শুক্রবার ● ২ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » সাত দফা দাবিতে উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনে অচল পণ্য পরিবহন
সাত দফা দাবিতে উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে দ্বিতীয় দিনে অচল পণ্য পরিবহন
সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (১৮ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বেলা ১.৩৩মি.) ট্রাক-ট্যাকলংরী কাভার্ডভ্যান ও পিকআপের কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে পুলিশী হয়রানি বন্ধসহ সাত দফা দাবীতে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলায় পণ্য পরিবহন অচল হয়ে পড়েছে। কাঁচামালসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে পড়ে। ইট-বালু-সিমেন্ট পরিবহন করতে না পারায় নির্মাণ কাজেও স্থবিরতা নামতে শুরু করেছে। পরিবহনের সাথে যুক্ত শ্রমিকদের কাজ না থাকায় দুর্দিন শুরু হয়েছে। এদিকে, মহাসড়কে কোন পণ্যবাহী ট্রাক-ট্যাংকলরী চলাচল করতে না পারে সে জন্য শ্রমিক-মালিকদের পক্ষ থেকে পাহারা বসানো হয়েছে। কোন পণ্যবাহী পরিবহন দেখামাত্র সেগুলো আটকে রাখা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক নামদার হোসেন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, নির্বিঘ্নে পরিবহন ব্যবসা পরিচালনা এবং চালকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সরকারের কাছে সাত দফা দাবী জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। দুদিন ধরে ধর্মঘট চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান, দাবী পুরন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দাবীর মধ্যে রয়েছে কাগজপত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিংয়ের নামে সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ চালকদের হয়রানি বন্ধ। ট্রাক-ট্যাংকলরী, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপের বাম্পার সাইড এ্যাঙ্গেল এবং হুক একতরফাভাবে খোলার সরকারী আদেশ প্রত্যাহার। ট্রাক, ট্যাংকলরী, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ এর ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেন্স, রুট পারমিটের বকেয়া সুদ মওকুফ। বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ওজন স্কেলের নামে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ। সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধসহ নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হ্যাবি লাইসেন্স সহজ শর্তে প্রদান করা।
চাপাই নবাবগঞ্জের ট্রাক চালক মজনু শেখ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, মালামাল আনলোডের পর দুদিন ধরে সিরাজগঞ্জে আটকা পড়ে রয়েছি। এতে খাওয়া-দাওয়ার চরম সমস্যা হচ্ছে।
শহরের ফ্লালওয়ার মিল মালিক আসাদুজ্জামান শিবলী সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় মিলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
বালু ব্যবসায়ী সফর আলী সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, পরিবহন বন্ধ থাকায় বালু ব্যবসাতেও ধ্বস নেমেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাজ না থাকায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী আলমগীর সোহেল রানা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, শীতকালীন সবজি, ধান-চাল পরিবহন করতে না পারায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
পরিবহনের সাথে যুক্ত দিনমজুররা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, প্রতিদিন লোড-আনলোডের করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে বসে রয়েছি।
পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, বিষয়টি শুধু সিরাজগঞ্জের নয়, গোটা উত্তরবঙ্গের। তবে বিষয়টি নিরসনে বিভাগীয় পর্যায়ে বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠক হলে বিষয়টি সুরাহা হতে পারে।