বুধবার ● ২৮ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » ধর্ম » রাঙামাটিতে বুদ্ধাংকুর বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোত্সব
রাঙামাটিতে বুদ্ধাংকুর বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোত্সব
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ধর্মীয় নানা আচার অনুষ্ঠানে মধ্য দিয়ে রাঙামাটির আসামবস্তী বুদ্ধাংকুর বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম কঠিন চীবর দানোত্সব অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
বুধবার দুপুরে ২টায় বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ স্ংস্থার উদ্যোগে দু’দিনব্যাপী ১৬তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান উত্সবে আয়োজিত ধর্মসভায় সভাপতিত্ব করেন সংঘরাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ও রাঙামাটি পৌর ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের৷
দু’দিনব্যাপী ১৬তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান উত্সবের উদ্বোধন করেন রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার প্রধান উপদেষ্ঠা নীহানেন্দু তালুকদার৷ ধর্মালোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি ও সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সুপ্রিয় বড়ুয়া৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশিষ্ট ব্যববসায়ী ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী আব্দুল মতিন, অলক প্রিয় চৌধুরী, দিপক বড়ুয়া, রণজিত্ বড়ুয়া, অশোক বড়ুয়া, হারাধন বড়ুয়া,অরুন বড়ুয়া, ছোটন বড়ুয়া, রিটু বড়ুয়া৷ স্বাগত বক্তব্য ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া৷
ধর্মালোচনায় সভায় বক্তারা বলেন, ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাস করছে, ধর্মের নামে সংর্ঘষ বাড়াচ্ছে এবং সারা পৃথিবীতে মানব জাতীর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করছে তারা কোন দিন নির্বাণ লাভ করতে পারবে না৷ কারণ ক্ষমা ও মৈত্রী ভাব যার আছে সে জ্ঞানী৷ আর জ্ঞানী ব্যক্তি হিংসা ও সংর্ঘষ থেকে দূরে থাকে৷ তাই পঞ্চশীল গ্রহণ করে বুদ্ধের বাণীগুলো যথাযথ ভাবে অনুসরণ করে সংঘাত পরিহার করে মৈত্রী ভাবনা চর্চা করার আহবান জানান৷
বক্তারা আরো বলেন, আমরা যদি ঠিক না থাকি তা হলে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক থাকবে না৷ ধর্মীয় আচার, আচরণ ও রীতিনীতি যদি ঠিক রাখি তাহলে আমাদের সামাজিকতা সুদৃঢ় হবে এবং সমাজে শানত্মি ফিরে আসবে৷ সঠিকভাবে ধর্ম চর্চা আর ধর্মের প্রতি অবিচল বিশ্বাস রেখে আর্থিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে৷ গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা ও আদর্শের প্রতি সকলকে আদর্শবান হয়ে মিথ্যাকে পরিহার করে সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে৷ তা হলেই পার্বত্যাঞ্চলে উন্নয়ন ও শানত্মি ফিরে আসবে৷
অনুষ্ঠানে আগত পূর্নার্থীদের উদ্দ্যেশে প্রধান ধর্মদেশক হিসেবে দেশনা পাঠ করেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিৰু মহাসভার মহাসচিব ও চান্দগাঁও সাক্যমুনি বিহারের অধ্যক্ষ এস, লোকজিত্ থেরো৷
এর আগে কঠিন চীবর দান উপলক্ষে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে ভোর থেকে কর্মসূচির সূচনা করা হয়৷ ভোরে প্রার্থনা ও সূত্র পাঠের মাধ্যমে উত্সবের কর্মসূচি শুরম্ন হয়৷ কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভোর ৪টায় পরিত্রাণ পাঠ, সকালে পুষ্পপূজা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ, জাতীয় পতাকা ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, উপগোপ্ত বৌদ্ধের বৌদ্ধমুত্তীদান, সংঘদান ও ভিক্ষুসংঘের ধর্মদেশনা, অনুত্তর পুণ্যাক্ষেত্র ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান৷ দ্বিতীয় পর্বে ছিল দুপুর ১.৫০মি: “বুদ্ধাকুর স্বরণিকা” নামক সংকলনের মোড়ক উম্মোচন, ধর্মীয় আলোচনা ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়৷ অনুষ্ঠানে শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন৷ এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় ফানুস বাতি উড্ডয়ন, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জালন ও বৌদ্ধ কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷
আপলোড : ২৮ অক্টোবর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ৯.১৭ মিঃ