সোমবার ● ১৭ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গাবতলীতে পেঁপে চাষে ইন্না’র সাফল্য
গাবতলীতে পেঁপে চাষে ইন্না’র সাফল্য
আল আমিন মন্ডল, বগুড়া প্রতিনিধি :: (২ কার্তিক ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৫২মি.) বগুড়ার গাবতলী নেপালতলীতে শীতকালিন সবজী চাষের পাশাপাশি এবারে পেঁপে চাষে সাফল্য এনেছেন আদর্শ কৃষক ইন্না প্রামানিক ৷
সে পেঁপের জমিতে বেশী লাভের আশায় চাষ করেছে আঁদা’সহ ওলকচু সবজি৷ বয়স যখন ২৫বছর তখন থেকে যুবক ইন্না প্রাং কৃষি কাজ করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন৷ ইতিমধ্যে সে মরিচ, টমেটো, পটল, ফুলকপি, শিম চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন৷ গত ৫বছর যাবত তিনি উন্নত জাতের শাহী পেঁপে চাষ করে লাভবান হয়েছেন৷ তার পেঁপে ক্ষেত ও কলাকৌশল দেখে গাবতলীর প্রায় হাজারো শিক্ষিত বেকার যুবকেরা পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন৷ ইন্না নেপালতলী ইউনিয়নের ডি-ডওর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের পুত্র৷
এবছরে সে ৭০শতক জমিতে উন্নতজাতের দেশীয় শাহী পেঁপের চাষ করেছে৷ পেঁপের চারা, সার, ঔষধ, শ্রমিকসহ ব্যয় হয়েছে ৩৫হাজার টাকা৷ পেঁপে বাগান দাম হয়েছে ৩লক্ষ টাকা৷ তবুও সে পেঁপের বাগান বিক্রি করেনি৷ ন্যার্যমূল্যে পেলে ৪লক্ষাধিক টাকার পেঁপে বিক্রি হবে৷ তবে চুরির হাত থেকে ফলন রক্ষা করার জন্য তিনি জমিতে রাঁত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন৷
ইন্না’র এই সাফল্যের পিছনে গাবতলী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন৷ এমনকি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে নেপালতলী ইউয়িনের প্রায় ৫শতাধিক বেকার যুবক’সহ কৃষকরা সারাবছর নানা প্রকার সবজী ও পেঁপে চাষ করছেন৷
ফলে ঐ এলাকার প্রায় কৃষক এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন৷ একই গ্রামের সবজি চাষী মমিন, সেন্টু, শাহীন, জিয়াউর, ডালিম, রেজা জানান, আমাদের এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের তথ্য-পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতার ফলে আমাদের কৃষি কাজে সফলতা ও সাফল্য এসেছে৷
এ খবর পেয়ে পেঁপে বাগান দেখতে যান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহেদুর রহমান জাহিদ৷ পেঁপে চাষী ইন্না প্রাং জানান, ভবিষ্যতে সে একটি কৃষি খামার প্রতিষ্ঠা করতে চান৷ এছাড়াও এলাকার বেকার যুবকদের ভাগ্যের উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য তিনি পেঁপে চাষের আহবান জানান৷
তিনি প্রতিবেদককে আরো জানান, আমি প্রথমে ৮শতক জমিতে পেপেঁ চাষ করে লাভ হয়েছে ২৫হাজার টাকা৷ এরপর গতবছরে ৩৬শতক জমি থেকে লাভ হয়েছিল প্রায় ২লৰ টাকা৷ এবছরে ৭০শতক জমিতে পেঁপে চাষ করেছি৷ আশাকরছি পেপেঁ বিক্রি করে ৪লৰ টাকা লাভ হবে৷ এছাড়াও আমি একই জমিতে ১৮শতক জমিতে আদা ও ২২শতক জমিতে ওলকচু’র চাষ করেছি৷ এ ২টি সাথি ফসল থেকে ১লৰ টাকা লাভ আশাকরছি৷ একই এলাকার সফল নারী কৃষক নুরজাহান বেগম ও হোসনে আরা বেগম জানান, আমরা সবাই পুরম্নষদের কৃষি কাজে সহযোগিতা করে আসছি৷ এছাড়াও নোপালতলী আমতলীপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক নুরম্নল ইসলাম উজ্জল ১বিঘা, আকন্দপাড়া গ্রামের রতন ২২শতক, শাহীন ৮০শতক জমিতে পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছে৷ তবে পেঁপে চাষের পাশাপাশি ইতিমধ্যে নেপালতলী’র আকন্দপাড়া, ডওর, ডি-ডওর, আমতলীপাড়া, মমিনহাটা, মহিষবাতান ও কাগইলের মীরপুর গ্রাম এখন সবজি গ্রাম হিসাবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে৷ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইন্না একজন আদর্শ কৃষক৷ কৃষি অধিদপ্তর সবসময় তাকে সহযোগিতা করে আসছে৷ ফলে নেপালতলী ইউনিয়নে পেঁপে চাষে বিপস্নব ঘটিয়েছে৷ গাবতলী উপজেলা কৃষি সমপ্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, অন্যান্য ফসলের চেয়ে পেঁপে চাষ লাভজনক৷ ইন্না তার দৃষ্টান্ত ৷ এজন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে৷
গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার জানান, পেঁপে চাষে লাভ বেশি৷ কৃষকদের পেঁপে চাষে উত্সাহ প্রদান করা হচ্ছে৷
এজন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাগন কৃষকদের তথ্য ও পরামর্শ দিচ্ছেন৷ আশাকরছি আগামীদিনে পেঁপে ও শীতকালিন সবজি চাষ ও উত্পাদন আরো বাড়বে৷