মঙ্গলবার ● ১৫ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » কাশিমপুর কারাগার থেকে ১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন শিপন
কাশিমপুর কারাগার থেকে ১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন শিপন
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান (আতিক), গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (১ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১০.২৫মি.) ঢাকার সূত্রাপুরে দুই মহল্লার বাসিন্দাদের মধ্যে মারামারিতে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার মামলায় ১৭ বছর হাজতবাসের পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন শিপন৷
১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে শিপন মুক্তি পান৷
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, দুপুরে তার জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছে৷ পরে তা যাচাই-বাচাই শেষে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শিপনকে মুক্তি দেয়া হয়৷ মুক্তির পর কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া কিছু টাকা নিয়ে বাসে ঢাকার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন শিপন৷
সমপ্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল শিপনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে৷ ওই প্রতিবেদন গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কুমার দেবুল দে৷ আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে ৮ নভেম্বর শিপনকে আদালতে হাজির ও তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার নথি তলব করেন৷
নির্দেশ অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ ৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির করেন৷ এ সময় আদালত শিপনকে কাঠগড়ায় ডেকে তার পরিচয় জানতে চান৷ দীর্ঘ ১৭ বছর হাজতবাস থাকার বিষয়েও খোঁজখবর নেন৷
পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শিপনকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন৷ একই সঙ্গে আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা জজকে নির্দেশ দেন৷
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে দুই মহল্লার মধ্যে মারামারিতে মাহতাব নামে এক ব্যক্তি খুন হন৷ এ খুনের ঘটনায় মোঃ জাবেদ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয় মোঃ শিপনকে৷ এজাহারে তার পিতার নাম ছিলো অজ্ঞাত৷ পরে ১৯৯৫ সালে দেয়া অভিযোগপত্রে বাবার নাম উল্লেখ করা হয় মোঃ রফিক৷ ঠিকানা উল্লেখ করা হয় ৫৯, গোয়ালঘাটা লেন, সূত্রাপুর৷
পরবর্তীতে ২০০০ সালের ৭ নভেম্বর শিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ এরপর থেকে সে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি৷ চার্জশিট দাখিলের ৫ বছর পর ২০০১ সালে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়৷ বর্তমানে ঢাকার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন৷ অভিযোগপত্র দাখিলের পর এ পর্যন্ত সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে দুজনের৷ মোট সাক্ষী রয়েছেন ১২ জন৷
গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ বন্দি ছিলেন শিপন৷ তবে এই মামলার কোনো অগ্রগতি ছিল না৷ প্রায় প্রতি মাসেই নির্ধারিত তারিখে শিপনকে আদালতে হাজির করা হলেও হাজির হতো না কোনো সাক্ষী৷ তাই শেষ হচ্ছিল না মামলার বিচারকাজও৷ উচ্চ আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার শিপন জামিনে মুক্তি পেলেন৷