী পালন করে এলাকার অন্যান্য বেকার যুবকদেরও এই মুরগী পালনে উত্সাহিত করেছেন৷ এতে এলাকায় ক্রমান্বয়ে বেকারত্ব দুর ও আর্থিক সফলতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
রবিউল ইসলাম জানান, যুব উন্নয়ন থেকে পোল্ট্রি, গবাদী পশু ও মাছের উপর তিন মাসের প্রশিক্ষন নিয়ে ভাঁড়ইমারির বসত বাড়িতেই ২০০০ সালে লেয়ার জাতের ২৫০টি মুরগী পালন শুরম্ন করেন৷ বর্তমানে তার খামারে ১৯ হাজার মুরগী রয়েছে ৷ এর মধ্যে সাদা লেয়ার মুরগী ৭ হাজার, লেয়ার মুরগী ৫ হাজার, হ্যাচিং ডিম সোনালী মুরগী ২ হাজার, রোষ্ট সোনালী মুরগী ৫ হাজার৷ গত এক বছর ধরে তার খামারে সোনালী মুরগী ডিম দিচ্ছে৷ তিনি বলেন, পাবনার ভাই ভাই হ্যাচারীর পরামর্শে ডিমের জন্য সোনালী মুরগী পালন করে অধিক মুনাফা পাচ্ছি৷ বর্তমানে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩’শ সোনালীর ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা পিচ দরে বিভিন্ন হ্যাচারীর কাছে তিনি বিক্রি করছেন৷ ডিম বিক্রির টাকা থেকে যে মূনাফা পেয়েছি তা দিয়ে বেশ কয়েক বিঘা জমি ক্রয় করেছি৷
সোনালী মুরগী চাষি রবিউল ইসলাম আরো বলেন, ইতোমধ্যে এলাকার বেকার যুবকদের নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ চালু করেছেন৷ মুরগীর বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব একটি বড় মাপের বায়োগ্যাস পস্নান্টও করেছেন৷ এতে তার নিজের পরিবারের রান্নার কাজ শেষ করে অন্য নয়টি পরিবারে সাপ্লাই দিতে পারছেন৷ এতে কিছুটা হলেও রান্নার কাজে দেশের গাছ, কাঠ বেঁচে যাচ্ছে৷ পরিবেশের ভারসাম্য রৰায়ও ভুমিকা রাখছেন৷ সহজ শর্তে কোন ব্যাংক-বীমা কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ প্রদান করলে আগামীতে একটি হ্যাচারী স্থাপন করে খামারটি প্রসারিত করার পরিকল্পনাও তার রয়েছে৷ একই সাথে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার ইচ্ছাও রয়েছে৷ বেকার যুবকদের জন্য তার পরামর্শ হলো চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ঘুরে সোনালী মুরগী চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে বেকারত্ব ঘোঁচানো সম্ভব৷ এতে এলাকার বেকারত্ব ঘুঁচবে এবং আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হবে৷ তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের সোনালী মুরগী চাষ করার জন্য পরামর্শ দেন৷
ঈশ্বরদীর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তাফা জামান বলেন, রবিউল ইসলাম সোনালী মুরগী পালন করে এখন ঈশ্বরদীর একজন মডেল খামারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন৷ তিনি সোনালী মুরগীর খামার করে ঈশ্বরদীর মধ্যে একজন সফল খামারীর খ্যাতি অর্জণ করেছেন৷ বাজারে অন্য মুরগীর ডিম ৬ থেকে ৭ টাকা পিচ দরে বিক্রি করা হলেও সোনালী মুরগীর প্রতিটি ডিম ৮টাকা এবং বাচ্চা ফোটানো ডিম ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন৷ এতে তিনি অধিক মূনাফা পাচ্ছেন৷ অন্যান্য হ্যাচারীর মালিকরা রবিউলের সোনালী মুরগীর ডিম কিনে নিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করছেন৷ রবিউলকে দেখে ওই এলাকার যুবকদের মধ্যে সোনালী মুরগী পালনের প্রতিযোগিতা শুরম্ন হয়েছে৷ নিয়মানুযায়ী খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করলে রবিউল ভবিষ্যতে ব্যাপক লাভবান হতে পারেন বলে আশা করা যায়৷